বিজ্ঞাপন

সৃষ্টিশীল যাত্রার প্রথম পাঠ হোক পাঠশালায়

July 12, 2019 | 11:00 am

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ক্যামেরায় ছবি তুলতে হলে জানতে হয় আলোকচিত্রের কৌশল, তেমনি চলচ্চিত্র নির্মাণ করার আগে জানা আবশ্যক চলচ্চিত্রের টুকিটাকি। আর এসব সৃষ্টিশীল কাজের বিভিন্ন কৌশল শেখার জন্য উপযুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ‘পাঠশালা’। ‘দ্য সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট’।

বিজ্ঞাপন

মূলত আলোকচিত্রপ্রেমীদের নিয়েই যাত্রা শুরু হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটির। লক্ষ্য ছিলো, যারা ছবি তুলতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য যুৎসই একটা প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করা হবে। সেখানে আলোকচিত্রীরা আসবেন, প্রতিনিয়ত শিখবেন আর শেখাবেন। প্রতিষ্ঠানটির সেই লক্ষ্যটি পূরণ হয়েছে অনেকাংশে। তাই গত বছর থেকে ডিপার্টমেন্ট অব ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশনের আওতায় চলচ্চিত্রের বিভিন্ন খুঁটিনাটি শেখাতে প্রতিষ্ঠানটি যুক্ত করেছে বিশেষ প্রোগ্রাম। চলচ্চিত্রের খুঁটিনাটি পাঠের এই প্রোগ্রামটির নাম ‘পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন’। আর এরপরই প্রতিষ্ঠানটি বদলে ফেলেছে তাদের পুরোনো নামটি, কারণ ফটোগ্রাফির গণ্ডি পেরিয়ে প্রতিষ্ঠানটি যুক্ত করেছে অন্যান্য মিডিয়া অনুষঙ্গও। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফিল্ম এন্ড টেলিভিশনের প্রোগ্রামটি পরিচালনা করছে পাঠশালা। আর চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মঞ্চ ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব খ ম হারূন। পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি’র দায়িত্বে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। পরিচালনা পর্ষদে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডীন ড. সাদেকা হালিম, জার্নালিজম বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হকসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মনোনীত আরো কয়েকজন বিশিষ্ট অধ্যাপক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব।

ছয় মাস করে তিন সেমিস্টারে ভাগ করা দেড় বছর মেয়াদী এই প্রোগ্রামে শেখানো হয় চলচ্চিত্রের বিভিন্ন খুঁটিনাটি দিক। সাউন্ড অ্যান্ড মিউজিক, স্ক্রিপ্ট অ্যান্ড স্ক্রিনপ্লে, ডিরেকশন, সেট ডিজাইন, এক্টিং, ক্যামেরা এন্ড লাইট, ব্রডকাস্ট জার্নালিজম এন্ড টিভি রিপোর্টিং এর মতো বিভিন্ন বিষয়ের খুঁটিনাটি ও টুকিটাকি শিখতে পারবে একজন শিক্ষার্থী।

বিজ্ঞাপন

আধুনিক সাউন্ডপ্রুফ ল্যাব, এডিটিং প্যানেল, অত্যাধুনিক ক্যামেরা, রেকর্ডার, ড্রোন, কালার ল্যাব, মুভি হল ব্যবহার করে সব ধরণের প্রোগ্রাম পরিচালনা করে থাকে ডিপার্টমেন্ট অব ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন। এই প্রোগ্রামের পুরো কোর্সগুলো শেষ করতে একজন শিক্ষার্থীকে খরচ করতে হবে প্রায় এক লাখ ষাট হাজার টাকা। পাশাপাশি যুক্ত হতে পারে আনুষঙ্গিক কিছু খরচও। তবে পেশাদারভাবে চলচ্চিত্র নির্মাণের সাথে যুক্ত শিক্ষার্থীদের বিশেষ আবেদনের প্রেক্ষিতে ছাড়ের ব্যবস্থাও করে দেয় পাঠশালা।

এ বছরও প্রতিষ্ঠানটিতে চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কলাকৌশল শেখাতে শুরু করছে ‘পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন’ প্রোগ্রামটি। পত্রিকা ও অনলাইন থেকে আগ্রহীরা খুঁজে নিতে পারবে ভর্তির বিজ্ঞাপন। আগামী ৩১ জুলাই এর মধ্যে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন প্রোগ্রামটিতে যুক্ত হতে , আর আবেদনের পর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগস্টের দুই তারিখে।

বিজ্ঞাপন

ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে নির্বাচিত মাত্র ২৫ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে শুরু হয় এই প্রোগ্রাম। ভর্তির যোগ্যতা হচ্ছে এসএসসি, এইচএসসি এবং স্নাতক পর্যায়ে সর্বনিম্ন ২.৫ জিপিএ। পাশাপাশি একাডেমিক সনদের ফটোকপি, জীবনবৃত্তান্তসহ আবেদন করার পরই প্রাথমিক লিখিত পরীক্ষা আর চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন শিক্ষার্থীরা। ডিপার্টমেন্ট অব ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশনের অফিস থেকে বেলা ১১ টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে সংগ্রহ করা যাবে ভর্তি ফরম।

প্রোগ্রামটিতে প্রতি সেমিস্টার শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়া হয়। তাছাড়া প্রোগ্রাম চলাকালীন সময়ে নেয়া হয় বিভিন্ন কর্মশালা ও বিশেষ এসাইনমেন্ট। ফলে শিক্ষার্থীরা হাতে-কলমে শিখতে পারে চলচ্চিত্র নির্মাণের বিভিন্ন কৌশল। যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের স্বনামধন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপের সুযোগও করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি।

বিজ্ঞাপন

চলচ্চিত্র নির্মাণের উপর বিশেষায়িত এই কোর্সটি ছাড়াও যদি কেউ কেবল শখের বসে ছবি তোলা শিখতে চায়, তাদের জন্য রয়েছে চার সপ্তাহের বেসিক ফটোগ্রাফি কোর্স। আরও রয়েছে ছবি তোলার বিভিন্ন কৌশল নিয়ে আট সপ্তাহের ফাউন্ডেশন কোর্স। আর আলোকচিত্রীকে যারা পেশা হিসেবে নিতে চায়, তাদের জন্য পাঠশালার আয়োজন এক বছরের প্রোগ্রাম ইন ফটোগ্রাফি। তবে এখানেও রয়েছে শিক্ষাগত যোগ্যতার বাধ্যবাধকতা। তাছাড়া পাঠশালায় দুই ও তিন বছরের অ্যাডভান্সড ও স্নাতক ফটোগ্রাফি কোর্সটিও চাইলে করে নিতে পারবে যে কেউ। পাশপাশি রয়েছে ছয় সপ্তাহের ভিডিওগ্রাফির বেসিক কোর্স।

দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ফটোগ্রাফি ও ফিল্ম ম্যাকিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে পাঠশালা। প্রতি দুই বছর পরপর প্রতিষ্ঠানটি আয়োজন করছে ছবিমেলার, যেখানে ঢুঁ মারছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নামকরা সব আলোকচিত্রীরা। আর আমাদের দেশে সৃষ্টিশীল কিছু করার স্বপ্ন নিয়ে যারা এগিয়ে যেতে চাইছে, তাদের সেই লক্ষ্য পূরণে সহযোগিতা করছে পাঠশালা।

সারাবাংলা/ওএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন