বিজ্ঞাপন

আলোচনায় খালেদার প্যারোল, জানে না বিএনপি

April 6, 2019 | 8:12 pm

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: “খালেদা জিয়ার প্যারোল নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে, তার কিছুই আমরা জানি না। এ ব্যাপারে দলীয় ফোরামের কোনো আলোচনাও হয়নি। যেটুকু শোনার, মিডিয়ার মাধ্যমেই শুনছি”— সারাবাংলাকে এভাবেই বলছিলেন, বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে গুঞ্জন ওঠে, প্যারোলে মুক্তি পাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়া। চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন সৌদি আরব। ঈদের আগেই শেষ হবে সব প্রক্রিয়া। এরই অংশ হিসেবে কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে তাকে স্থানান্তর করা হয়েছে।

তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, খালেদা জিয়ার প্যারোলের ব্যাপারে বিএনপিতে কোনো আলোচনা হয়নি। দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি অথবা দলীয় ফোরামে চেয়ারপারসনের প্যারোল চাওয়ার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বিএনপির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলধারার গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি থেকে তারা বিষয়টি জানতে পেরেছেন। এ ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে তারা কোনো কথা বলেননি। সরকারের পক্ষ থেকেও তাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শনিবার (৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘চেয়ারপারসনের প্যারোল নিয়ে দলীয় ফোরামে কোনো আলোচনা হয়নি। আপনাদের (মিডিয়া) মাধ্যমেই বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি।’

এদিকে খালেদা জিয়ার প্যারোল নিয়ে চলমান গুঞ্জনের মধ্যেই শনিবার (৬ এপ্রিল) জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে একটি নৌ-থানা উদ্বোধনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট কারণ দেখিয়ে আবেদন করলে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্যারোলের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করবে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গত দুই সপ্তাহ ধরে চলে আসা খালেদা জিয়ার ‘প্যারোল’ আলোচনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য ‘একসূত্রে গাঁথা’ বলে মনে করছেন, বিএনপির শীষ নেতারা। তারা বলতে চাচ্ছেন, প্যারোলে মুক্তি দিয়ে খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে পাঠানোর যে আলোচনা, সেটা সরকারের একটা কৌশল। রাজনীতি থেকে জিয়া পরিবারকে দূরে রাখার জন্য এই কৌশল নিচ্ছে সরকার।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম সারাবাংলাকে বলেন, “খালেদা জিয়ার প্যারোলের কথা আমরা বলিনি। এ ব্যাপারে দলের কোনো পর্যায়ের নেতার মুখ থেকে কোনো বক্তব্য আসেনি। আমরা খালেদা জিয়ার জামিন চেয়েছি, প্যারোল নয়। এখন সরকার কেন খালেদা জিয়ার প্যারোলের কথা বলছে, সেটা তারাই ভালো জানে।”

তবে খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষায় বিএনপির শীর্ষ নেতারা এখন প্যারোলের বিষয়টিও আলোচনার টেবিলে নিতে চাচ্ছেন বলে জানা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মূলধারার গণমাধ্যমে যে বিষয়টি এতো দিন আলোচনা হয়েছে, সেটা এখন মন্ত্রীর মুখে। সুতরাং বিষয়টির ভালো দিক, মন্দ দিক যাচাই করার জন্য জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তুলতে চান তারা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, “হঠাৎ খালেদা জিয়ার প্যারোল নিয়ে এতো কথা কেন হচ্ছে? আমরা তো প্যারোলের ব্যাপারে সরকারকে কিছু বলিনি। জামিনযোগ্য মামলায় তাকে আটক রাখা হয়েছে। জামিন দিয়ে দিলেই তো হয়! তিনি তার পছন্দের জায়গায় চিকিৎসা নিতে পারেন। তারপরও বিষয়টি যখন আলোচনায় আসছে, আমরা এটি নিয়ে সর্বোচ্চ ফোরামে আলোচনা করব।”

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সারাবাংলাকে বলেন, “হার (খালেদা জিয়া) লাইফ ইজ ইমপরট্যান্ট ফর আস। সুতরাং তার প্যারোলের প্রসঙ্গ যেহেতু সামনে আনা হয়েছে, সেহেতু আইনজীবীদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করব। স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। তারপর দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় ১০ বছর এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ৭ বছরের দণ্ড নিয়ে গত ১৩ মাস ধরে কারাবন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া।

সারাবাংলা/এজেড/এটি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন