বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামে ৪ বিষয়ে ফল খারাপ, কমেছে জিপিএ-৫

May 6, 2019 | 3:09 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের এসএসসি পরীক্ষায় এবার পাসের হার বাড়লেও জিপিএ-৫ পাওয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। ২০১৮ সালে পাসের হার ছিল ৭৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। এবার ২ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭৮ দশমিক ১১ শতাংশ। গতবছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৮ হাজার ৯৪ জন। এবার পেয়েছে ৭ হাজার ৩৯৩ জন।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (০৬ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহবুব হাসান সংবাদ সম্মেলনে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন। এসময়  তিনি জিপিএ-৫ পাওয়া পরীক্ষার্থী কমে যাবার ব্যাখাও দেন।

মাহবুব হাসান জানান, চার বিষয়ে এবার পরীক্ষার্থীরা খারাপ ফল করেছেন। বিষয়গুলো হলো- বাংলা, গণিত, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং এবং মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের আবশ্যকীয় বিষয় সাধারণ বিজ্ঞান। এই চারটি বিষয়ে পরীক্ষার্থীরা এ-প্লাস না পাওয়ার প্রভাব সামগ্রিক ফলাফলে পড়েছে বলে মনে করছেন তিনি।

তিনি জানান,এ বছর সবচেয়ে বেশি জিপিএ-৫ কমেছে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে। ২০১৮ সালে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৭৮৩ জন। এবার পেয়েছে ৪১২ জন। বিজ্ঞান বিভাগে ২০১৮ সালে জিপিএ-৫ প্রাওয়ার সংখ্যা ছিল ৭২৮৫ জন। যা কমে এবার পেছেছে ৬৯৫৪ জন। মানবিকে গতবছর ছিল জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২৬ জন। এবার পেয়েছে ২৭ জন।

বিজ্ঞাপন

গত বছর বাংলায় এ-প্লাস পেয়েছিল ১০ হাজার ২২৯ জন পরীক্ষার্থী। এবছর পেয়েছে ৬৫১৮ জন। একইভাবে গণিতে ২০১৮ সালে এ-প্লাস পেয়েছিল ১৩ হাজার ৭৮৭ জন। এবার পেয়েছে ৮ ৭১২ জন।গতবার সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ে এ-প্লাস পেয়েছিল ৬২৩০ জন। এবার সেটা কমে হয়েছে ৪৭৩১ জন। ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিষয়ে গতবার পেয়েছিল ৩১১২ জন। এবার পেয়েছে ১৫৫২ জন।

মাহবুব হাসান বলেন, ‘বাংলা, গণিত, ফিন্যান্স ও ব্যাংকি এবং বিজ্ঞানের মতো বিষয়ে এ-প্লাস প্রাপ্তদের সংখ্যা কমে গেছে। এজন্য জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংখ্যা গতবারের চেয়ে ৭০১ জন কম হয়েছে। তবে সামগ্রিকভাবে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের ফল ভালো হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

জিপিএ-৫ এবং সার্বিক ফলাফলে এবারও চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে সেরা দশটি স্কুলের মধ্যে আবারো শীর্ষস্থান দখল করে নিয়েছে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজিয়েট স্কুল। এ স্কুল থেকে এবার ৪৫৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৫৬ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মুসলিম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩৯২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩১২ জন। তৃতীয় হয়েছে নাসিরাবাদ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়। এই স্কুল থেকে ৪৬১ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫পেয়েছে ২৯৪ জন। চতুর্থ অবস্থানে থাকা ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩২৫ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৭১ জন।

এছাড়া বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের (বাওয়া) ৪৬৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৬৪ জন, চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩৩৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২১৮ জন, নৌবাহিনী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ৫১৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৮৭ জন, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের ২০৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৬৩ জন, চট্টগ্রাম সরকারি বালক বিদ্যালয়ের ৩০৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৪৬ জন এবং কক্সবাজার সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩৫৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১১২ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।

গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ১০৩০ টি স্কুলের ১ লাখ ৪৯ হাজার ৬০৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে পাস করেছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৮৫১ জন। মোট পাসের হার ৭৮ দশমিক ১১ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

পাস করা পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র পাসের হার ৭৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ছাত্রী পাসের হার ৭৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ। বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার ৯১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাসের হার ৮০ দশমিক ৮৫ এবং মানবিকে ৬৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

এবার চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীন মহানগরের স্কুলগুলোতে পাসের হার কমেছে। চট্টগ্রাম জেলা, তিন পার্বত্য জেলা এবং কক্সবাজারে পাসের হার আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে। পাসের হার শূন্য এমন কোনো বিদ্যালয় নেই। শতভাগ পাস করা স্কুলের সংখ্যা ৩০টি।

চট্টগ্রাম মহানগরে গতবছর পাসের হার ছিল ৮৫ দশমিক ২২ শতাংশ। এবার পাসের হার ৮৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ। মহানগর বাদে চট্টগ্রাম জেলায় গতবার ছিল ৭৭ দশমিক ২৬ শতাংশ। এবার পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। কক্সবাজার জেলায় পাসের হার গতবার ছিল ৭৪ দশমিক ২৯ শতাংশ, এবার ৭৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। রাঙ্গামাটি জেলায় গতবার পাসের হার ছিল ৬২ দশমিক ৭২ শতাংশ, এবার ৬৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। খাগড়াছড়ি জেলায় এবার পাসের হার ৬৫ দশমিক ৪৬, গতবার ছিল ৫০ দশমিক ৫২ শতাংশ। বান্দরবান জেলায় গতবার ছিল ৫৭ দশমিক ৯২, এবার ৬৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

মাহবুব হাসান বলেন, ‘গতবছর পার্বত্য জেলার স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের ফলাফল খারাপ হয়েছিল। এরপর আমরা অন্ত:ত ২৬০টি স্কুলে গিয়ে সভা করেছি। শিক্ষকদের বলেছি- কোন বিষয়ে খারাপ ফল হয়েছে, কেন হয়েছে সেটা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে। এসব সভার ফল এসেছে এবারের রেজাল্টে। পার্বত্য এলাকার শিক্ষার্থীরা এবার ভালো ফল করেছে। মহানগরের স্কুলগুলোতে সাধারণত প্রতিবছর পাসের হার বাড়তি থাকে। এবার প্রায় এক শতাংশ কমেছে। এটার কারণ আমরা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।’

ছবি: শ্যামল নন্দী 

সারাবাংলা/আরডি/জেডএফ

আরও পড়ুন: এসএসসিতে পাস ৮২.২০%

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন