বিজ্ঞাপন

ঢাকা মেডিকেলে স্বজনদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ চলছে

February 22, 2019 | 1:15 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুনের ঘটনায় যে ৬৭টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তার মধ্যে ২১টির পরিচয় এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এসব মরদেহ শনাক্ত করার জন্য স্বজনদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

শুক্রবার (২২ ফেব্রুযারি) সকাল ১১টায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার রুমানা আখতারের নেতৃত্বে এসব নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ফরেনসিক বিভাগের মর্গে চলছে স্বজনদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের এই কার্যক্রম।

আরও পড়ুন- ৪৬ মরদেহ শনাক্ত, ৪৫টি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর

বিজ্ঞাপন

নমুনা সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা রুমানা আখতার সারাবাংলাকে বলেন, ৪৬টি লাশ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। বাকি ২১টি লাশ শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, যদি সব স্যাম্পল ঠিক থাকে, তাহলে সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে ডিএনএ পরীক্ষার ফল পাওয়া সম্ভব। সব স্বজন উপস্থিত হলে আজকের মধ্যেই ডিএনএ পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় শুরুতে নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের নামের তালিকা তৈরি করা হয়। এ পর্যন্ত ২১ জন দাবিদারের নামের তালিকা হয়েছে। দুপুর দেড়টা নাগাদ ১৩ জন স্বজন উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ছয় জনের ডিএনএ নমুনা হিসেবে রক্ত সংগ্রহ করা হয়।

সেখানে উপস্থিত ছিলেন নিখোঁজ নুরুল হকের (৩০) ভাই আইনুল হক। কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম থেকে তিনি ঢাকায় এসেছেন ভাইয়ের সন্ধানে। হাসপাতালের মর্গে খুঁজে না পেয়ে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য রক্ত দেন তিনি। আইনুল জানান, তার ভাই নুরুল চুড়িহাট্টায় কাঁচা তরকারি বিক্রি করতেন। থাকতেন চকবাজার ইসলামবাগে।

আরও পড়ুন- ওয়াহেদ ম্যানশনে কেমিক্যাল ব্যবসার অনুমতি ছিলো না

১৯ ও ১৭ বছর বয়সী দুই ভাই রাজু ও সাকিব। তাদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সোনামুড়ী উপজেলার মির্জানগরে। চকবাজারের সাতরওজা এলাকায় থাকেন তারা। চুড়িহাট্টায় বাবা আবু জাফরের ব্যাগের কারখানা ছিল। ওই দুর্ঘটনার পর তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। যে ৪৬টি লাশ শনাক্ত করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যেও পাওয়া যায়নি তাকে। তাই দুই ভাই এসেছেন ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে।

বিজ্ঞাপন

পরে সিআইডি’র ফরেনসিক বিভাগের পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, আজকে ৯টি মরদেহের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ১৫টি পরিবার যোগাযোগ করেছে। সবগুলো পরিবার এলে আজকের (শুক্রবার) মধ্যেই নমুনা সংগ্রহের কাজ শেষ করা হবে।

এদিকে, ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ জানিয়েছেন, ঢামেক হাসপাতালের মর্গের ফ্রিজে জায়গা না থাকায় পাঁচটি মরদেহ রেখে বাকিগুলো চারটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঁচটি, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে পাঁচটি, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চারটি এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে তিনটি মরদেহ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব হাসপাতালে গিয়ে স্বজনরা মৃতদেহ শনাক্ত করতে পারবেন।

আরও পড়ুন- ‘কেমিক্যাল অবশ্যই ছিল, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না’

তবে স্বজনদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা ডিএনএ নমুনার সঙ্গে মেলানোর জন্য এসব মরদেহ থেকে এরই মধ্যে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এক ব্রিফিংয়ে ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, যেসব মরদেহ শনাক্ত হয়নি, সেগুলোর ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মাংসপেশী, দাঁত ও হাড় থেকে এই নমুনাগুলো নেওয়া হয়েছে। সেটা মালিবাগে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের ডিএনএ ল্যাবরেটরি ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।

এবার স্বজনদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের পর সেগুলোও নিয়ে যাওয়া হবে মালিবাগে সিআইডি’র ল্যাবে। সেখানে ডিএনএ মিলিয়ে শনাক্ত করা হবে বাকি মরদেহগুলো।

এদিকে, হাজী ওয়াহেদ ম্যানসনে আগুনের ঘটনায় উদ্ধার করা ৬৭টি মরদেহের মধ্যে ৪৬টি শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢামেক কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ৪৫টি মরদেহ এরই মধ্যে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সারাবাংলা/জেএ/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন