বিজ্ঞাপন

নুসরাত হত্যা: দুজনের জবানবন্দিতে নতুন তথ্য পেয়েছে পিবিআই

April 21, 2019 | 2:49 am

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

ফেনী: ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যায় নিজেদের সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে তার সহপাঠী কামরুন্নাহার মনি ও জাবেদ।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফউদ্দিন আহমদের আদালতে তাদের উপস্থাপন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ছয় ঘণ্টার জবানবন্দি রেকর্ডের পর রাত ১০টার দিকে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন (পিবিআই) এর চট্টগ্রাম বিভাগের স্পেশাল পুলিশ সুপার মো: ইকবাল।

তিনি বলেন, ‘আদালতে এ দুজন স্বীকারোক্তি দিয়েছে যে, তারা তাদের সহপাঠী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার কিলিং মিশিনে সরাসরি জড়িত ছিলো। আসামি জাবেদ হোসেন, পলিথিন থেকে নুসরাতের সারা শরীরে কেরোসিন ঢেলে দেয়। এর আগে ২৮ ও ৩০ মার্চ দুই দফা কারাগারে থাকা সিরাজউদদৌলার সঙ্গে দেখা করে তারা। ৪ এপ্রিল সকালে ‘অধ্যক্ষ সাহেব মুক্তি পরিষদের’ সভা করা হয়। রাতে ১২ জনের এক সভায় হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত ও দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। জাবেদ কেরোসিন ঢালার পর কামরুন নাহার মনি নুসরাতের শরীর চেপে ধরে। উম্মে সুলতানা নামের একজন চলে যাওয়ার সময় নুসরাতের পায়ে ধাক্কা লাগলে মনি তাকে শম্পা বলে ডাকে। এই শম্পা নামটি পপি ও মনির দেয়া নাম। এই কিলিং মিশনে আর কোনো ছদ্ম নাম ব্যবহার করা হয়নি। মনি আরও জানিয়েছে বর্তমানে সে ৫ মাসের অন্ত:সত্ত্বা।’

তিনি আরো বলেন, কয়েক ঘন্টার এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ দু’জন হত‌্যাকাণ্ডের ব‌্যাপারে চাঞ্চল‌্যকর অনেক তথ‌্য দিয়েছে। তার এ জবানবন্দিতে নতুন কিছু নামও উঠে এসেছে। তবে, তদন্তের স্বার্থে তা উল্লেখ করা যাবে না।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গত ১৫ এপ্রিল সোনাগাজী থেকে গ্রেফতার করা হয় নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার আসামী কামরুন নাহার মনিকে । ১৭ এপ্রিল একই আদালতে তাকে ৭ দিনের রিমান্ড দেয়। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) মনিকে নিয়ে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যায় পিবিআই। সে সময় মনি কিভাবে নুসরাতকে হত্যা করা হয়েছে তার বর্ণনা দেয়।

অপরদিকে, আরেক আসামি জাবেদকে ১৩ এপিল চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিন থেকে তাকে ৭ দিনের রিমান্ড দেয়া হয়। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম‌্যাজিস্ট্রেট সরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালত আবার তাকে তিন দিনের রিমান্ড দেয়।

উল্লেখ্য, ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। মাদরাসার এক ছাত্রী সহপাঠী নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করেছে, এমন সংবাদ দিলে সে (নুসরাত) ওই ভবনের তৃতীয় তলায় যায়। সেখানে বোরকা পরা ৪/৫ জন ছাত্রী নুসরাতকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়।

বিজ্ঞাপন

অস্বীকৃতি জানালে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল (সোমবার) রাতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।

ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত এজাহারের ৮ জনসহ মোট ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ৭ জন। ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদরাসা কমিটির সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকেও আটক করেছে পিবিআই। রুহুল আমিন নুসরাতের প্রতিষ্ঠান সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি। এই কমিটি অবশ্য শুক্রবারই বাতিল হয়ে গেছে।

সারাবাংলা/জেএএম

বিজ্ঞাপন

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন