বিজ্ঞাপন

মানিকগঞ্জে ধর্ষণের মামলায় ২ পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেফতার

February 12, 2019 | 11:27 am

।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক মাজহারুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাটুরিয়ায় এক তরুণীকে দুই দিন ধরে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভোররাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে, সোমবার মধ্যরাতে ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী পুলিশের এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর রাতেই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়।

এছাড়া এ ঘটনায় গঠন করা পুলিশের তদন্ত কমিটি সদস্যরা ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ডাকবাংলোতে এক তরুণীকে আটকে রেখে ধষর্ণ ও ইয়াবা সেবনের অভিযোগের সত্যতা পান।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, গত রোববার পুলিশ সুপারের কাছে ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মানিকগঞ্জ সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান ও ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হামিদুর রহমান সিদ্দীকী সোমবার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেন।

মানিকগঞ্জ সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান জানান, সাটুরিয়া থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয় নিয়ে সোমবার তদন্ত করা হয়। তদন্ত কমিটির কাছে নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী তার ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দেন। দিনভর প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে ওই তরুণীর পুলিশ সুপারের কাছে যে অভিযোগ করেছেন তার সত্যতা রয়েছে। সোমবার রাতেই ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর সে বাড়ি চলে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘অপরাধীকে পুলিশ সদস্য হিসেবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। ওই তরুণী সাটুরিয়া থানায় উপ-পুলিশ পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক মাজহারুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করেছেন। মামলার তদন্ত করবেন সাটুরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ।’

বিজ্ঞাপন

সাটুরিয়া অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুর ইসলাম জানান, ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী বাদি হয়ে সাটুরিয়া থানায় উপ-পুলিশ পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক মাজহারুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করেছেন। আসামিরা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত ছিলেন, সোমবার মধ্যরাতে তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।

মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক লুৎফর রহমান জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। এসময় গাইনি বিশেষজ্ঞ নাসিমা আক্তার, দন্ত সার্জেন্ট ডাক্তার রফিকুল ইসলাম, রেডিওলজিস্ট ডাক্তার হেলাল উদ্দিন ভূইয়া উপস্থিত ছিলেন। এই মেডিকেল বোর্ড দ্রুত সময়ের মধ্যে রিপোর্ট দেবে।

উল্লেখ্য, উপ-পুলিশ পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেন আশুলিয়া থানায় কর্মরত থাকার সময় এক নারীর কাছ থেকে ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে জমি কিনেন। কথা ছিল জমি বিক্রির লাভ তাকে দেওয়া হবে। সেই হিসাবে তিনি সেকেন্দার হোসেনের কাছে প্রায় তিন লাখ টাকা পাবেন। কিন্তু টাকা না দিয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা নানা তালবাহানা থাকেন। সাটুরিয়া থানায় বদলি হয়ে আসার পরও সেকেন্দারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। গত বুধবার বিকেলে প্রতিবেশী ভাগ্নিকে নিয়ে সাটুরিয়া থানায় যান ওই নারী। এরপর সেকেন্দার টাকা দেবে বলে তাদের সাটুরিয়া ডাকবাংলোতে নিয়ে যান। সন্ধ্যার পর সাটুরিয়া থানার এএসআই মাজহারুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ডাকবাংলোতে যান সেকেন্দার হোসেন। সেখানে ডাকবাংলোর একটি কক্ষে দুই পুলিশ কর্মকর্তা ইয়াবা সেবন করে ও তার সঙ্গে আসা ওই তরুণীকে দুই দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করে।

সারাবাংলা/এমও

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন