বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নিতে ফের তাগাদা দেবে ঢাকা, বৈঠক আগামী মাসে

April 19, 2019 | 11:20 am

এমএকে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে নতুন করে তাগাদা দেবে ঢাকা। এ জন্য মে মাসের প্রথম সপ্তাহে নেপিডোতে দুই দেশের কূটনৈতিক পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

বিজ্ঞাপন

যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের এ বৈঠকে ঢাকার পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক। অন্যদিকে, নেপিডোর পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা রয়েছে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে’র।

প্রত্যাবাসনের জন্য এর আগে রোহিঙ্গাদের একাধিক তালিকা ঢাকার পক্ষ থেকে নেপিডো’কে দিয়েও কোনো ফল মেলেনি। তবু আগামী বৈঠকে রোহিঙ্গাদের আরও একটি তালিকা নেপিডোকে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে কূটনৈতিক সূত্রে। পাশাপাশি দুই দেশের শূন্যরেখায় অবস্থানকারী প্রায় সাত হাজার রোহিঙ্গাকে যেন মিয়ানমার সরাসরি ফিরিয়ে নিয়ে যায়, সে বিষয়ে বৈঠকে আবারও গুরুত্ব দেবে ঢাকা।

আরও পড়ুন- চুক্তির ৬ মাস পরও চূড়ান্ত হয়নি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে প্রত্যাবাসনের জন্য ৮ হাজার ৩২ জন রোহিঙ্গার তালিকা দেওয়া হয়। এই তালিকা পাওয়ার পরও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে মিয়ানমার কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়। চুক্তিতে উল্লেখ ছিল, ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর ও ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, তাদের ফেরত নেবে মিয়ানমার। চুক্তি সইয়ের দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে।

ওই চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের মধ্যে ২০১৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে হটলাইন চালু করবে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার

পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ওই চুক্তির পর প্রায় দেড় বছর পার হলেও প্রত্যাবাসন বিষয়ে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। উল্টো একাধিক অজুহাতে প্রত্যাবাসনের বিষয়টি এড়িয়ে গেছে দেশটি।

জাতিসংঘসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা এরই মধ্যে জানিয়েছে, প্রত্যাবাসনের জন্য কোনো অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেনি মিয়ানমার। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমার সরকার আদতে আন্তরিকই নয়।

পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘যেকোনো প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াই জটিল ও ঝামেলাপূর্ণ। এই কাজটিকে আমরা সহজ ও সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি, যেন নির্যাতিত ও নিপীড়িত রোহিঙ্গা সম্প্রদায় তাদের বসত-ভিটায় ফেরার সুযোগ পায়।’

বিজ্ঞাপন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’

আরও পড়ুন- চুক্তির পরও পালিয়ে এসেছে ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট মিয়নমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাত লাখেরও বেশি মানুষ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের একাধিক শিবিরে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ বলে আখ্যা দিয়েছে। রাখাইন সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়ে তুমুল সমালোচনা করছে যুক্তরাজ্য, কানাডা, কুয়েত, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা।

সারাবাংলা/জেআইএল/একে

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন