বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পাওয়া আজমত আলীকে দ্রুত মুক্তির নির্দেশ

July 15, 2019 | 9:43 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাষ্ট্রপতির ক্ষমার পরও প্রায় ১০ বছর ধরে কারাগারে থাকা জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দি এলাকার আজমত আলীকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

বিজ্ঞাপন

যাবজ্জীবন দণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আজমত আলীর করা রিভিউ (পুনঃবিবেচনা) আবেদন নিষ্পত্তি করে আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। সোমবার (১৫ জুলাই) এ সংক্রান্ত আদেশের অনুলিপি প্রকাশ হয়েছে।

আপিল বিভাগ আদেশে বলেছেন, রাষ্ট্রপতির ক্ষমার পরও তাকে আবার জেলে পাঠানো অযৌক্তিক ও অপ্রত্যাশিত। আদালত তাকে তাৎক্ষণিক মুক্তি দিতে বিবাদীদের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দি এলাকার পাখিমারা গ্রামের ইজ্জত উল্লা সর্দারের ছেলে আজমত আলী। টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ঘোড়ামারা এলাকার ভেঙ্গুলা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন তিনি। ১৯৮৭ সালের ১ এপ্রিল জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এলাকার কলিম উদ্দিনের ছেলে রেজাউল করিম নিহত হন। এ ঘটনায় আজমত আলীকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়।

বিজ্ঞাপন

এ মামলায় ১৯৮৯ সালের ৮ মার্চ জামালপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালত তাকে যাবজ্জীবন সাজা দেন। বিচারিক আদালতের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আজমত আলী। একই সময় তিনি রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমার জন্যও আবেদন করেন। হাইকোর্টে আপিল আবেদন বিচারাধীন অবস্থায় রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় ১৯৯৬ সালের ২১ আগস্ট জামালপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। এদিকে ২০০৫ সালের ২ মার্চ হাইকোর্টের রায়েও তিনি খালাস পান।

রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিষয়টি জানা না থাকায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এর ফলে ২০০৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আসামি আজমত আলীকে নিম্ন আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন। এরপর সে হাজির না হওয়ায় আদালতের আদেশে ২০০৯ সালের ২৯ অক্টোবর গ্রামের বাড়ি থেকে আজমতকে গ্রেফতার করে নিম্ন আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। সেই থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

এদিকে আপিলের শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১১ আগস্ট নিম্ন আদালতের রায় (যাবজ্জীবন) ও আদেশ বহাল রেখে আদেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

এ ঘটনার বিষয়ে আইনজীবীরা জানান, আজমত আলী মুক্তির পর ওই লিভ টু আপিলের বিষয়ে আর খোঁজখবর রাখেননি। ফলে বাদীপক্ষ রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিষয়টি জানায়নি। অন্য কেউই আর রাষ্ট্রপতির আদেশের বিষয়টি উল্লেখ করেনি যার ফলে তাকে এ অতিরিক্ত জেল খাটতে হয়েছে।

দীর্ঘসময় পর এ মামলার রিভিউয়ের বিষয়টি কীভাবে এলো জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কার্যালয়ের সমন্বয়ক রিপন পৌ স্কু সারাবাংলাকে জানান, গত বছর ১৪ অক্টোবর আজমত আলীর মেয়ে বিউটি খাতুন তার বাবার বিষয়ে আইনি সহায়তার জন্য আমাদের এখানে আসেন। এরপর তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা সাপেক্ষে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান রিভিউ করার নির্দেশ দেন। তার পরিপ্রেক্ষিতেই চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করি। আদালত শুনানি নিয়ে গত ২৬ জুন রিভিউটি নিষ্পত্তি করে দেন।

আজকে আমরা রায়ের কপি পেয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে অফিসিয়ালি যোগাযোগ করেছি এবং বিশেষ ডাকযোগে রায়ের কপিটি আমরা সংশ্লিষ্টদের পাঠিয়ে দিয়েছে। আশা করছি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রায়ের কপি তাদের কাছে পৌঁছে যাবে। রায়ের কপি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে বলেও তিনি জানান।

আদালতে আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেডকে/একে

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন