বিজ্ঞাপন

নৌকা প্রার্থীর পরাজয়: ‘সহিংসতা ছড়াচ্ছেন’ বিজয়ী প্রার্থীর কর্মীরা

June 21, 2019 | 9:22 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

পিরোজপুর: শেষ ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রিয়াজ উদ্দিন। মঙ্গলবার (১৮ জুন) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নৌকা প্রতীকের হোসাইন মোশারফ সাকুকে ৪৭ হাজার ৬৬৬ ভোটে পরাজিত করেন। তবে বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা ছড়ানোর।

বিজ্ঞাপন

গত দুইদিনে অন্তত চারটি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। হামলার ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সংখ্যালঘুরাও। গত মঙ্গলবার রাতে প্রথমে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সবশেষ শুক্রবার (২১ জুন) মা ও মেয়ের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার (২১ জুন) সকালে নৌকা প্রার্থী হোসাইন মোশারফ সাকুর সমর্থক উপজেলার মিরুখালীর কাটাখালী গ্রামের কৃষক হাসান আলীকে (৪৫) কৃষিকাজে যাওয়ার পথে বিজয়ী চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিনের সমর্থক নবী হোসেন, বাদশা ও শাজাহান দলবল নিয়ে হামলা করে আহত করে। এ সময় ছোট ভাই নির্মাণ শ্রমিক নুর মোহাম্মদ (৩৫) বড় ভাইকে বাঁচাতে এলে তাকেও পিটিয়ে আহত করা হয়। আহত দুই ভাইকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

অপরদিকে শুক্রবার (২১ জুন) সকালে নৌকার কর্মী ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তফাকে বাড়িতে না পেয়ে বিজয়ী প্রার্থীর কর্মী রাজু, জসিম ও হানিফ দলবলসহ মোস্তফার স্ত্রী জাহানারা বেগম (৩৫) ও কলেজ পড়ুয়া মেয়ে নাদিরাকে (১৮) লাঞ্ছিত ও পিটিয়ে জখম করে। আহত মা-মেয়েকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

আহত মা-মেয়ের অভিযোগ, হামলাকারীরা মিরুখালী বাজারে তাদের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাট করেছে। এছাড়া তাদের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে।

এর আগে গতকাল (বৃহস্পতিবার, ২০ জুন) সকালে উপজেলার রাজারহাট গ্রামে নৌকা সমর্থক নারী ইউপি সদস্য খাদিজা ইলিয়াসের বসতঘরে হামলা ও লুটপাট চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে মঠবাড়িয়া থানায় মামলা হয়েছে।

মামলায় বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থক দাউদখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি রজলুর রহমান সরদারসহ ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ এরইমধ্যে ইদ্রিস আলী নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রাতে উপজেলার ছোট শিংগা গ্রামে গভীর রাতে শংকর হালদার, চিত্তরঞ্জন গাইন, চঞ্চল গাইন, বিশ্বজিৎ গাইন, অমৃত গাইন, স্বপন মিস্ত্রি, পারুলের খড়ের গাদায় একযোগে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র রফিউদ্দিন আহমেদ ফেরদৌস অভিযোগ করেন, নৌকা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় স্বতন্ত্র বিজয়ী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীর ওপর হামলা করছে।

তিনি আরও বলেন, নৌকার কর্মী-সমর্থকদের বসতঘরেও হামলার ঘটনা ঘটছে। এমনকি সংখ্যালঘুরা হামলার শিকার হয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

তবে হামলার বিষয়ে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন,  ‘নির্বাচনের আগে হামলার জের ধরে নির্বাচন পরবর্তী দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনা যেন আর না হয় সে জন্য আমি উদ্যোগ নিয়েছি। দুর্বৃত্তদের কঠোরহস্তে দমন করা হবে।’

বিজ্ঞাপন

‘যারা হামলা করছে তারা আপনার সমর্থক’ উল্লেখ করে নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমার কাছে এরকম কোনো তথ্য আসেনি। কে বা কারা হামলা করছে আমি অবগত নই।’

মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আবদুল্লাহ বলেন, ‘নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা ঠেকাতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।’

মা ও মেয়ের ওপর হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখনও অভিযোগ পাইনি। থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।’

সারাবাংলা/এমএইচ/একে

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন