বিজ্ঞাপন

বিশ্ব ইজতেমা শুরু, তুরাগ তীরে মুসল্লিদের ঢল

February 14, 2019 | 6:58 pm

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ইজতেমা ময়দান থেকে: টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে (১৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হয়েছে তাবলিগ জামাতের বৃহৎ সম্মেলন ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমা। প্রথম বারের মতো এবার চারদিনের ইজতেমা তাবলিগের দুটি পক্ষ দুদিন করে পৃথকভাবে পরিচালনা করবে। এরই মধ্যে মুসল্লিরা দলে দলে ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেছেন। তাদের নিরাপত্তায় নেওয়া হয়েছে ৩ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেই সঙ্গে নিয়োজিত আছে আইশৃঙ্খলার বাহিনীর ১০ হাজারের বেশি নিরাপত্তাকর্মী।

এবার একই সঙ্গে ইজতেমার দুই পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম পর্ব এবং ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্ব। শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এক পক্ষের (মাওলানা জোবায়ের) পন্থীদের পরিচালনায় ইজতেমা। তারা ইজতেমা ময়দান বুঝিয়ে দেবেন দ্বিতীয় পক্ষের (সা’দ পন্থীদের) কাছে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুনইজতেমায় কোনো বিশৃঙ্খলা হলে বরদাস্ত করা হবে না: র‌্যাব ডিজি

এর আগে দুই পর্ব তিনদিন করে ৩২ জেলা বিভক্ত হয়ে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হলেও এবার একই সঙ্গে চারদিন হবে বিশ্ব ইজতেমা। আর এতে এবার ৩২ জেলার মুসল্লিরা বিভক্ত না হয়ে অংশ নেবেন সব জেলার মাওলানা যোবায়ের অনুসারী ও মাওলানা ওয়াসিফুলের (সা’দ আহমাদ) অনুসারীরা।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে দেখা গেছে, এরইমধ্যে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে এক বর্গকিলোমিটার এলাকার ১৬৫ একর জমির ওপর বাঁশের খুঁটি দিয়ে চটের ছাউনির মাধ্যমে বিশাল প্যান্ডেল নির্মাণের কাজ শেষ। সেই সঙ্গে মুসল্লিদের জন্য গোসল ও অযুখানাসহ পাকা ও কাঁচা টয়লেটও স্থাপনের কাজ শেষ। এছাড়া, মুসল্লিরা যাতে ইজতেমায় স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারে সেজন্য মোবাইল চার্জের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ইজতেমার প্রতি ইঞ্চি জায়গা সিসিটিভির আওতায় থাকবে: আইজিপি

মাওলানা জোবায়ে‘র অনুসারীর ইজতেমা পরিচালনা কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজ আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে ইজতেমা। আর এজন্য এরইমধ্যে মুসল্লিদের জন্য ৮ হাজার পাকা টয়লেট এবং ১ হাজার কাঁচা টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে। রাখা হয়েছে সুপেয় পানি ও গোসল এবং অযুখানার সুব্যবস্থা। প্রতিদিন প্রায় ৪৫ লাখ গ্যালন পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। থাকার জন্য প্যান্ডেল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেছে বলে জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

ইজতেমা উপলক্ষে প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, ইজতেমায় অপ্রীতির যেকোনো ঘটনা এড়াতে নেওয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সার্বিক নিরাপত্তা মনিটরিংয়ে র‌্যাবের হেলিকপ্টার টহল থাকবে এবং প্রায় ১৭টি ওয়াচ টাওয়ার থেকে পুরো ইজতেমা ময়দান নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সেই সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ইজতেমা মাঠের ভেতরে খিত্তায় খিত্তায় অবস্থান করবেন। কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তা সঙ্গে সঙ্গে প্রতিরোধ করতে বসানো হয়েছে প্রায় ৫০০টির মত সিসি ক্যামেরা। ডিএমপি থেকে ডগ স্কোয়াড, বোম ডিসপোজাল টিম এবং ফায়ার সার্ভিসের একাধিক টিম থাকবে ইজতেমায়। সেই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিদের সেবায় ১৩৮টি বিশেষ ট্রেন ও বিআরটিসির ৩০০টি বিশেষ বাস সার্ভিস দেবে।

আরও পড়ুন: ইজতেমার কারণে ১৬, ১৭ ও ১৮ তারিখের পরীক্ষা পেছাল

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর সারাবাংলাকে বলেন, এবার সার্বিক দিক বিবেচনা করে নিরাপত্তায় নেওয়া হয়েছে আগের চেয়ে কয়েকগুন বেশি। সেই সঙ্গে বোম ডিসপোজাল টিম ও সোয়াত টিমও থাকবে বিশেষ নজরদারিতে। আর মুসল্লিদের সুবিধার্থে বিআরটিসি বাস ও ট্রেনে যোগ করা হয়েছে বিশেষ সার্ভিস।

উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সাল থেকে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মাঠে মুসল্লিদের স্থান সংঙ্কুলান না হওয়ায় ২০১১সাল থেকে টঙ্গীতে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম বছর যারা (যে ৩২ জেলার মুসল্লি) টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতেন তারা পরবর্তী বছর সেখানে যেতেন না। ২০১৫ সাল থেকে প্রতিবছর টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার পাশাপাশি জেলায় জেলায় আঞ্চলিক ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সারাবাংলা/এসএইচ/এমএইচ

আরও পড়ুন

বিশ্ব ইজতেমায় গাড়ি পার্কিং ও যানবাহন চলাচলে ডিএমপি’র নির্দেশনা

 

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন