বিজ্ঞাপন

চুয়াডাঙ্গায় ব্রি-২৮ ধানে চিটা, ক্ষতিতে কৃষক

May 15, 2019 | 7:52 am

রিফাত রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গায় চলতি মৌসুমে বোরোর ব্রি-২৮ ধানে চিটা দেখা দিয়েছে। এতে ভয়াবহ ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন কৃষকরা। তবে সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, জেলার অধিকাংশ এলাকাতেই ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কয়েকটি এলাকায় শুধুমাত্র ব্রি-২৮ ধানে চিটা দেখা গেলেও তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, ধানে চিটা হয় ব্লাস্ট বা মাজরা পোকা লাগার কারণে। এছাড়া প্রয়োজনের সময় সেচের অভাবেও ধানে চিটা হতে পারে। আবার ধানের জাত খারাপ হলেও চিটা দেখা দিতে পারে।

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বুজরুকগড়গড়ি এলাকার কৃষক আকতার হোসেন বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে ব্রি-২৮ ধানের আবাদ করছি। কিন্তু এ বছর ধানে ব্যাপক হারে চিটা হয়েছে। ধান দেখতে ভালো হলেও কাটতে এসে দেখি ৪ ভাগের ৩ ভাগই চিটা।’

আরেক কৃষক রবিউল ইসলামও একই অভিযোগ করেন। তিনি জানান, সঠিক সময়ে কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শের অভাবেই তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ধানের চারা রোপণের পর বিভিন্ন সময় সমস্যা দেখা দিলেও তার কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞাপন

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা জেলায় চলতি ২০১৮-২০১৯ আবাদ মৌসুমে ৩৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৫ হাজার ৫৫৮ হেক্টর, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৯ হাজার ৫২০ হেক্টর, দামুড়হুদা উপজেলায় ৭ হাজার ৪০০ হেক্টর ও জীবননগর উপজেলায় ৫ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়।

চলতি মৌসুমে হাইব্রিড জাতের এসিআই-১ ও ২, সোনার বাংলা, এসএল-৮এইচ, চমক, সাথী, লাল তীর এবং হীরা, বিএডিসির উৎপাদিত উচ্চ ফলনশীল জাতের ব্রি-২৬, ২৮, ২৯, ৫০, ৫৫, ৫৮, ৬৩,৭৪, ৮১, ৮৯, ৮২ বিনা-৮ এছাড়াও কাজল লতা, নয়নমনি, গটকা, খাটোবাবু ধান চাষ করেছে চাষীরা।

এর মধ্যে, শুধুমাত্র ব্রি-২৮ ধানেই চিটা দেখা গেছে। জেলার প্রায় ৬ হাজার ৩০৯ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছিল এই জাতের ধান।

বিজ্ঞাপন

বোরো ব্রি-২৮ ধানের চিটা প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবাইর মাসরুর বলেন, ‘এ মৌসুমে বোরো ধানের ভাল ফলন হয়েছে। তবে এই জাতের ব্রি-২৮ ধানে চিটা হয়েছে, এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।’

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য সংরক্ষণ) সুফি রফিকুজ্জামান বলেন, ‘আমরা কৃষি বিভাগ থেকে ব্রি-২৮ ধানের আবাদ না করতে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছিলাম। এই ধানের আবাদ শুরু হয়েছিল ১৯৯০-৯৪ মৌসুমে। ইতিমধ্যে এই ধানের ১২ থেকে ১৪ শতাংশ গুণ নষ্ট হয়ে গেছে। তাই এর বিকল্প হিসাবে ব্রি-৬৩ আবাদ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

তিনি জানান, তাছাড়া ব্রি-৫০, ৬৮, ৭৪, ৮১, ৮২ ও ৮৯ আবাদ করার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের। এসব ধানের ফলন ভালো, দামও বেশি। ব্রি-২৮ ধানের চালের দাম যেখানে ৪০ টাকা, সেখানে অন্য ধানগুলোর চালের দাম ৬০-৬৫ টাকা বলে জানান এই কর্মকর্তা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমও

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন