বিজ্ঞাপন

জামিন নাকচ, ওসি মোয়াজ্জেম কারাগারে

June 17, 2019 | 2:37 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোর মামলায় সোনাগাজী থানা থেকে প্রত্যাহার হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৭ জুন) দুপুরে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসলাম জগলুল হোসেন জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে ওসি মোয়াজ্জেমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে, দুপুরে ওসি মোয়াজ্জেমের আইনজীবী ফরুক আহমেদ সাইবার ট্রাইব্যুনালে জামিনের আবেদন করেন। জামিন আবেদনের ওপর দুপুর আড়াইটার দিকে শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম শামীম জামিনের বিরোধিতা করেন।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ ছাড়া আগামী ৩০ জুন এ মামলার চার্জ শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৬ জুন) বিকেলে হাইকোর্ট এলাকা আটক হওয়ার পর ওসি মোয়াজ্জেম শাহবাগ থানা পুলিশের হেফাজতে ছিলেন। পরে সোমবার সকালে সোনাগাজী থানা পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়।

এদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওসি মোয়াজ্জেমকে শাহবাগ থানা আদালতে নেওয়া হয়। এরপর তাকে মহানগর মুখ্য হাকিম (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। পরে বেলা ২টার সময় ওসি মোয়াজ্জেমকে এজলাসে নেওয়া হয়। এরপর ওসি মোয়াজ্জেমের উপস্থিতিতে সাইবার ট্রাইব্যুনালে শুনানি শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

গত ২৭ মে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের দায়ের করা মামলায় একই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এদিন মামলার বাদী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।

সোনাগাজীর মাদরাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি থানায় অভিযোগ দিতে আসার পর তাকে আপত্তিকর প্রশ্ন করা ও ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে।

গত ১৫ এপ্রিল মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এই  আবেদন গ্রহণ করে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসলাম জগলুল হোসেন মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।

মামলার এজাহারে থেকে জানা যায়, গত ২৭ মার্চ নুসরাতকে থানায় নিয়ে যান ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। সেখানে তিনি নিয়মবহির্ভূতভাবে নুসরাতকে জেরা করতে থাকেন। ওই জেরার সময় নুসরাতের ভিডিও ধারণ করেন ওসি মোয়াজ্জেম। পরবর্তী সময়ে তিনি ফেসবুক ও ইউটিউবে তা ছড়িয়ে দেন। ওই সময় মোয়াজ্জেম হোসেন আপত্তিকর ভাষায় নুসরাতকে জেরা করেন। এছাড়া তার ধারণ করা ভিডিও ডিজিটাল মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।

বিজ্ঞাপন

ওই ঘটনায় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারা মামলাটি দায়ের করা হয়। একইসঙ্গে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার আবেদন জানান।

এর আগে, গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ রুমে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। কারাগারে থেকেই নুসরাতের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে চাপ দিতে থাকেন সিরাজ। তবে মামলা তুলে না নিলে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় অধ্যক্ষের সহযোগীরা। গত ১০ এপ্রিলের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় নুসরাতের।

সারাবাংলা/এআই/একে/জেডএফ 

আরও পড়ুন

ওসি মোয়াজ্জেম আদালতে
ওসি মোয়াজ্জেমের সর্বোচ্চ শাস্তি চায় নুসরাতের পরিবার
ঢাকার আদালতেই তোলা হবে ওসি মোয়াজ্জেমকে
জামিন নিতে এসে ধরা পড়লেন ওসি মোয়াজ্জেম
সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম গ্রেফতার
ফেনীর পুলিশও ঢাকায় খুঁজে পাচ্ছে না ওসি মোয়াজ্জেমকে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন