বিজ্ঞাপন

দুর্নীতি নেই, ঢাকা ওয়াসায় এমন জায়গা খুঁজে পায়নি টিআইবি!

April 17, 2019 | 6:34 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীতে পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ওয়াসার প্রতিটি সেবার পদে পদে দুর্নীতি রয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন পদে নিয়োগে রয়েছে অনিয়ম ও দুর্নীতি, অনিয়ম রয়েছে পদায়ন ও বদলিতে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণে। প্রকল্প বাস্তবায়ন ও মিটার রিডিং ছাড়াও একই রকম অনিয়ম ও দুর্নীতি রয়েছে গ্রাহক সেবাতেও। সব মিলিয়ে দুর্নীতি নেই, ঢাকা ওয়াসায় এমন কোনো জায়গা সরকারি এই সংস্থাটিতে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবি’র প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা ওয়াসার অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে একটি গবেষণাপত্রের মাধ্যমে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল ও নির্বাহী পরিচালক ইফতেখার উদ্দিন।

আরও পড়ুন- ওয়াসার পানি ফুটিয়ে পানযোগ্য করতে বছরে খরচ ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাস!

টিআইবির গবেষণা পত্রে বলা হয়, ঢাকা ওয়াসার হিসাবে রাজধানীতে আবাসিক ব্যবহারে প্রতিদিন ন্যূনতম পানির চাহিদা ২৫৮ কোটি লিটার। তার বিপরীতে ওয়াসার পানি উৎপাদন ক্ষমতা ২৪০ কোটি লিটার। কিন্তু টিআইবি’র জরিপ বলছে, ৪৪ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ চাহিদা অনুযায়ী পানি পান না। এর মধ্যে ৭১ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ বস্তিতে, ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ আবাসিক এলাকায়, ৩৪ দশমিক ৯ শতাংশ বাণিজ্যিক এলাকায় এবং ১৯ শতাংশ মানুষ শিল্প কারখানায় থাকেন।

বিজ্ঞাপন

গবেষণাপত্রে বলা হয়, ঢাকা ওয়াসার সেবা নিতে গিয়ে সেবাগ্রহীতাদের ৮৬ ভাগকে ওয়াসার কর্মচারী এবং ১৫ ভাগকে দালালের কাছে ঘুষ বা নিয়ম বহির্ভূত অর্থ দিতে হয়েছে। এর মধ্যে পানির সংযোগ নিতে ২০০ টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা, পয়ঃলাইনের প্রতিবন্ধকতা অপসারণে ৩০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা, গাড়িতে করে জরুরি পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে ২০০ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা, নতুন মিটারের সংযোগ বা মিটার পরিবর্তনে ১ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা, মিটার রিডিং ও বিল সংক্রান্ত কারণে ৫০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা এবং গভীর নলকূপ স্থাপনের জন্য এক লাখ থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়েছে।

গবেষণাপত্র প্রকাশ উপলক্ষে টিআইবি’র সংবাদ সম্মেলন

এক প্রশ্নের মাধ্যমে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখার উদ্দিন বলেন, নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতেই আমরা প্রতিবেদন তৈরি করেছি। যেহেতু আমরা তদন্তকারী প্রতিষ্ঠান না, সেহেতু আমরা অভিযোগ আকারেই সব তথ্য উপস্থাপন করে থাকি। ঢাকা ওয়াসায় দুর্নীতি নেই— এমন কোনো জায়গা পাওয়া যায়নি। যে বোর্ড রয়েছে, সেটিও অকার্যকর। এর মূলে সরকারি প্রভাব খাটানোর একটি চিত্র পাওয়া গেছে। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, সেই দলের মুষ্টিমেয় কিছু লোক ক্ষমতা প্রয়োগ করে থাকে। আমরা বিশ্বাস করি, টিআইবি যে সুপারিশ দিয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়িত হলে ওয়াসার সার্বিক উন্নতি হবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতিতে জড়িতরা কম চিহ্নিত হন। কারণ যোগসাজশের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক আকারে দুর্নীতি হয়ে থাকে। তবে কর্তৃপক্ষ চাইলে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে পারে।

বিজ্ঞাপন

টিআইবির গবেষণাপত্রে মোট ১৩টি সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্য এবং ১০টি সরাসরি ঢাকা ওয়াসার জন্য। তাতে নিয়োগ, পদায়ন, বদলি প্রভৃতি ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিয়ে আসার পাশাপাশি মানসম্মত সেবা দিতে কর্মীদের মধ্যে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন