বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে চাপ দেবে চীন

July 4, 2019 | 4:24 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে চীন। মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারকে চাপ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) চীন সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে চীনের প্রধানমন্ত্রী লে কেকিয়াং এই প্রতিশ্রুতি দেন।

বৃহস্পতিবার সকালে চীনের গ্রেট হল অব পিপলে দ্বিপাক্ষিক এ বৈঠক শুরু হয়।

বৈঠকে চীনের প্রধানমন্ত্রী এই দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা দ্রুত সমাধানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করেন এবং এ সমস্যা দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে সমাধানে গুরুত্বারোপ করেন।

বিজ্ঞাপন

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক চীনের প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়ে চীনের বন্ধু। আমরা এর আগে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে দু’দেশকে সহায়তা করেছি এবং আমরা আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রাখবো। চীনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, দু’দেশকে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান বের করতে হবে।’

এ প্রসঙ্গে কেকিয়াং উল্লেখ করেন যে, চীন তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দু’বার মিয়ানমারে পাঠিয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনে আমরা আবাবও আমাদের মন্ত্রীকে মিয়ানমারে পাঠাবো।

শহীদুল হক আরও বলেন, ‘বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং রোহিঙ্গা সংকটের কারণে এই শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যতই সময় যাবে এই সমস্যা ততই বড় আকার ধারণ করবে এবং এর একমাত্র সমাধান হচ্ছে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হবে।’

কেন রোহিঙ্গারা ফিরে যেতে চায় না? উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারকে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের করার কিছুই নেই। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে দ্বিপক্ষীয় ব্যবস্থা করেছে। আমরা এ ব্যাপারে সব ধরনের প্রয়াস চালিয়েছে। কিন্তু, রোহিঙ্গারা ফেরত যেতে চায় না। কারণ, তারা শঙ্কিত যে তাদের ওপর আবারও নৃংশসতা চালানো হবে।’

এই শঙ্কা দূর করতে এবং রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদে, মর্যাদা ও নিজস্ব পরিচয়ে নিজ দেশে ফেরত যেতে পারে সে জন্য অনুকূল পরিবেশ গড়ে তুলতে চীনের ভূমিকা পালনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘তাদের জমি-সম্পত্তির ওপর অবশ্যই তাদের অধিকার থাকতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে চীনের প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, তার দেশ এটা বুঝতে পেরেছে যে রোহিঙ্গা সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। চীনের প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক সাড়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

এর আগে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেট হল অব পিপলে পৌঁছলে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।

গ্রেট হল পিপলে পৌঁছার পরই চীনের প্রধানমন্ত্রী কেকিয়াং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান। কূটনীতিক রীতি অনুযায়ী দুই প্রধানমন্ত্রী নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের সদস্যদের একে অন্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

পরে চীনের তিন বাহিনীর সদস্যদের একটি সুসজ্জিত চৌকস দল প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। চীনের প্রধানমন্ত্রীকে সঙ্গে করে শেখ হাসিনা একটি সুসজ্জিত মঞ্চ থেকে সালাম গ্রহণ করেন এবং পরে প্যারেড পরিদর্শন করেন।

গত ১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঁচদিনের সরকারি সফরে চীনে যান।

সারাবাংলা/এনআর/একে

আরও পড়ুন

‘রোহিঙ্গারা ফিরে না গেলে স্থিতিশীলতা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে’
রোহিঙ্গা শিশুদের স্বপ্নের রঙিন ক্যানভাস
‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চীন গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে’
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চীনের সমর্থন চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ অনেক কিছুই গোপন করেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আপত্তি ওঠা রোহিঙ্গা ইস্যুতে জুনের শেষে বৈঠক চায় ঢাকা

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন