বিজ্ঞাপন

একে ২২ জব্দ: বড় হামলার লক্ষ্যে ভারি অস্ত্র জমাচ্ছে জামায়াত

July 9, 2019 | 11:13 pm

উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বড় ধরনের হামলা চালানোর উদ্দেশ্যে জামায়াত-শিবির ভারি অস্ত্র সংগ্রহ করছে বলে নিশ্চিত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে অভিযান শুরু করেছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি)।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি সিটিটিসি‘র বিশেষ দল রাজধানীর ওয়ারী এলাকা থেকে একটি অত্যাধুনিক আধা স্বয়ংক্রিয় রাইফেল ‘একে ২২’ জব্দ করে। সূত্র জানাচ্ছে, জামায়াত-শিবিরের বিশেষ বাহিনীর জন্য অস্ত্রটি দেশে আনা হয়েছিল। ওই অস্ত্র উদ্ধারের পরেই বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার জাহাঙ্গীর আলম সারাবাংলাকে তথ্য সত্যতা নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, গত ৩০ জুন একে ২২ রাইফেলটি হাত বদল হবে এমন তথ্য পেয়েছিলাম আমরা। সে অনুযায়ী ওয়ারীর রাজধানী সুপার মার্কেট এলাকায় অভিযান চালায় সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ। অস্ত্রটি হাত বদলের সময় দু’জনকে আটক করা হয়। এরা হলেন, সাইদুল ইসলাম মজুমদার (৩০)। তার বাড়ি কুমিল্লার শোভাপুর মধ্যপাড়া এলাকায়। সাইদুলের বাবার নাম রফিকুল ইসলাম মজুমদার। অন্যজন হলেন একই এলাকার সুরুজ মিয়ার ছেলে কামাল হোসেন (৩৫)।

বিজ্ঞাপন

সিটিটিসি সূত্র জানিয়েছে, আটক দু’জন জামায়াত-বিএনপির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। তাদের দায়িত্ব ছিল অস্ত্র সরবরাহ করা।

জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ‘আধা স্বয়ংক্রিয় যে রাইফেলটি জব্দ করা হয়েছে, এই ধরনের অস্ত্র তিন বছর আগে হলি আর্টিজান হামলায় জঙ্গিরা ব্যবহার করেছিল।’

সিটিটিসি’র তদন্তে উঠে এসেছে, সাইদুল ও কামালের দায়িত্ব ছিল জামায়াতের দুই নেতার কাছে একে ২২ রাইফেলটি পৌঁছে দেওয়া। তাদের বাড়িও কুমিল্লা শহরে। এরা হলেন, শোভাপুরের লিলু মিয়ার ছেলে মো. হাসিব মিয়া ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী গোলাম কিবরিয়া। তবে এখনো এই দুই নেতার অবস্থা জানতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তারা।

বিজ্ঞাপন

মো. হাসিব কুমিল্লা-১২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জামায়াত নেতা সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরের দেহরক্ষী ছিলেন। তিনি ছাত্র শিবিরের সভাপতিও ছিলেন। অগ্নিসংযোগ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা এবং নির্বাচিত সরকার পতনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ২০১৩ সালের ২ জানুয়ারি হাসিবকে আটক করেছিল র‌্যাব। এর আগে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদে চাঁদাবাজি, লুটপাট ও নির্যাতনের অভিযোগে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনীও তাকে আটক করেছিল। এসব অভিযোগে বিভিন্ন সময় তার বিরুদ্ধে অন্তত সাতটি মামলা হয়।

সূত্র জানায়, বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণে তার এক হাতের পাঁচটি আঙ্গুলই উড়ে যায়। এরপর তিনি দু’জন দেহরক্ষী নিয়োগ করেন এবং তাদের মোটরসাইকেলেই চলাফেরা করতেন।

সাইদুল ও কামাল জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে তারা দু’টি একে ২২ রাইফেল জামায়াত নেতাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন।

তদন্তে আরও উঠে আসে, অস্ত্র হাত বদলের সময় চট্টগ্রামের চকবাজার শোলক বোহর এলাকার বাসিন্দা সাদেক আহমেদ, ডাবলমুরিং এলাকার জালাল কমিশনার লেনের বাবুল উদ্দিনও উপস্থিত ছিলেন। তবে সিটিটিসির উপস্থিতি টের পেয়ে কৌশলে তারা পালিয়ে যান। সাদেক আহমেদ ও বাবুল উদ্দিন মূলত অস্ত্রের ডিলার- এমন প্রমাণও এসেছে সিটিটিসি’র হাতে।

বিজ্ঞাপন

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সূত্র জানাচ্ছে, জামায়াত-শিবির বড় ধরনের হামলা চালানোর উদ্দেশ্যে শক্তি সঞ্চয় এবং অস্ত্র মজুদ শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে এডিসি জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ‘বড় কোনো পরিকল্পনা ছাড়া এই ধরনের ভারি অস্ত্র মজুদ করার কথা নয়। তদন্ত চলছে, জড়িত সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’

সারাবাংলা/এটি

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন