May 11, 2019 | 5:21 pm
রাজনীন ফারজানা
মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার বিশ্বজুড়ে পালিত হয় আন্তর্জাতিক মা দিবস। সেই অনুযায়ী এবছরের মা দিবস আগামীকাল (১২ মে)। সারা বিশ্বেই নানা আয়োজনে সন্তানরা উদযাপন করেন মা দিবস। তবে অনেকেই এই দিবসের বিরোধিতা করে বলেন, মায়ের জন্য তো বছরের প্রতিটা দিন। আলাদা করে একটা দিনের কী প্রয়োজন?
কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় লিখেছেন-
‘আমি ভীষণ ভালবাসতাম আমার মা-কে
-কখনও মুখ ফুটে বলিনি।
টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে
কখনও কখনও কিনে আনতাম কমলালেবু’।'
অধিকাংশ বাঙালি ছেলে-মেয়ের গল্পটাই বোধ হয় এমন। আমরা মা কে যতই ভালোবাসি না কেন, কিছুতেই কেন জানি মুখ ফুটে তাকে সে কথা বলতে পারিনা। বলতে পারিনা, মায়ের মুখটা আমাদের কত প্রিয়, কত প্রিয় তাঁর গায়ের গন্ধ। তাই মাতৃত্ব উদযাপনের জন্য একটা দিন থাকা মন্দ নয়। ভালো আমরা মা কে সারাবছরই বাসি, কিন্তু একটা দিন না হয় তাকে জানালাম যে তিনি আমাদের জীবনে কতটা প্রিয়, কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের পরের লাইনেই উঠে এসেছে, সন্তানের সামান্যতম ভালোবাসা জ্ঞাপনও একজন মা কে কতটা আনন্দিত করে। ছেলের টিফিনের পয়সা বাঁচানো কমলালেবু পেয়ে ‘-শুয়ে শুয়ে মা-র চোখ জলে ভরে উঠত’।
মা দিবসে মায়ের জন্য সামান্য কিছু করলেও দেখবেন তার চোখে মুখে খেলে যাবে অপার্থিব আনন্দ। চলুন দেখে নেওয়া যাক এবারের মা দিবসে কীভাবে চমকে দেওয়া যায়, আমাদের মায়েদের।
মা দিবসকে অনেকেই বিশ্বায়নের প্রভাব বলে মনে করেন। ১৯০৮ সালে আমেরিকান শান্তিকর্মী আনা জার্ভিস প্রথম মা দিবস পালন করা শুরু করেন যা পরে সারা বিশ্বেই দারুণ সমাদৃত হয়। কিন্তু মাতৃত্বের উদযাপন নতুন কোন ধারণা নয়। সন্তানের জন্য মায়ের যে সীমাহীন অবদান ও ত্যাগ স্বীকার, তার প্রতি একধরণের কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন যুগে যুগে নানা সভ্যতাতেই ছিল। যেমন- গ্রিক উৎসব 'সিবেল', রোমান 'হিলারিয়া' ও খ্রিস্টান রীতি অনুযায়ী 'মাদারিং সানডে'র মাধ্যমে মায়ের জন্য বিশেষ একটি দিনের উদযাপন হাজার বছর ধরেই প্রচলিত। আজকের আধুনিক মা দিবস সরাসরি সেসব দিবস থেকে না আসলেও মাতৃত্বের উদযাপন আজও সার্বজনীন।
মা দিবস কতটা ব্যবসায়িক কারণে বা আধুনিকতার জন্য উদযাপন হয়, সেই বিচার না করে তাই আসুন মায়ের জন্য উৎসর্গ করি অন্তত একটি দিন। মায়ের সাথে কাটাই অমূল্য কিছু সময়। সবাইকে মা দিবসের শুভেচ্ছা।
ফিচার ফটো মডেল - জোহরা শিউলী ও পৃথ্বী হাসান
সারাবাংলা/আরএফ/পিএম