April 26, 2019 | 12:58 pm
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
শ্রীলংকায় ইস্টার সানডেতে সাংগ্রিলা হোটেলে আত্মঘাতী হামলায় নিহত হন স্থানীয় চরমপন্থি দল ন্যাশনাল তৌহিদ জামাতের (এনটিজে) নেতা জাহরান হাশিম।
রোববার (২৬ এপ্রিল) শ্রীলংকার আটটি স্থানে চালানো সিরিজ বোমা হামলার তিনিই মূল হোতা বলে এখন পর্যন্ত ধারণা করা হচ্ছে। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। খবর বার্তা সংস্থা এএফপির।
এক সংবাদ সম্মেলনে সিরিসেনা বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আমায় জানিয়েছে যে, জাহরান সাংগ্রিলা হোটেলে হামলার সময় নিহত হয়েছেন।’
তবে এসব হামলায় জাহরানের ভূমিকা কী ছিল সে বিষয়ে কিছু জানাননি প্রেসিডেন্ট। অবশ্য দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিভিন্ন সময়ে জানিয়েছে, এই পুরো ঘটনার মাস্টার মাইন্ড ছিলেন তিনি।
সিরিসেনা জানান, ইস্টার সানডেতে শ্রীলংকার চারটি গির্জা, তিনটি হোটেল ও একটি বাড়িতে বোমা হামলার ঘটনায় আইএস সংশ্লিষ্ট ১৪০ ব্যক্তিকে খুঁজছে পুলিশ। তিনি বলেন, ‘শ্রীলংকার অনেক তরুণ ২০১৩ সাল থেকেই এই জঙ্গি গোষ্ঠীটির সঙ্গে জড়িত। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে, আমাদের প্রতিরক্ষা ও পুলিশ প্রধানরা রোববারের আগে আসন্ন হামলা সম্পর্কে আমাকে কোনো তথ্য জানায়নি।’
এছাড়া, দেশের গোয়েন্দা ব্যবস্থার দুর্বল অবস্থার জন্য প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহকে দোষ দেন শ্রীলংকান প্রেসিডেন্ট। তার মতে, তামিল বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে এক দশক মেয়াদী গৃহযুদ্ধে সেনা সদস্যদেন যুদ্ধাপরাধের দিকে মনোযোগ দেওয়ার কারণেই এমনটা হয়েছে।
জাহরান হাশিম চরমপন্থি দল এনটিজে’র তরুণ নেতা। সম্প্রতি আইএস’র প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায় যে, তিনি ও তার নেতৃত্বাধীন আরও সাতজন ব্যক্তি আইএস প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদির প্রতি আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি করছেন।
শ্রীলংকা পুলিশ হামলার পর থেকেই তাকে খুঁজছিল। অবশেষে, শুক্রবার তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়।
এএফপি জানিয়েছে, হামলার আগে তেমন পরিচিত ছিলেন না জাহরান। তবে স্থানীয় মুসলিম নেতারা জানিয়েছেন, আগে থেকেই চরমপন্থি দৃষ্টিভঙ্গি কারণে একাধিকবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, রোববারের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৫৩ জন মানুষ। আহত হয়েছেন পাঁচ শতাধিক। প্রাথমিকভাবে, অবশ্য মৃতের সংখ্যা ৩৫৯ জন বলা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তা কমিয়ে আনা হয়। হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫৮ জনকে গ্রেফতার করেছে শ্রীলংকা পুলিশ।
হামলার দু’দিন পর মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) নিজস্ব বার্তা সংস্থা আমাক’এ প্রকাশিত এক বিবৃতিতে দায় স্বীকার করে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস। তবে তাদের দাবির পক্ষে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি তারা।
এদিকে, হামলার পরপরই এনটিজে’কে দুষেছে কর্তৃপক্ষ। তবে এটাও বলা হচ্ছে যে, বাইরের সাহায্য ছাড়া তাদের পক্ষে এই হামলা চালানো সম্ভব ছিল না।
সারাবাংলা/আরএ/এসএমএন