বিজ্ঞাপন

‘একতরফা নির্বাচনের কারণে ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ নেই’

March 18, 2019 | 5:31 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: একতরফাভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় উপজেলা নির্বাচনে ভোটারদের মধ্যে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ নেই বলে মনে করছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদার।

তিনি বলেন, এই নির্বাচনে বিরোধী রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি। এজন্য উপজেলা নির্বাচনের জৌলুস নেই। একতরফা হওয়ায় ভোটাররাও ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহী নয়। এমন নির্বাচন বিমুখতা গণতন্ত্রবিমুখতায় পর্যবসিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই অবস্থা গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত।

সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেলে মাহবুব তালুকদার তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমার নতুন করে বলার কিছু নেই। একাদশ জাতীয় নির্বাচন কেমন হয়েছে, প্রতিটি বিবেকবান মানুষের কাছে এ প্রশ্নের উত্তর আছে। জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে যাদের স্বার্থ জড়িত, তারা কখনও এর সঠিক উত্তর দিতে পারবেন না বা দেবেন না। জাতীয় নির্বাচন কেবল রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতার বদল নয়, এতে গণতন্ত্র কতটা সমুন্নত হলো— তাও বিবেচনাযোগ্য।

মাহবুব তালুকদকর বলেন, আজকাল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত কথাটা বেশ চালু হয়েছে। আমি এর অর্থ বুঝি না। আমার মতে নির্বাচন মানেই হচ্ছে একাধিকের মধ্য থেকে বাছাই। তাই যা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, তা নির্বাচন হয় কী করে? ইংরেজিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনদের ‘ইলেকটেড’ না বলে ‘সিলেক্টেড’ বলা যেতে পারে কি— প্রশ্ন রাখেন এই নির্বাচন কমিশনার।

উপজেলা নির্বাচনকে ব্যতিক্রমী আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, এবারের উপজেলা নির্বাচনকে আমি অপরূপ নির্বাচন বলতে চাই। এর মাথাটা নির্বাচিত হচ্ছে দলীয় প্রতীকে এবং দেহটুকু নির্দলীয়ভাবে। এই নির্বাচনের রূপটি তাহলে কেমন দাঁড়ায়? এবারের উপজেলা নির্বাচনে চার ধাপে শতাধিক ব্যক্তি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই চেয়ারম্যান পদে আসীন হয়েছেন। আরও ৫০ জন সম্ভবত একইভাবে চেয়ারম্যান হবেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনভাবে জনপ্রতিনিধিদের পদে আসীন হওয়ার রেওয়াজ গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ নয়।

বিজ্ঞাপন

মাহবুব তালুকদার আরও বলেন, কিছুদিন আগে এক সংসদ সদস্য, যিনি সদ্য সাবেক মন্ত্রীও, তিনি সংসদে বলেছেন, নির্বাচনকে যথাযথ মর্যাদায় ফিরিয়ে আনতে হবে। তার কাছে প্রশ্ন থেকে যায়, এই নির্বাচন মর্যাদা হারালো কবে? জাতীয় নির্বাচনের সময়? না উপজেলা নির্বাচনের সময়? এ জন্য কে বা কারা দায়ী, তা তিনি সুনির্দিষ্টভাবে বলেননি। তবে তার এই বোধদয় নিশ্চয়ই নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুপ্রাণিত করবে। মর্যাদাহীন নির্বাচন করে কেউ খুশি হতে পারে না।

ইসি কমিশনার বলেন, নির্বাচনকে অর্থবহ করার জন্য ও গণতন্ত্রকে অবারিত করার স্বার্থে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার প্রয়োজন। তবে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার নির্বাচন কমিশনের কাজ নয়, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। স্থানীয় নির্বাচন কী পদ্ধতিতে কতখানি উন্মুক্ত হবে, সেটা বর্তমান সরকার ঠিক করে দেয়।

তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, বিশ্বাসযোগ্য, আইনানুগ ও উন্মুক্ত নির্বাচন হলে এবং সব প্রার্থীর সমান অধিকার নিশ্চিত হলে জনগণ তাতে অংশ নেবে বলে আশা করা যায়। নির্বাচন ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি পরিবর্তন করে নির্বাচন কখন হবে কিভাবে হবে- এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের কাছে ন্যাস্ত হলে ভোটারদের উপস্থিতির জন্য আর হা-হুতাশ করতে হবে না। বিষয়টি ভেবে দেখা প্রয়োজন।

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

বিজ্ঞাপন

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন