বিজ্ঞাপন

জিয়াউর রহমানের মার্শাল ল ট্রাইব্যুনালের বিচার চ্যালেঞ্জ করে রিট

April 29, 2019 | 12:21 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বিমান বাহিনীর এক বিদ্রোহের ঘটনায় ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর সামরিক আদালত ঘোষিত দণ্ডের ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছেন এক আইনজীবী। এছাড়া ওই বিচারে দণ্ড ও সাজাপ্রাপ্তদের চাকরির স্বাভাবিক অবসর পর্যন্ত বকেয়া বেতন, অন্যান্য সব সুবিধা ও পেনশনসহ ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রিটে জেনারেল জিয়াউর রহমানের অবৈধ মার্শাল ল ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৭-এর অধীনে সামরিক আদালতে অবৈধ দণ্ড এবং সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সেই অবৈধ দণ্ডাদেশের সময় থেকে চাকরির স্বাভাবিক অবসরের সময় পর্যন্ত পদ-পদবী অনুযায়ী তাদের চাকরির সমস্ত বকেয়া বেতন ও অন্যান্য সব সুবিধাসহ পেনশন না দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের যোগ্যতা অনুযায়ী কেন সরকারি চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আবেদন করা হয়েছে। রিটে প্রতিরক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও বিমান বাহিনীর প্রধানকে বিবাদী করা হয়েছে।

রোববার (২৮ এপ্রিল) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন আইনজীবী মতিউর রহমান। তৎকালীন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিমান বাহিনীর সার্জেন্ট সাইদুর রহমানের ছেলে মো. কামরুজ্জামান মিঞা লেলিনসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিমান বাহিনীর ১৪ কর্মকর্তার সন্তান ও বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত সেনা ও বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাদের ৮৮ সন্তানের পক্ষে রিটটি দায়ের করা হয়।

পরে আইনজীবী মতিউর রহমান জানান, আদালতের অনুমতি নিয়ে রিটটি আজকে সংশ্লিষ্ট শাখায় দায়ের করা হয়েছে। তবে এখনো রিট নম্বর পড়েনি। সোমবার রিট নম্বর পাওয়া যাবে। নম্বর পেলে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপন (মেনশন) করা হবে বলেও তিনি জানান।

বিজ্ঞাপন

রিট আবেদনে একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ভোররাতে বিমানবাহিনীতে সংঘটিত হয় ভয়াবহ এক বিদ্রোহ। কঠোরভাবে দমন করা হয় ভয়াবহ সেই বিদ্রোহ। সামরিক আদালতে বিচারের মাধ্যমে ফাঁসি দেওয়া হয় ১১ জন অফিসারসহ এক হাজার ৪৫০ জন বিমান সেনাকে। বরখাস্ত ও চাকরিচ্যুত হন আরও চার হাজার মানুষ। নিখোঁজ হন আরও অসংখ্য।’

২০১০ সালের ২ অক্টোবর ওই বিদ্রোহের পুনঃতদন্ত দাবি করে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন বিমান বাহিনী বিদ্রোহের ঘটনার শিকার ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।

তাদের বরাত দিয়ে প্রকাশিত ওই খবরে বলা হয়, ‘সাতাত্তরে বিমান বাহিনী বিদ্রোহের পর অন্যায়ভাবে অনেক বিমানসেনাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। অনেকে নিখোঁজ হয়েছেন। ফাঁসি হওয়া অনেকের লাশ পর্যন্ত পাননি তাদের পরিবারের সদস্যরা। সেই ভয়াবহ ঘটনার বিচার আজ পর্যন্ত হয়নি। পরিবারগুলো ক্ষতিপূরণ পায়নি। তারা সেই ঘটনা পুনঃতদন্ত করে দেখার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানান।’

বিজ্ঞাপন

রিটকারীদের আইনজীবী মতিউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মার্শাল ল রেগুলেশন অ্যাক্ট ১৯৭৭ দ্বারা সামরিক আদালতে জিয়াউর রহমান অন্যায়ভাবে বিচার করেছিল।

সেই বিচারে যাদের ফাঁসি হয়েছিল, যাদের যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছিল এবং যারা চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন, সেসব ব্যক্তি ও তাদের পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণের আওতায় আনার জন্য রিট আবেদনটি করা হয়েছে।’

সারাবাংলা/এজেডকে/টিআর

বিজ্ঞাপন

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন