বিজ্ঞাপন

অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ঢাকায় ৬২ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ ডিএমপির

June 15, 2019 | 1:50 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: অপরাধ কমিয়ে আনতে বর্তমানে ঢাকা শহরের ৬২ লাখ ৩৪ হাজার ৫৪৭ জন নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, এসব তথ্য সংগ্রহ করা আছে সিটিজেন ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে (সিআইএমএস)। এর মধ্যে ২ লাখ ৪১ হাজার ৫০৭ জন বাড়িওয়ালা, ভাড়াটিয়া ১৮ লাখ ২০ হাজার ৯৪ জন, মেস সদস্য ১ লাখ ২১ হাজার ৪০ জন, পরিবারের সদস্য ৩১ লাখ ৬৬ হাজার ৮২১ জন এবং ড্রাইভার ও গৃহকর্মী ৮ লাখ ৮৩ হাজার ৯৮৪ জনের তথ্য রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৫ জুন) সকাল সাড়ে ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে নাগরিকদের ‘তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান তিনি।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ১৫ জুন থেকে আগামী ২১ জুন পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহ অনুষ্ঠিত হবে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণের লক্ষে ঢাকায় বসবাসরত নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহের বিষয়টি আরও জোরদার করতে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহ পালন করছে ডিএমপি। এরমধ্যে ঢাকায় ৫০ টি থানার ৩০২ টি বিটে ভাগ করে নাগরিকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ তথ্য সংগ্রহ করবে। এরপর ২১ জুন থেকে ডিএমপি সদর দফতর থেকে আরেকটি টিম আটটি ক্রাইম বিভাগে ভাগ হয়ে দৈবচয়ন পদ্ধতিতে ক্রস চেক করবেন। কোথাও কেউ বাদ পড়লে পরবর্তীতে তাদেরকে পুনরায় তথ্য ফরমের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করে সিআইএমএস সফটওয়্যারে সংরক্ষণ শুরু করে ডিএমপি। এর আগে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে এর পাইলট প্রকল্প শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানের শুরুতে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায় সিআইএমএস সফটওয়্যারের কিছু সফলতার চিত্র তুলে ধরেন। এ সময় তিনি বলেন, হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর আমরা নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ শুরু করি। যারা পরিচয় গোপন করে ঢাকায় বাড়ি ভাড়া নিতে চান তারা এখন ভাড়া নিতে পারছেন না। এছাড়া এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ভিকটিম, অপরাধী শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। কারণ সংরক্ষিত তথ্যে একজন ব্যক্তির জন্য আলাদা ইনডেক্স রয়েছে। ফলে একজন ব্যক্তি এলাকা পরিবর্তন করলেও আমরা তার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে পারি।

ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া আরও বলেন, উন্নত বিশ্বের আদলে ডিএমপি প্রথমে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করে। এখন অন্যান্য জায়গায়ও তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে। আমরা কঠোর গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার মাধ্যমে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করি। গত তিন বছরে কোনো নাগরিকের তথ্য ফাঁস হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ শুরুর পর অপরাধের মাত্রা কমে এসেছে। এছাড়া কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে তার উদঘাটনের হার ৯০ শতাংশের উপর বেড়েছে। আগে ৫০ শতাংশের বেশি রহস্যের উদঘাটন করা যেত না।

তিনি বলেন, আমরা সম্প্রতি লক্ষ করেছি, ভাড়াটিয়া, বাড়িওয়ালা এবং পুলিশ তথ্য দেওয়া বা সংগ্রহের ক্ষেত্রে মনোযোগ হারিয়ে ফেলেছেন। বসিলায় জঙ্গি আস্তানায় র‌্যাবের চালানো অভিযানের পর খোঁজ নিয়ে দেখেছি ভাড়াটিয়া বা মালিক থানায় তথ্য দেননি। এরকম আরও অনেক থাকতে পারে। আবার অনেকেই গ্রাম থেকে এসে বাসা ভাড়া নিচ্ছেন, তাদের মধ্যে অনেক অপরাধী রয়েছেন যারা তথ্য গোপন করে বাসা ভাড়া নিয়ে বাস করছেন। তাই তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহ পালন করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

পুলিশের কাছে তথ্য থাকলে চুরি, ছিনতাই, সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র, সন্ত্রাসী বা জঙ্গি হামলার মতো বিষয় প্রতিরোধ করা সম্ভব। এজন্য পুলিশকে তথ্য দিতে নাগরিকদের আহ্বান জানান ডিএমপি কমিশনার। কমিশনার বলেন, তথ্য দিন নিরাপদ থাকুন। তথ্য দিন সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দিতে সহায়তা করুন।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নাগরিকদের তথ্যের নিরাপত্তা দেওয়াও আমাদের বড় কাজ। কাজেই তথ্য ফরম সংগ্রহ করতে গিয়ে এমন কাউকে সম্পৃক্ত করা যাবেনা যাতে নাগরিকদের তথ্য অন্যজনের হাতে চলে যায়। তাই তথ্য সংগ্রহের কাজে বাইরের কাউকে সম্পৃক্ত করা হবে না।

সারাবাংলা/ইউজে/এনএইচ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন