বিজ্ঞাপন

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিবাদ মেটাতে ট্রাম্পের ‘গোপন পরিকল্পনা’ ফাঁস

May 8, 2019 | 8:09 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট মীমাংসায় নতুন এক প্রস্তাবনা তৈরি করেছে মার্কিন প্রশাসন। ইসরায়েলের  ‘যোগসাজশে’ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই উদ্যোগকে ডাকা হচ্ছে ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি বা শতাব্দীর সেরা চুক্তি’ নামে। মুসলিমদের পবিত্র রমজানের শেষে অর্থাৎ জুনের প্রথম দিকে হোয়াইট হাউজ এই পরিকল্পনা প্রকাশ করতে পারে। তবে মঙ্গলবার (৭ মে) ইসরায়েলের সরকারপন্থী পত্রিকা ‘ইসরায়েল হাইয়ম’ নতুন এই প্রস্তাবনা ফাঁস করে দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ওই পরিকল্পনায় বলা হয়, ইসরায়েল, পিএলও ও হামাসের মধ্যে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে নতুন একটি ভূখণ্ডের স্বীকৃতি দেওয়া হবে, যেটির নাম হবে ‘নিউ প্যালেস্টাইন’। পশ্চিম তীর, গাজা ও আশপাশের অঞ্চল এই ভূখণ্ডের আওতায় থাকবে। তবে যেসব অংশ ইসরায়েল দখল করেছে সেসব ইসরায়েলর অংশ বলে গণ্য হবে। এছাড়া, একটি চুক্তির মাধ্যমে তিন বছরের মধ্যে আটক সব বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল।

পবিত্র জেরুজালেম থেকে ফিলিস্তিনিদের বিতারিত করা হবে না বা ভাগ করা হবে না। রাজধানী হিসেবে এটির ভাগিদার হবে ইসরায়েল ও নিউ প্যালেস্টাইন উভয়ই। তবে ভূমি ও পৌরসভার মাধ্যমে জেরুজালেমের নিয়ন্ত্রণ থাকবে ইসরায়েলের হাতে। নিউ প্যালেস্টাইনকে কর পরিশোধ করতে হবে। তবে জেরুজালেমে শিক্ষা বিষয়ক অধিকার থাকবে নিউ প্যালেস্টাইনের নিয়ন্ত্রণে।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া, জেরুজালেমে ইসরায়েলে কোনো নাগরিক ফিলিস্তিনিদের ভূমি কিনতে পারবে না। নিউ প্যালেস্টাইনের কোনো নাগরিকও পারবে না ইসরায়েলের কারও বসতি কিনতে।

নিউ প্যালেস্টাইনের জন্য এয়ারপোর্ট, ফ্যাক্টরি বা কৃষিকাজের জন্য জমি দেবে মিশর। তবে এখানে ফিলিস্তিনিদের বাস করার অধিকার থাকবে না। গাজা ও পশ্চিম তীরের যোগাযোগের জন্য সড়ক পথ নির্মাণ করা হবে। এর জন্য চীন শতকরা ৫০ ভাগ খরচ দিবে। বাকি ৫০ ভাগের সমান খরচ দিবে দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

নিউ প্যালেস্টাইন গঠনের জন্য পাঁচ বছর তহবিলে অর্থ দিবে যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, ও উপসাগরীয় দেশগুলো। প্রতি বছর এই প্রকল্পে খরচ হবে ৬ বিলিয়ন ডলার করে। মোট ৩০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ অর্থাৎ ৭০ ভাগ জোগাবে উপসাগরীয় দেশগুলো। যুক্তরাষ্ট্র দিবে ২০ ভাগ। বাকি ১০ ভাগের সহায়তা দিবে বাকি দেশগুলো।

বিজ্ঞাপন

নিউ প্যালেস্টাইন কোনো সেনাবাহিনী গঠনের সুযোগ পাবেনা। এর পরিবর্তে ইসরায়েল ও নিউ প্যালেস্টাইনের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এই চুক্তির আওতায় কোনো বর্হিশক্রুর হাত থেকে নিউ প্যালেস্টাইনকে রক্ষা করবে ইসরায়েল।

প্রস্তাবিত চুক্তি স্বাক্ষরের পর হামাস তার সব অস্ত্র মিশরের হাতে ন্যস্ত করবে। হামাসের নেতারা আরব দেশগুলোর কাছ থেকে বেতন পাবেন। নিউ প্যালেস্টাইন গঠনের এক বছরের মধ্যে সেখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

মিশর, গাজা ও ইসরায়েলের সব সীমান্ত উন্মুক্ত থাকবে। সেখানে পণ্য পরিবহন ও নাগরিকরা যাতায়াত করতে পারবেন। ইসরায়েলর আকাশসীমা ও বন্দর ব্যবহারের অনুমতি মিলবে নিউ প্যালেস্টাইনের।

বিজ্ঞাপন

যদি হামাস বা ফিলিস্তিনের কোনো গোষ্ঠী প্রস্তাবিত ওই চুক্তি মানতে অস্বীকার করে তবে যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনে সব রকমের সহায়তা বন্ধ করে দেবে। অন্যদেশগুলোকেও বাধ্য করবে যাতে তারা ফিলিস্তিনে সহায়তা না দেয়। আর ফিলিস্তিনের মাহমুদ আব্বাস চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও সশস্ত্র বিপ্লবী হামাস তা মেনে না নিলে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে গাজায় পূর্ণ সামরিক হামলা চালানো হবে। অপরদিকে ইসরায়েল এই চুক্তি না মানলে ইসরায়েলকে দেওয়া সহায়তা প্রত্যাহার করবে মার্কিন প্রশাসন। প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে ৩.৮ বিলিয়ন ডলার আর্থিক সাহায্য দিয়ে থাকে।

মিডল ইস্ট মনিটর থেকে অনূদিত

সারাবাংলা/ এনএইচ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন