বিজ্ঞাপন

প্রবৃদ্ধি বাড়লেও অর্থনীতিতে কোনো প্রতিফলন নেই: সিপিডি

April 23, 2019 | 4:38 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: প্রবৃদ্ধি বাড়লেও অর্থনীতির অন্য সূচকে কোনো পরিবর্তন নেই বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

বিজ্ঞাপন

দেবপ্রিয় বলেন, ‘প্রবৃদ্ধির হার বাড়ার প্রবণতা নি:সন্দেহ অত্যন্ত উচ্চ, প্রসংশনীয় এবং অনেকের কাছে ঈর্ষনীয়। কিন্তু প্রবৃদ্ধি বাড়ার কারণে যে চলকগুলোর পরিবর্তন হওয়ার কথা সেগুলোর সঙ্গতিপূর্ণ পরিবর্তন দেখছি না। আবার প্রবৃদ্ধি অনুযায়ী যে কর্মসংস্থান ও আয় হওয়ার কথা তাও হচ্ছে না।পরিবর্তন নেই কর, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ব্যাংক, বীমা এবং পুঁজিবাজারে।’

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বর্তমান সরকারের প্রথম ১০০ দিন পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ড. দেবপ্রিয় ভট্রাচার্য। এ সময় সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রজমান, নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

দেবপ্রিয় বলেন, প্রবৃদ্ধি বাড়লেও ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগের বাড়তি কোনো ভূমিকা দেখছি না। উন্নয়নে যে ধরনের কর আরোহণ করা হয় সেই ধরনের কর আরোহণও দেখলাম না। ব্যক্তিখাতে যে ধরনের ঋণ প্রবাহ বাড়ার কথা সেটাও দেখলাম না। ব্যাংকিং খাতে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে যে ধরনের চাঞ্চল্য থাকে সেখানেও কোনো প্রতিফলন নেই। ফলে প্রবৃদ্ধি বাড়লে যে ধরনের চলক থাকে তারও কোন প্রতিফলন নেই।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: সরকারের প্রথম ১০০ দিন উদ্যোগহীন, উচ্ছ্বাসহীন: সিপিডি

দেবপ্রিয় প্রশ্ন তুলে বলেন, প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি কি উপকারে আসছে? প্রবৃদ্ধির তথ্য যদি সঠিকভাবে পরিমতি হয়েও থাকে তাহলে এর যে ফলাফল আমাদের উদ্বিগ্ন করে এবং উন্নয়নের যে পরিপূর্ণ ধারণা তার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন খানা জরিপে দেখা গেছি শ্রমিকের আয় বাড়েনি বরং বৈষম্য বাড়ছে। মানে হলো যারা কাজে আছে তাদের উৎপাদনশীলতা বাড়ছে, আয় বাড়ছে। কিন্তু যাদের কাজ নেই এদের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে এবং আয়ও হচ্ছে না। সমাজের ভেতর বৈষম্য বাড়ছে। সমাজের উৎপাদনশীলতা কিছু বাড়লেও ব্যাপক অর্থে জনমানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়ে এবং শিক্ষিত মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, জিডিপির গ্রোথ রেটে যে মূল্যসমন্বয়ক ব্যবহার করা হয়েছে সেখানে মূল্যস্ফীতি ৪ শতাংশের কিছু বেশি ব্যবহার করা হয়েছে। অথচ আমরা জানি মূল্যস্ফীতি ৫/৬ শতাংশ। ফলে ৫ শতাংশ রেখে কেন ৪ শতাংশ ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে মূল্যস্ফীতি হারের সাথে সমন্বয় কোথায় সমস্য সেটা জানার রয়েছে। এখানেও প্রবৃদ্ধির হার এক শতাংশ কমে যাওয়ার কথা। ফলে যেসব তথ্য উপাত্ত ,দিয়ে প্রবৃদ্ধি অনুমিত হয়েছে তা সম্পন্নভাবে প্রকাশ করা হোক।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যে সব দেশে বৈষম্য কম সেসব দেশে প্রবৃদ্ধি হার বাড়ার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু বাংলাদেশে বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির হার কমে যেতে পারে।

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, বাংলাদেশে ঋণ খেলাপি একটি বড় সমস্যা, এই সমস্যার কথা সবাই স্বীকার করছেন, সরকারও স্বীকার করছেন। এটা কমিয়ে আনার জন্য নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। কিন্তু দু:খজনক হলো এটা কমাতে গিয়ে নতুন নতুন সার্কুলার জারি করে ঋণ খেলাপিদের সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এতে করে আমরা পিছনের দিকে চলে যাচ্ছি।

সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, পুঁজিবাজারে দৃশ্যমান কোনো সংস্কার ও উন্নতি নেই। নির্বাচনের আগে মুল্যসূচক কিছুটা বাড়লেও পরে ধীরে ধীরে তা আগের অবস্থানে চলে আসে। তিনি বলেন, বাজারে সূচকের যদি ওঠানামা দেখি তাহলে দেখা যায় প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ পয়েন্টের ভিতরে এক ধরনের নিয়ন্ত্রিত ওঠানামা হয়। পুঁজিবাজারে এভাবে ওঠানামা হওয়ার কথা নয়।

বিজ্ঞাপন

তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকিং খাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ঋণ খেলাপি। এটা কমছে না। বরং দিনদিন বাড়ছে। খেলাপি ঋণ উদ্ধারে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। বরং তাদের আরো সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে।

সারাবাংলা/জিএস/জেএএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন