বিজ্ঞাপন

সড়কে নির্বিচারে খোঁড়াখুঁড়িতে মারাত্মক দুর্ভোগ, একমত নাছির-সুজন

May 13, 2019 | 11:12 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: সড়কে সরকারি সংস্থাগুলোর নির্বিচারে খোঁড়াখুঁড়িতে চট্টগ্রাম নগরবাসী মারাত্মক দুর্ভোগে আছে বলে স্বীকারোক্তি এসেছে দুই জ্যেষ্ঠ্য আওয়ামী লীগ নেতার কাছ থেকে। চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন এক সভায় দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরে অভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। এসময় সরকারি সংস্থার সঙ্গে সিটি করপোরেশনের সমন্বয় না থাকার অভিযোগও তুলেছেন সুজন।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৩ মে) দুপুরে মেয়রের কার্যালয়ে আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে খোরশেদ আলম সুজনের নেতৃত্বাধীন নাগরিক সংগঠন ‘নাগরিক উদ্যোগ’। চট্টগ্রাম নগরবাসীর নাগরিক সংকট লাঘবে বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকের অংশ হিসেবে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় সুজন জনদুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরে মেয়রের উদ্দেশে বলেন, সিটি করপোরেশনের সঙ্গে ওয়াসার কোনো সমন্বয় নেই। দেখা যাচ্ছে, নতুন রাস্তা করে যাওয়ার পর ওয়াসা আবার খুঁড়ে পুরো রাস্তা নষ্ট করে দিচ্ছে। সেই রাস্তা মাসের পর মাস ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে থাকছে। যেন দেখার কেউ নেই! একটি রাস্তা বিভিন্ন সংস্থা এক মাসের ভেতরে দুই-তিন বার পর্যন্ত কাটছে। ওয়াসা চট্টগ্রাম নগরীকে একটি কবরস্থানে পরিণত করেছে।

বিমানবন্দর সড়কে যানজটের চিত্র তুলে ধরে সুজন বলেন, বিমানবন্দরের প্রবেশমুখে এতগুলো অফডক কনটেইনার ইয়ার্ড কিভাবে থাকে? ইয়ার্ডগুলো বিমানবন্দরকে পুরো চট্টগ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। যানজটের কারণে সঠিক সময়ে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে পারছেন না যাত্রীরা। অনেক বেসরকারি বিমান সংস্থা তাদের ফ্লাইট চট্টগ্রাম থেকে গুটিয়ে নিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আগ্রাবাদ এক্সেস সড়ক ও পোর্ট কানেকটিং সড়কে দীর্ঘসময় ধরে সিটি করপোরেশনের সংস্কার কাজ নিয়ে জনদুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরে সুজন বলেন, ইপিজেড-বন্দরকেন্দ্রিক হাজার হাজার গাড়ি এই সড়কগুলো দিয়ে চলাচল করে। অথচ বছরের পর বছর ধরে এই সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে। এতে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। বহদ্দারহাট থেকে মোহরা পর্যন্ত আরাকান সড়কের এক পাশ কেন বছরের পর বছর ধরে বন্ধ রেখে মানুষকে কষ্ট দেওয়া হচ্ছে?

নগরজুড়ে মশার উৎপাত ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মেয়রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সুজন। এছাড়া খোলা ট্রাকে পণ্য পরিবহন না করতে এবং নগরীর সড়কগুলো অবৈধ দখলমুক্ত করার জন্য মেয়রকে অনুরোধ করেন তিনি।

সুজনের বক্তব্যের পর মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের বক্তব্যেও উঠে আসে জনদুর্ভোগের কথা। মেয়র বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য, আমি মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার পর একযোগে নগরীর সড়কগুলোতে ওয়াসা, সিডিএ, টিঅ্যান্ডটি, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে। উন্নয়ন কাজের জন্য তো রাস্তা কাটার অনুমতি দিতে হয়। একইসঙ্গে মূল সড়কগুলো কেটে ফেলায় নগরবাসী ভোগান্তিতে পড়েছে, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে চেষ্টা করছি, দ্রুত সংস্কারের মাধ্যমে যেন এই ভোগান্তি কমানো যায়।’

বিজ্ঞাপন

আগ্রাবাদ অ্যাকসেস সড়ক ও পোর্ট কানেকটিং সড়কের কাজ জাইকা’র অর্থায়নে চলছে জানিয়ে মেয়র বলেন, কাজের ক্ষেত্রে জাইকা’র নিজস্ব পদ্ধতির বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। ২০১৯ সালের মধ্যে সড়কগুলোর কাজ শেষ হবে।

নগরীর বহদ্দারহাট থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত আরাকান সড়কটি ৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণের  জন্য দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেয়র। তিন মাসের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর সড়ক সড়ককে হকারমুক্ত করার আশ্বাসও দিয়েছেন মেয়র।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে নাগরিক উদ্যোগের সংগঠক হাজী মো. ইলিয়াছ, কামাল মেম্বার, হাজী হোসেন কোম্পানী, হাবিবুর রহমান, নিজাম উদ্দিন, আব্দুল আজিম, এজাহারুল হক, মোসাদ্দেক হোসেন বাহাদুর, মো. শাহজাহান, পংকজ চৌধুরী কংকন, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, সোলেমান সুমন, সমীর মহাজন লিটন, শেখ মামুনুর রশীদ, জাহাঙ্গীর আলম, সফি আলম বাদশা, স্বরূপ দত্ত রাজু, নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

বিজ্ঞাপন

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন