বিজ্ঞাপন

‘শিবির জাকিরে’ সূত্রপাত ছাত্রলীগের ২ অংশের মারামারির

May 13, 2019 | 10:57 pm

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট

ছাত্রলীগের ঘোষিত ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ত্যাগীদের বাদ দিয়ে শিবির-ছাত্রদল করত— এমন ব্যক্তিদের স্থান দেওয়া হয়েছে অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ছাত্রলীগেরই একটি অংশ। মধুর ক্যান্টিনে তাদের পাশেই পদপ্রাপ্ত নেতা ও তাদের সমর্থকরা স্লোগান দিচ্ছিলেন। এমন সময় পদপ্রাপ্তদের একজন সমর্থক পদবঞ্চিত বা কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়াদের লক্ষ করে বলেন, ‘শিবির জাকির’। তখন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নেতাকর্মীরা পাল্টা তাদেরই শিবির বলে জবাব দেন। এরপর একজন মধুর ক্যান্টিনের দেয়াল থেকে সংবাদ সম্মেলনের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। এরপর শুরু হয় চেয়ার ছোড়াছুড়ি।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিরোধিতাকারীদের ওপর হামলা

এভাবেই সোমবার (১৩ মে) রাত ৮টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের দুই অংশের মারামারি শুরু হয়। এই মারামারিতে আহত হয়েছেন ছাত্রলীগের রোকেয়া হল শাখা কমিটির বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী ইসলাম দিশা, কবি সুফিয়া কামল হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদারসহ কমপক্ষে সাত জন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনের আঘাত গুরুতর।

পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, যোগ্যদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের স্থান দেওয়া হয়েছে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে। যাদের পদ দেওয়া হয়েছে, তাদেরও যোগ্যতা অনুযায়ী পদ দেওয়া হয়নি। সে কারণেই প্রতিবাদ করছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন কমিটিতে পদবঞ্চিত বা স্থান না পাওয়া ছাত্রলীগকর্মীদের মধ্যে ছাত্রলীগের গত কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের কিছু অনুসারী রয়েছেন। সেই জাকির হোসাইনের প্রসঙ্গের অবতারণা থেকেই মধুর ক্যান্টিনে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি সূত্রপাত।

আরও পড়ুন- ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা [তালিকাসহ]

বিজ্ঞাপন

পূর্ণাঙ্গ কমিটির প্রতিবাদ করতে গিয়ে আহত তিলোত্তমা শিকদার সাংবদিকদের বলেন, যে কমিটি হয়েছে, এটা বিতর্কিত কমিটি। এ কমিটি আমরা মানি না। জামায়াত-শিবির বলে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। কিন্তু আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখুন, জামায়াত-শিবির নিয়ে নতুন কমিটি হয়েছে। এই কমিটির কেউ ব্যবসায়ী, কেউ বহিরাগত। আমরা পদবঞ্চিতরা মধুর ক্যান্টিনে বিক্ষোভ করছিলাম। শোভন-রব্বানীর আদেশে অতর্কিতভাবে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে।

শামসুন নাহার হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াসমিন শান্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ছাত্রলীগ করেছি। কিন্তু আমাদের কোনো পদ দেওয়া হয়নি। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিক্ষোভ করছিলাম। কিন্তু আমাদের গায়ে হাত দেওয়া হয়েছে।’

তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করছেন পদপ্রাপ্তরা। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পাওয়া মাহাবুব খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘ একবছর যাচাই-বাছাই হওয়ার পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে। এখানে তো সবাইকে রাখা সম্ভব না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নতুন কমিটিতে পদপ্রাপ্ত একাধিক নেতা সারাবাংলাকে বলেন, যারা আজকের বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছে, তারা হয়তো কোথাও থেকে ইন্ধন পেয়ে এই কাজ করেছে। ছাত্রলীগের ১০ বছরের যে সহিষ্ণুতার চর্চা, এই মারামারির মাধ্যমে সেই চর্চার ব্যত্যয় ঘটল। কমিটিকে বিতর্কিত করতেই এই কাজ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/কেকে/টিএস/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন