বিজ্ঞাপন

সময় বলে কিছু নেই সমারয়ে!

June 22, 2019 | 5:38 pm

বিচিত্রা ডেস্ক

সময় সবচেয়ে দামি। সময় মাফিক চলতে হবে। সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না, এসবকে যতই চিরন্তন সত্য বলা হোক না কেনো, নরওয়ের একটি দ্বীপের জন্য তা আর খাটবে না। এই দ্বীপের বাসিন্দারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা ‘সময়’ নামের ধারণাটি থেকেই মুক্ত থাকবে। ‘আমরা কী চাই? কখন চাই?’ এসবে তাদের আর থোরাই পাত্তা।

বিজ্ঞাপন

দ্বীপটির নাম সমারয়। নরওয়ের আর্কটিক সার্কেলের উত্তরাংশে পশ্চিম ট্রোমসো অঞ্চলে পড়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদের কথা হচ্ছে, আরে বাপু এত যে সময় সময় করো, তা আমাদের সাথে কেনো? আমরা পৃথিবীর আর পাঁচটি অঞ্চলের মতো নই। সময় তো এখানে আর সবার মতো ধরা দেয় না। এখানে শীতের দিনে সূর্য ওঠেই না। আর গ্রীষ্মে সূর্য অস্তই যায় না। এতে তো সমারয়ের শ’তিনেক বাসিন্দার নিজেদের কোনও হাত নেই। সুতরাং তারা সময় কথাটিই আর মানতে নারাজ। তারা নিজেদের অঞ্চলকে সময়মুক্ত জোন বলে ঘোষণা দিতে চায়।

এই সময়মুক্ত জোন ক্যাম্পেইনের প্রধান কজেল ওভি ভেডিং বলছিলেন, তাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাসিন্দাদের একটু সুবিধা দেওয়া। নরওয়ের ব্রডকাস্টার এনআরকে’র সঙ্গে কথা হচ্ছিলো ভেডিংয়ের। তিনি বলছিলেন, গোটা বিশ্বে এই সময়ের কারণে মানুষ অনেক চাপে থাকে। তাদের সকল উদ্বেগও এই সময়কে ঘিরে। কিন্ত এখানে আমরা এমন ভাবে বাস করতে চাই, যেখানে সময় কোনও বিষয়ই থাকবে না। এখানকার বাসিন্দারা তাদের জীবনটি যেমন চাইবে যাপন করবে।

হ্যাঁ শিশুরা তরুণরা স্কুলে যাবে, বড়রা কাজে যাবে বটে, তবে তার জন্য কোনও সময়ের বাধ্যবাধকতা নেই। লেখাপড়া কিংবা কাজের নামে তাদের বাক্সবন্দি করে ফেলার কোনও মানেই হয় না, বলেন ভেডিং।

আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সবাই ২৪/৭ গোটা সময়টিই থাকবেন চাপমুক্ত। কেউ যদি ভোর কিংবা রাত চারটায় লনে ঘাঁস কাঁটতে চায়- তো কাটুক না। কিংবা চাইলে সন্ধ্যা সাতটায় উঠতে পারে ঘুম থেকেও।

বিজ্ঞাপন

একটি কথা জানিয়ে রাখি গত ১৮ মে সেই যে সূর্য উঠেছে সমারয়ে আর ডোবার নামটি নেই। এই যাত্রা টানা আকাশে সূর্য দেখা যাবে ২৬ জুলাই পর্যন্ত। ফলে এখানে এখন দিন আর রাতের মধ্যে তফাত কিছু নেই। কেবল ঘড়ির কাঁটাতেই তার অবস্থান।
সুতরাং এই সময় কথাটিই আর মানবে না সমারয়ের বাসিন্দারা। ভেডিং বলছিলেন, এই না মানার বিষয়টি অনেক আগেই শুরু হয়ে গেছে। এখন তারা কিছু আনুষ্ঠানিকতা সেরে নিচ্ছে মাত্র।

এখানে টানা দিনের আলো জ্বলছে। আমরা সে মতেই নিজেদের মতো কাজের প্রক্রিয়া বেছে নিয়েছি। ঘড়ির কাঁটায় যখন দুটো বাজে, তোমরা তাকে রাত দুটো বলতে পারো কিন্তু তাতে কি? এই রাতেই আমাদের শিশুরা হয় ফুটবল খেলবে, নয়তো ঘুমুবে। বড়রা ঘরে রং করবে, নয়তো লনে বসে ঝিমুবে, তরুণেরা যাবে সাঁতার কাঁটতে, তাতে কার কী, বলেন ভেডিং।

তবে সময়কে এই তুচ্ছ করে তোলার বিষয়টি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অনেকেরই নজর কেড়েছে। বিশেষ করে ভেডিং তাদের একটি আবেদনপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দিয়েছেন স্থানীয় এমপি কেন্ট গুডমুনসেনের কাছে। বিষয়টির বাস্তবিকতা ও চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে যাতে আলোচনা করা যায় সেটাই এর উদ্দেশ্য।

তবে আর্কটিকের উত্তরাংশের অন্য শহরগুলোতেও এখন কানাঘুষা চলছে। ফিনমার্ক ও নর্ডল্যান্ডতো এরই মধ্যে তাদের সমর্থন দিয়েই দিয়েছে। আর বলছে, তারাও এমনটাই চায়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন