বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা চাইলেন শেখ হাসিনা

April 27, 2019 | 1:52 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী ও সুবিধাবাদীদের তালিকা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি এখনও দলে সুবিধাবাদী, অনুপ্রবেশকারী নেই বলে জানান।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২৬এপ্রিল) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে তিন দিনের ব্রুনেই সরকারি সফর নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দলের কোন কোন নেতারা কারা অনুপ্রবেশকারী, কারা সুবিধাবাদী? আমাকে তালিকা দিলে ভাল হয়। আমি কিন্তু ওই ধরনের খুব একটা সুবিধাবাদী, অনুপ্রবেশকারী এখনও আওয়ামী লীগে দেখিনি।

টানা দশ বছর সরকারে থাকার ফলে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী ও সুবিধাভোগী নেতাকর্মীদের আধিক্য বেড়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা একথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: যুগের প্রয়োজনেই অনলাইন পত্রিকা, অভ্যস্ত হতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

তিনি বলেন, তার আগে আপনাকে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করি? আপনি বলছেন, আমাদের দলের কোন কোন নেতারা হচ্ছেন সুবিধাবাদী এবং অনুপ্রবেশকারী? যদি আপনাকে অনুরোধ করি, আপনি একটা তালিকা আমাকে দিতে পারেন, খুব ভাল হয়? কারা অনুপ্রবেশকারী আর কারা সুবিধাবাদী? আমি কিন্তু ওই ধরনের খুব একটা সুবিধাবাদী, অনুপ্রবেশকারী এখনও দেখিনি।

এ সময় তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সারাজীবন মাইর খাবে, অত্যাচারিত হবে, নির্যাতিত হবে, তাদের ছেলেমেয়েরা কষ্ট পাবে, পড়াশোনা করতে পারবে না, পরীক্ষার হলে বসলে ঘাড় ধরে বের হবে দেবে, তুই আওয়ামী লীগের ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করবে কেন? পরীক্ষা দেবে কেন? তাহলে আওয়ামী লীগ কি সারাজীবন এইটাই ভোগ করে যাবে? আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী তাদের কি একটু ভাল থাকার অধিকার নাই, এটাই আমার প্রশ্ন?’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘সারাজীবন আত্মত্যাগ করে এই দেশকেই তো স্বাধীন করে দিয়ে গেছে তারা। আজকে ভাষার অধিকার থেকে সবকিছুই কিন্তু এই দলের অবদান রয়েছে। আর এই দল ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষ তো পায়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কি পাচ্ছে? না, দেশের মানুষ পাচ্ছে? সেটা বিচার করে দেখেন?’

আরও পড়ুন:বিএনপির এমপিদের শপথ নিতে সরকারের কোনো চাপ নেই: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ পর্যন্ত বাংলাদেশের কি অবস্থা ছিল? আর এখন বাংলাদেশ কোথায় আছে? দেশের মানুষ কোথায় আছে? একটু তুলনামূলক একটা চিত্র দেন? একটা তুলনা দেন? আমরা না হয় আমাদেরটা বলবো, কিন্তু আপনারাও তুলনা করে দেখেন?’

তিনি বলেন,‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই কিন্তু একমাত্র রাজনৈতিক দল। তার একটা গঠনতন্ত্র আছে এবং এই গঠনতন্ত্র মোতাবেকই এটা চলে। আমার কিন্তু এই ক্ষমতা নাই, আমি এখনই বলবো, অমুক পার্টির সদস্য থাকবে না, আমি আরেকজনকে বানালাম। এই অধিকার কিন্তু আমাদের কাউন্সিল দেয় না। আমরা পারি না, বাকি যে কয়টা দল সবাই পারে।‘

বিজ্ঞাপন

বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক দল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসাবে থাকবে কিনা? এদের সৃষ্টিটা কোথা থেকে সেটা তো আপনাদের দেখতে হবে। এদের তৈরিটা হচ্ছে কাদের দিয়ে? অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, হত্যা-ক্যু ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে, দেশের রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করে, যারা ক্ষমতা দখল করেছে, তাদের দ্বারা যখন দল গঠন করা হয়, আর এই ক্ষমতা দখলকে উচ্চ আদালত বলে অবৈধ, সেই অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীদের দ্বারা যে দল গঠন হয়, সেই দল ক্ষমতায় থাকলেই তারা ঠিকে থাকতে পারে? ক্ষমতার বাইরে থাকলে তারা ঠিকে থাকতে পারে না। কারণ তাদের শিকড়ে জোর নাই। তাদের শিকড়ই নাই।’

আরও পড়ুন: ৭২ বছরের জীবনে ৬০ বছরই রাজনীতি চোখে দেখছি: প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক পোড় খাওয়া দল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘স্বর্ণলতা যখন কোন একটা গাছের উপর পড়ে দেখতে কিন্তু খুব সুন্দর লাগে। কিন্তু স্বর্ণলতা গাছটাকে ধ্বংস করে দেয়। এই সমস্ত দল যখন তৈরি হয়েছে,ওইরকম খুব চোখধাঁধানো সোনালী, স্বর্ণলতা দেখা গেছে। অনেকেই সেখানে ছুটে গেছে। কিন্তু এদের তো শিকড় নাই। কাজেই তাদের অবস্থা যদি নাজুক হয়, এর দায় দায়িত্ব কার। যারা সেই দল চালাচ্ছে, নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদের। কিন্তু আওয়ামী লীগ তো তা না। আওয়ামী লীগের রাজনীতি পোড় খাওয়া। আওয়ামী লীগের রাজনীতিটাই হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে বিরোধী দল থেকে এই আওয়ামী লীগের সৃষ্টি।‘

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের অধিকার আদায়ের জন্যই সংগ্রাম এবং ত্যাগ স্বীকার করে গেছে। যার ফলে স্বাধীনতা পেয়েছেন আবার সেই আওয়ামী লীগই যখন ক্ষমতায় এসেছে, তখন বাংলাদেশের মানুষ একটু সুখের মুখ দেখতে শুরু করেছে। একটু ভাল থাকার স্বপ্ন দেখছে।‘

তিনি আরও বলেন‘এই ভাল থাকাটা শুধু শহরভিত্তিক না। আমরা একটা এলিট শ্রেণী তৈরি হতে দেইনি। যেটা জিয়াউর রহমান দিয়েছিল, এরশাদ দিয়েছে, খালেদা জিয়া দিয়েছে তা করিনি। আমাদের সমস্ত উন্নয়নের লক্ষ্যবস্তু গ্রামের মানুষ। সেখান থেকে উন্নয়নটা নিয়ে আসছি বলেই আজকে এই জায়গাটায় এসেছে’

আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী, আওয়ামী লীগের অমুক-তমুক, বের করেন, কয়টা অনুপ্রবেশকারী আছে আর কারা আছে? আর কাদেরকে অনুপ্রবেশকারী বলবেন বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।

কিছু লোক তো আসবেই, কিছু লোক যাবেই। এটা রাজনীতিতে থাকে বলেও জানান ১৯৮১ সাল থেকে দলটির সভাপতির দায়িত্বে থাকা শেখ হাসিনা।

সারাবাংলা/এনআর/এসবি

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন