বিজ্ঞাপন

ডিসিদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজের নির্দেশ

July 14, 2019 | 1:04 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জেলা প্রশাসকদের তৃণমূল পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করার নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখতে হবে। সেখানে নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কারণ আমরা নির্বাচিত হয়ে আসি, জনগণের কাছে অনেক ওয়াদা দিতে হয় তাদের উন্নয়নের জন্য। তাই এখানে একটা সমন্বিত প্রচেষ্টা একান্তভাবে দরকার।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৪ জুলাই) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে এ নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। জেলা প্রশাসকদের বিভিন্ন বিষয়ে ৩০টি নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

শুরু হচ্ছে পাঁচ দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলন

প্রধানমন্ত্রী জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের একটা প্রবণতা আছে, যে যেখান থেকে খুশি অমনি একটা রাস্তা চেয়ে বসে থাকে। আবার যেখানে প্রয়োজন নেই। কোনো খাল বা নদীর ওপর একের পর এক ব্রিজ বানানোর প্রস্তাব নিয়ে আসে বা যেখানে প্রয়োজন নেই, অপ্রয়োজনীয় সেখানে একটা বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব নিয়ে আসে, এক্ষত্রে মনে হয়, নির্মাণটাই সব থেকে বড়।’

বিজ্ঞাপন

‘এই ক্ষেত্রে একটা মাস্টারপ্ল্যান থাকা দরকার আমাদের। যদিও এখন অবকাঠামো উঠে গেছে, সেজন্য হয়তো সম্ভব হয় না। তারপরও এখনো ভবিষ্যতে যে উন্নয়ন হবে সব ক্ষেত্রে জেলা উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত মাস্টারপ্ল্যান উন্নয়ন করে আমাদের যেমন ফসলের ক্ষেত রক্ষা করতে হবে, বন রক্ষা করতে হবে। আবার রাস্তাঘাটও করতে হবে মানুষের চলাফেরার জন্য।’ কাজেই সেটা পরিকল্পিতভাবে করার ওপর জোর দিতে নির্দেশনা দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে সেখানে রাস্তা, ব্রিজ করার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এত বেশি রাস্তা আমাদের দেশে এখন, এর পরবর্তীতে এই রাস্তা সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা থাকে না। কিন্তু করবার জন্য সবাই পাগল হয়ে যায়, এটা ঠিক। এই রকম কারও ইচ্ছা হলেই করতে হবে, সেটা না। এটা পরিকল্পিতভাবে করতে হবে।’ এই বিষয়টার প্রতি বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

ডিসিদের তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন ও বিকাশে বলিষ্ট ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দৈনন্দিন যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান ব্যবহারে জেলার সাধারণ জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আমরা কিন্তু ইতোমধ্যে প্রায় ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছিলাম, আর এখন তো জেলা উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত হচ্ছে। আমাদের পোস্ট অফিসগুলোও উন্নত করে দিচ্ছি। এখন অনলাইনে কেনা-বেচা হচ্ছে। সেখানে কিছু প্রাইভেট সেক্টর তারা এই মালগুলি সরবরাহ করে এবং অতি উচ্চহারে টাকা নেয়। সেজন্য আমাদের পোস্টগুলিকেও আমরা উন্নত করা এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে তারাও যেন অনলাইনে ক্রয়-বিক্রয়ে সহযোগিতা করতে পারে, সে ব্যাপারে তাদের যানবাহন তৈরি করা থেকে সবগুলি করা যায়, আমরা সেই পদক্ষেপটা নিচ্ছি। এই বিষয়টাও আমাদের দেখতে হবে।’

বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য যেতে চাইলে কেউ যেন দালালদের খপ্পরে না পড়ে সে ব্যাপারে ডিসিদের বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রবাসে যারা যেতে চায় কর্মসংস্থানের জন্য, আমাদের ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে রেজিস্ট্রেশন করে তারা যেন যেতে পারে। কোনমতে তারা যেন দালালদের খপ্পরে পড়ে নিজের জীবনকে যেন একেবারে শেষ করে না দেয়, সেদিকে বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।’

তৃণমূল পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমরা কিন্তু আমাদের জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচন করে দিয়েছি, উপজেলা আছে, ইউনিয়ন পরিষদ আছে; এদের একটা সমন্বয় করা দরকার। আর আমি মনে করি, আমাদের বিভিন্ন জেলার চাহিদা ভিন্ন, ভৌগোলিক অবস্থান ভিন্ন ভিন্ন, জনসংখ্যার তারতম্য আছে এবং আবার কোনটা অনেক বড় জেলা, কোনটা ছোট জেলা। কোন জেলা আছে মাত্র দুইটা উপজেলা নিয়ে। কোন জেলা আছে ১৩টা উপজেলা নিয়ে। তাই জেলার অবস্থানটা দেখে, এর বিষয়গুলি দেখে আমাদের কিন্তু পরিকল্পনা নেওয়া দরকার। বাজেটও সেভাবে করা দরকার। আগামীতে আমার একটা লক্ষ্য আছে যে, আমরা জেলাভিত্তিক উন্নয়নের বাজেট কিভাবে করা যেতে পারে, সেই পরিকল্পনাটা নেওয়া। সেই বিষয়ে আপনারা এখন থেকে কাজ শুরু করতে পারেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, তৃণমূল পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখতে হবে। সেখানে নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কারণ আমরা নির্বাচিত হয়ে আসি, জনগণের কাছে অনেক ওয়াদা দিতে হয় তাদের উন্নয়নের জন্য। কাজেই এখানে একটা সমন্বিত প্রচেষ্টা একান্তভাবে দরকার।’

বিজ্ঞাপন

শিক্ষার সকল স্তরে নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় ত্যাগের হ্রাস এবং ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও জানান তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসাইন, শেরপুর জেলা প্রশাসক আনারকলি মাহবুব, টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান।

সারাবাংলা/এনআর/এমআই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন