বিজ্ঞাপন

সিদ্ধান্তে অনড় বিএনপি, হাল ছাড়েননি উকিল-হারুন-আমিনুল

April 29, 2019 | 1:51 am

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে এখনো অনড় বিএনপি। রোববার (২৮ এপ্রিল) রাতে গুলশানে দলটির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির রুদ্ধদ্বার বৈঠকেও আগের সিদ্ধান্তই বহাল আছে।

বিজ্ঞাপন

বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরুদ্দিন সরকার, ড. মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন- ভাবছেন উকিল, অপেক্ষায় হারুন, নীরব আমিনুল

বৈঠকের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে রোববার রাত সোয়া ১০টায় নজরুল ইসলাম খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘শপথ না নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত ছিল, তা এখনো বহাল আছে। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়নি। নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে আপনারা জানতে পারবেন।’

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সময় উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া ও হারুনুর রশীদ গুলশান কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচিত এই দুই প্রার্থীকে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ডাকা হয়নি। বৈঠক শেষে তাদেরকে কিছু বলাও হয়নি।

আরও পড়ুন- শপথ নিলেন বিএনপির জাহিদ

জানতে চাইলে রোববার (২৮ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে উকিল আব্দুস সাত্তার সারাবাংলাকে বলেন, ‘ওটা (গুলশান কার্যালয়) তো আমাদের হেড অফিস। ওখানে আমরা এমনিই গিয়েছিলাম। স্থায়ী কমিটির রুদ্ধদ্বার বৈঠকে আমাদের কেন ডাকা হবে?’

বিজ্ঞাপন

দলীয় সূত্রগুলো বলছে, শপথ গ্রহণের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা আগে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসতে পারে— এমন ভেবেই উকিল আব্দুস সাত্তার ও হারুনুর রশীদ রোববার সন্ধ্যায় গুলশান কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে তাদের কিছু বলা হয়নি।

আরও পড়ুন- জাহিদকে বহিষ্কার করল বিএনপি

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হারুনুর রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘বৈঠক শেষে আমাদের কিছু বলা হয়নি। আমরা এখনো অপেক্ষায় আছি। আরেকটা দিন সময় আছে। দেখি কী হয়।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে বিএনপি অনড় থাকলেও শপথ নিতে উদগ্রীব উকিল আব্দুস সাত্তার, হারুনুর রশীদ ও আমিনুল ইসলাম এখানো হাল ছাড়েননি। রোববার (২৮ এপ্রিল) সারাদিন তারা বিভিন্ন জায়াগায় দৌড়-ঝাঁপ করেছেন। সমমনাদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার-বিশ্লেষণ করছেন— শপথ নিলে কী হবে, না নিলে কী হবে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- বিএনপির এমপিদের শপথ নিতে সরকারের কোনো চাপ নেই: প্রধানমন্ত্রী

জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচিত প্রার্থী মো. আমিনুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘এখনো ইতিবাচক কোনো খবর নেই। একটা দিন বাকি আছে। দেখি আপনাদের কোনো সুখবর দিতে পারি কি না।’

তবে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ গ্রহণ না করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং মো. মোশারফ হোসেন অনেকটা স্বস্তিদায়ক অবস্থানে রয়েছেন বলে জানা গেছে। বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচিত এই দুই প্রার্থী অনেকটাই নির্ভার। শপথ নেওয়া, না নেওয়ার ঝামেলা থেকে তারা এখন মুক্ত। গত দুই দিন ধরে মো. মোশারফ হোসেনের মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে।

আরও পড়ুন- জাহিদুরের শপথের পেছনে সরকারের চাপ: মির্জা ফখরুল

এদিকে, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে একজনের শপথ গ্রহণ এবং আরও তিন জনের তীব্র আকাঙ্ক্ষার পরও বিএনপি কেন শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে— তা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে। কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন, একজন যখন শপথ নিয়েই ফেলেন এবং আরও তিন জন শপথের ব্যাপারে অস্থির হয়ে আছেন, তখন বিএনপির উচিত ছিল সিদ্ধান্ত বদলানো এবং সবাই মিলে শপথ নিয়ে সংসদে যাওয়া।

আরও পড়ুন- সংসদে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিই প্রথম অঙ্গীকার এমপি জাহিদের

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রবীণ সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান রোববার (২৮ এপ্রিল) রাত পৌনে ১০টায় সারাবাংলাকে বলেন, ‘শপথ গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার কোনো সুযোগ নেই। সিদ্ধান্ত বদলালে দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষা করা যেত না। সুতরাং আমি মনে করি, আগের সিদ্ধান্তে অনড় থাকাই সঠিক হয়েছে।’

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন