বিজ্ঞাপন

পাহাড় কেটে বসতি, লোকালয়ে হরিণ

July 16, 2019 | 2:32 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ এলাকায় একটি পাহাড় থেকে লোকালয়ে এসেছিল একটি মায়া হরিণ। স্থানীয়রা সেটি আটকে রাখে। খবর পেয়ে পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তারা গিয়ে সেটি উদ্ধার করেন। তারা জানিয়েছেন, পাহাড়ের গাছপালা কেটে বসতি গড়ে তোলায় খাদ্যাভাবে পাহাড় থেকে হারিয়ে যাচ্ছে মায়া হরিণ। এর মধ্যে একটি এসে পড়েছিল লোকালয়ে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর আকবর শাহ মোড় থেকে মায়া হরিণটি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পরিচালক (কারিগরি) মুক্তাদির হাসান।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পরিবেশ অধিদফতরের এই কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, সোমবার গভীর রাতে হরিণটি ফয়’স লেকের উত্তরদিকে পাহাড়ের নিচে একটি কলোনির বাসায় ঢুকে পড়ে। ওই বাসার লোকজনসহ স্থানীয়রা সেটিকে আটকাতে গেলে স্বভাব অনুযায়ী মায়া হরিণটি লাফালাফি শুরু করে। হরিণটি দুর্বল হয়ে যায় এবং শিং দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। তখন হরিণটিকে লোকজন বস্তায় ভরে রাখে।

‘সকালে ওই এলাকার লোকজন আমাদের একটি হরিণ ধরা হয়েছে বলে খবর দেয়। আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাবার জন্য রওয়ানা দেই। স্থানীয়রা আকবর শাহ মোড়ে এসে সেটি আমাদের কাছে দেন। হরিণটি অসুস্থ থাকায় সেটিকে আমরা চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় নিয়ে যায়।’ বলেন মুক্তাদির হাসান।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর ডা.শাহাদাৎ হোসেন শুভ সারাবাংলাকে বলেন, ‘হরিণটির প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। এজন্য সেটি দুর্বল ছিল। আমরা পর্যাপ্ত চিকিৎসা দিয়েছি। সুস্থ হয়ে হাঁটাচলার উপযোগী হওয়ার পর সেটিকে আবার পরিবেশ অধিদফতরের কাছে দিয়েছি।’

পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষ থেকে হরিণটিকে চট্টগ্রামের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। হরিণটিকে ডুলাহাজরা সাফারি পার্কে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বন্যপ্রাণী গবেষকদের মতে, মায়া হরিণ বিশ্বের ক্ষুদ্রতম হরিণদের মধ্যে অন্যতম। জলাশয়ের আশপাশের গভীর বনাঞ্চলে এদের বসবাস। বাংলাদেশে সুন্দরবন, সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনাঞ্চল ছিল এদের অভয়ারণ্য। তবে অব্যাহত শিকার ও বনাঞ্চল ধ্বংসের কারণে সিলেট ও চট্টগ্রাম থেকে মায়া হরিণ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে থাকলেও সংখ্যায় অনেক কম। দেশের বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে মায়া হরিণ একটি। ঘাস, লতাপাতা এদের প্রধান খাবার।

বিজ্ঞাপন

পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তা মুক্তাদির হাসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আকবর শাহ এলাকার পাহাড়গুলোতে আগে নিয়মিত মায়া হরিণ দেখা যেত। স্থানীয়রা বলেছেন, এখনো ২০-২২টি হরিণ আছে। কিন্তু সেখানে পাহাড় কেটে ও বন উজাড় করে ঘরবাড়ি বানানো হচ্ছে। এতে মায়া হরিণ একদিকে আবাসস্থল হারাচ্ছে, খাদ্যের অভাবও তৈরি হয়েছে। ফলে সেগুলো এখন প্রায়ই লোকালয়ে চলে আসছে এবং মানুষের হাতে ধরা পড়ছে।’

সারাবাংলা/আরডি/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন