বিজ্ঞাপন

‘একসময় বাংলাদেশকে ভিন্ন চোখে দেখা হতো, যা আমাকে কষ্ট দিতো’

July 17, 2019 | 9:52 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বে একসময় বাংলাদেশ বললে ভিন্ন চোখে দেখা হতো, যা আমাকে কষ্ট দিতো। আজকে আর সেই দিন নেই। এখন বাংলাদেশ শুনলে সবাই বলে, বিশ্বের বিস্ময় এবং উন্নয়নের রোল মডেল।

বিজ্ঞাপন

বুধববার (১৭ জুলাই) দুপুরে গণভবনে ‘সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ ২০১৯’-এর পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে একই স্থানে এইচ এস সি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি।

ট্রেন চলবে বিদ্যুতে, ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা কারও মুখাপেক্ষী হয়ে নয়, বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই, সম্মানজনকভাবে চলতে চাই। আমরা হচ্ছি বিজয়ী জাতি। তাই বিজয়ী জাতি হিসাবেই বিশ্ব দরবারে সব সময় মাথা উঁচু করে চলবো।’

বিজ্ঞাপন

২০১৩ সাল থেকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সারাদেশের প্রতিযোগীদের মাঝ থেকে সৃজনশীল মেধা অন্বেষণে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীদদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তিনি। এবারও ১২ জন বিজয়ীর হাতে এক লাখ টাকার চেক, মেডেল ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন শেখ হাসিনা।

মাতৃভাষা আন্দোলন থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘এই বাংলাদেশটাকে আমরা গড়ে তুলতে চাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে। যেখানে শিক্ষার্থীরা হচ্ছে এক ধরনের আলো। যা মানুষকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দেয়। সেই আলো থেকে যেন আমাদের কোনো ছেলেমেয়ে বঞ্চিত না হয়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

‘বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। এখন বিজ্ঞানের যুগ কাজেই বিজ্ঞান চর্চা, বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা ছাড়া কোনো কিছুই অর্জন করা যাবে না। আজকে বাংলাদেশ যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে সেটাও কিন্তু আমাদের গবেষণার ফল।’ এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আরেকটি জিনিসের তীব্র অভাব ছিল, সেটা হল আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি আর এই মুক্তির জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে এবং এই মুক্তিযুদ্ধে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। কিন্তু এই দেশের ইতিহাস, লাখো শহীদের ইতিহাস, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের ইতিহাস, এই ইতিহাস থেকে এক সময় বাঙালি জাতি সম্পূর্ণ বঞ্চিত ছিল। একটা বিকৃত ইতিহাস শেখানো হতো। আর বিকৃত ইতিহাস বা শিক্ষা দিয়ে যার শিক্ষা হয় তার জীবনটাও মিথ্যা হয়ে যায়, সে সত্যকে উপলব্ধি করতে পারে না, উৎকর্ষতা লাভ করতে পারে না। সে জন্য আমরা এই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে এই মেধা অন্বেষণের একটা উদ্যোগ নিলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ছেলে-মেয়েদের ভিতর চমৎকার একটা সৃজনশীলতা আছে, হয়ত আমরা আজকে চেষ্টা করে যাচ্ছি বা গড়ে তুলে দিয়ে যাচ্ছি। আর আজকে যারা পুরষ্কার পেয়েছ, তোমরাই কিন্তু আমাদের ভবিষ্যৎ।’

২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করার প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই দেশটাকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি আমরা সূদুরপ্রসারী পরিকল্পনাও নিয়েছি। আমাদেরকে জাতিসংঘ ঘোষিত সাসটেইনবেল ডেভলপমেন্ট গোল অর্জন করতে হবে। যেগুলো আমাদের দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যেন আমরা নিজেদের দেশটাকে গড়ে তুলতে পারি।’

আমরা কারও মুখাপেক্ষী হয়ে না, বিশ্বে মাথাউঁচু করে দাঁড়াতে চাই, বিশ্বে সম্মানজনকভাবে চলতে চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশটাকে নিয়ে একসময় অনেক রকম অপপ্রচার ছিল এবং এটাও ঠিক এই জাতিকে একটা ভিক্ষুকের জাতি করেই রাখতে চেয়েছিল। আমরা সেখানে থাকতে চাই না। আমরা তার থেকে উত্তরণ ঘটাতে চাই। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ নিচ্ছি। দীর্ঘমেয়াদী কর্মসূচি নিচ্ছি। আমরা একটা লক্ষ্য স্থির করেছি, ২০৪১ সালের মধ্যে এই দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ সব থেকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে গড়ে উঠবে। ২০৭১ সালে স্বাধীনতার শতবর্ষ পালন হবে। তখন আজকের তোমরাই উদযাপন করতে পারবে। আমরা তো আর তখন থাকব না। মরে ফসিলটসিল হয়ে যাব।’

বিজ্ঞাপন

‘প্রজম্মের পর প্রজন্ম যেন একটা স্বাধীন জাতি হিসাবে নিজেরদেরকে মর্যাদ নিয়ে চলার মানসিক শক্তি পায় এবং তাদের মেধা বিকাশের সুযোগ হয় এবং সৃজনশীলতা তাদের মাঝে গড়ে ওঠে। সেই দিকে দৃষ্টি রেখেই কিন্তু আমাদের সকল কার্যক্রমগুলো নিচ্ছি। এই জাতি মুক্তিযুদ্ধ করেছে, একসময় আমাদের বলা হত, বাঙালি জাতি আবার কি যুদ্ধ করবে এবং যারা বলত তাদেরকে আমরা পরাজিত করেছি। আমরা হচ্ছি বিজয়ী জাতি। কাজেই সেই বিজয়ী জাতি হিসাবে বিশ্ব দরবারে সবসময় আমরা মাথা উচু করে চলবো’— বলেন শেখ হাসিনা।

আর আগামী দিনে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে তোমরাই হবে সোনার ছেলেমেয়ে বলে অভিহিত করেন শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনআর/এমআই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন