বিজ্ঞাপন

‘রোহিঙ্গারা ভবিষ্যতে জঙ্গি-সন্ত্রাসের অন্যতম উৎস হতে পারে’

May 26, 2019 | 4:47 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সরকারকে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আগে থেকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, ‘বাংলাদেশে অবস্থাকারী রোহিঙ্গারা অদূর ভবিষ্যতে জঙ্গি মৌলবাদী সন্ত্রাসের অন্যতম উৎস হতে পারে। রোহিঙ্গাদের দারিদ্র্য, ক্ষোভ ও অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে জামায়াতিরা তাদের ভিতর জঙ্গি প্রচারণা চালাচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে সরকারের সচেতন হওয়া উচিত।’

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৬ মে) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত ‘বাংলাদেশে আইএস-এর হুমকি ও কার্যক্রম: সরকার ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা জানান।

শাহরিয়ার কবির আরও বলেন, ‘আমরা দেখছি সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে ব্লগার ও সাংবাদিকদের ৫৭ ধারায় গ্রেফতার করা হচ্ছে। তবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও ওয়াজ মাহফিলে মওদুদীপন্থীরা ধর্মের নামে সাম্প্রদায়িকতা ও ঘৃণা ছড়াচ্ছে। তারপরও তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। এতে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ বিস্তারের পথ আরও মসৃণ হচ্ছে।’

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরি মানিক বলেন, ‘ওয়াজ মাহফিলে ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যারা ধর্মকে পুঁজি করে অসহিষ্ণুতা, ঘৃণা ও সাম্প্রতদায়িকতা ছড়াচ্ছে, হাইকোর্টে রুল জারি করে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘যারা ধর্মীয় বক্তব্যের আড়ালে ঘৃণা, বিদ্বেষ ও সাম্প্রয়াদিকতা ছড়ায়, তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও ৫৭ ধারায় বিধান রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে এদের এখনো শাস্তির আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি এসব নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, তবে হাইকোর্টে রুল জারি করে এদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।’

অধ্যাপক মুনতাসির মামুন বলেন, ‘বাংলাদেশে অনলাইন ও বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে সাম্প্রদায়িকতা ও অন্য ধর্মের নামে বিদ্বেষ ছড়ানো চূড়ান্ত রূপে দেখা দিয়েছে। আমাকেও একশ্রেণির মৌলবাদীরা নাস্তিক অ্যাখ্যা দিতে বিভিন্ন সংবাদ পরিবেশন করেছে। কিন্তু বারবার কতৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সুরাহা করা যায়নি। সরকার এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে কিনা, সে বিষয়েও স্পষ্ট করছে না। সরকারের উচিত, পদক্ষেপ গ্রহণ করলে সেটা জানানো, না গ্রহণ করলেও সেটা জানানো। সরকার বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে পদ্মাসেতু বানাতে পারলে এসব নির্মূল করতে পারবে না, এটা আমি বিশ্বাস করি না।’

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহসভাপতি মাহবুবুর রশীদ বলেন, ‘আমরা দেখেছি সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ কত ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। নাসিরনগরের রসরাজ দাসকে আজ মিথ্যা মামলা নিয়ে তিন বছর লড়াই করতে হচ্ছে, রামুতে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে বিদ্বেষ ছড়ানো হয়েছে। এসব নিয়ন্ত্রণে আনতে এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।’

বিজ্ঞাপন

শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুনী বলেন, ‘ওয়াজ মাহফিলে, ইউটিউবে এক শ্রেণির ধর্মব্যবসায়ী মেয়েদের নিয়ে বিভিন্ন কটূক্তি করে। সমাজে এসবের কারণে মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসাত বেড়েই চলছে। এসব দমন না করলে এ দেশের মেয়েরা স্বাধীনচেতা হিসেবে বেড়ে উঠতে পারবে না।’

এ সময় সংগঠনের সভাপতি শাহরিয়ার কবির জঙ্গিদমন ও সাম্প্রদায়িকতা দমনের পাশাপাশি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিকভাবে মোকাবেলা করতে সরকার ও নাগরিক সমাজের প্রতি বেশকিছু পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান।

তার মধ্যে রয়েছে- সংবিধানের ৩৭ ধারা অনুয়ায়ী ধর্মের নামে রাজনীতি বন্ধ করা, ওয়াজ ও খুতবার নামে ইসলামকে ঘৃণা ও সন্ত্রাসের সমার্থক বানানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত, তাদের আইনের আওতায় আনা। ফেসবুকে আইএস ও আল কায়েদার রণনীতি-প্রচারকারীদের আইনের আওতায় আনাসসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, সদস্য সালমা হক ও কোষাধ্যক্ষ আল মাহমুদসহ অনেকে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ওএম/এমআই

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন