বিজ্ঞাপন

ছালামের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখার দাবি জাসদ নেতার

July 16, 2019 | 9:05 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: গত ১০ বছরে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) যত প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সবগুলোতে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করেছন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) কেন্দ্রীয় নেতা ইন্দুনন্দন দত্ত।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান মো. আবদুচ ছালাম ও তার স্বজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যাচাই করলে এই দুর্নীতির প্রমাণ মিলবে।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে ‘চট্টগ্রাম নাগরিক উদ্যোগ’ আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি এই দাবি জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক দল জাসদের (আম্বিয়া) কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইন্দুনন্দন দত্ত আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামে গত ১০ বছরে সিডিএ যেসব প্রকল্প গ্রহণ করেছে, সবগুলোতে দুর্নীতি হয়েছে। সিডিএ’র সাবেক প্রধান ও তার স্বজনদের ব্যাংক আ্যাকাউন্ট চেক করা দরকার। তাহলে অনেক কিছু বের হয়ে আসবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামকে অপরিকল্পিত নগরে পরিণত করা হয়েছে। খাল দখল করে ঘরবাড়ি তৈরি করা হয়েছে। কারা এসবের অনুমোদন দিয়েছে, কেন দিয়েছে তা খুঁজে বের করতে হবে। সর্ষের মধ্যে ভূত লুকিয়ে আছে।’

সদ্যবিদায়ী সিডিএ’র চেয়ারম্যান মো. আবদুচ ছালাম চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ব্যবসায়ী ছালামকে সিডিএ’র চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। সিডিএ’র ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া ছালাম টানা ১০ বছর দায়িত্ব পালন করে গত জুনে বিদায় নেন। জলাবদ্ধতা নিরসনসহ চট্টগ্রামের উন্নয়নে বেশ ক’টি মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছে সিডিএ, যার কৃতিত্ব দাবি করেন ছালাম। সেসব প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশেষজ্ঞ মতামত না নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

গুঞ্জন রয়েছে, ২০২০ সালে অনুষ্ঠেয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ছালাম মেয়র পদে মনোনয়ন চাইবেন। এরপর থেকে ছালামের বিরুদ্ধে সরব মহানগর আওয়ামী লীগের একাংশ। সাম্প্রতিক বর্ষণে চট্টগ্রাম নগরীতে জলাবদ্ধতা নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়েছেন ছালাম।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম নাগরিক উদ্যোগের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহসভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী। তিনি চট্টগ্রামের চলমান মেগাপ্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে বিশেষ সেল গঠনের দাবি জানিয়েছেন।

সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম নগরীর আউটার রিং রোড প্রকল্প সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর, মেট্রোরেল চালু, প্রকল্প পাসে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু, কালুরঘাটে নতুন রেলসেতু নির্মাণ, প্রকল্প পর্যবেক্ষণে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, উন্নয়নে মেয়র ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে সমন্বয়ক করার দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে নয়-ছয় করা হচ্ছে। মানুষের মাঝে সরকারের প্রতি বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে। এই জন্য প্রধানমন্ত্রীর দফতরের বিশেষ তদারকি জরুরি প্রয়োজন।’

সমাবেশে নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সরকারি বরাদ্দের যথাযথ ব্যবহার চাই। উদ্বোধনের আগেই আউটার রিং রোডের ওয়াকওয়ে ধসে পড়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। কোনো ব্যক্তি বিশেষ বা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের জন্য সরকারের অর্জন ম্লান করে দেওয়ার সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না।’

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনকে প্রধান করে উন্নয়ন তদারকি কমিটি গঠনের আহ্বান জানান।

বঙ্গবন্ধু সাংস্কুতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলমের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন পরিবেশবিদ অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, নারীনেত্রী নূরজাহান খান, অধ্যক্ষ হাসিনা জাকারিয়া বেলা, ১৪ দলের নেতা মিটুল দাশগুপ্ত, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সুমন দেবনাথ।

সারাবাংলা/আরডি/এটি

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন