বিজ্ঞাপন

গণ্ডগোল হলেই পুলিশ প্রত্যাহার

February 3, 2018 | 4:46 pm

উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: পুলিশের দায়িত্বরত এলাকায় গণ্ডগোল হলে তাৎক্ষণিক পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। এ ভীতি এখন পুলিশ কর্মকতাদের মনে জেঁকে বসেছে। পুলিশের নতুন আইজিপি দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই সকল সদস্যদের বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, কোথাও গণ্ডগোল হলেই দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাসহ সকল সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।

আইজিপির এ বার্তা পাওয়ার পর মাঠ পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা নড়েচড়ে বসেছে। ফলে নিজের অবস্থান শক্ত করতে নতুন ও পুরান মামলার আসামি গ্রেফতার শুরু করেছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে অন্তত ৫ শতাধিক বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের একটি ঊর্ধ্বতন সূত্র সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞাপন

পুলিশের অভিযোগ, গত ৩০ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা শেষে পুলিশের ওপর হামলা চালায় বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা পুলিশের রাইফেল ভাঙচুর করে। হামলা চালিয়ে প্রিজন ভ্যানের তালা ভেঙে দুই আসামি ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনার কারণে পুলিশের ওপর চাপ বাড়ে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপর মহলের চাপে ঘুমহারা পুলিশ। আসামি ধরার চেষ্টায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। কর্মকর্তা থেকে শুরু করে কনস্টেবল পর্ন্ত সবাই দিন-রাত পরিশ্রম করছে। ৩০ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্ন্ত ঢাকা মহানগর এলাকায় বিএনপির কমপক্ষে তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে অনেকে শীর্ষ পর্যায়ের নেতাও রয়েছেন।

ঢাকা মহনগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, পুলিশের উচ্চ মহল থেকে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিএনপির নেতারা পুলিশকে মারছে আর আপনারা বসে বসে ঘাস কাটছেন। এ রকম কথার পর কেউ বসে থাকে বলেন? এ জন্য ডিবি পুলিশের সব টিম মামলার আসামি ধরতে ব্যস্ত। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্ত করা হচ্ছে। এমন কি গ্রেফতার হওয়া নেতা-কর্মীরাই এ কাজে পুলিশকে সহযোগিতা করছে।

বিজ্ঞাপন

এ দিকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, এমন সময়ে নতুন আইজিপি দায়িত্ব নিয়েছেন, যে সময় খালেদার রায়কে কেন্দ্র করে সারাদেশে জনগণের মধ্যে একটা ভীতি কাজ করছে।

আইজিপি সারাদেশের পুলিশ কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিয়েছেন, যে কোনো ভাবেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে। সারাদেশে গত তিন দিনে প্রায় ৫ শ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মী। এর মধ্যে সাতক্ষীরা, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী, বগুড়া, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, মেহেরপুর, চাপাইনবাবগঞ্জ, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, বরিশাল, খুলনা, সিলেট, ময়মনসিংহ ও জামালপুর রয়েছে।

রংপুর অঞ্চল পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, চাকরি বাঁচাতে চাইলে নাশকতা রোধে বল প্রয়োগ ছাড়া উপায় নাই। কর্তৃপক্ষ যদি একটু ছাড় দিত, তাহলে আমরাও ছাড় দিতে পারতাম। যখন তখন প্রত্যাহারের প্রশ্ন রয়েছে তাই বিশৃঙ্খলা রোধে পুলিশ বলপ্রয়োগ করতে বাধ্য।

অন্যদিকে গত ৩০ জানুয়ারির পর সকল পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের সব ধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে পুলিশের একাধিক সদস্য সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ ইউজে/ এমএইচ/এমআই

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন