বিজ্ঞাপন

ঔষধ প্রশাসনের ২ কর্মকর্তার চাকরিতে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা

July 18, 2019 | 10:14 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অদক্ষতা ও অযোগ্যতার দায় থাকায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া তৎকালীন ‘ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর’ এর সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম ও উপ-পরিচালক আলতাফ হোসেনের চাকরির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিজ্ঞাপন

একই সঙ্গে বরখাস্ত হওয়া ওই দুই কর্মকর্তাকে ফের পদায়নের সিদ্ধান্ত কেন বে-আইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। তবে এক ও দুই নম্বর বিবাদী তাদের যোগ্য মনে করলে সমমর্যাদার অন্য কোথাও পদায়ন করতে পারবে।

এক আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করে এ নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।

ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় আদালতের আদেশে ২০১৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সাময়িক বরখাস্তের পর চলতি বছরের ৩১ মার্চ তাদেরকে ‘তিরস্কার’ করে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়। এরপর তারা ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরে চাকরি শুরু করেন।

বিজ্ঞাপন

এর প্রতিবাদে ৩১ মার্চের ওই প্রত্যাহার আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেন আইনজীবী মনজিল মোরশেদ। আজ আদালতে দুই কর্মকর্তার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রবিউল আলম বুদু।

পরে আইনজীবী মনজিল মোরশেদ জানান, ২০০৯ সালে রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে সারাদেশে অনেক শিশু মারা যায়। এ ঘটনায় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পক্ষ থেকে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলার বিচার শেষে ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর পাঁচ জনকে খালাস দেন বিচারিক আদালত।

ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারিক আদালত বলেছিলেন, ঔষুধ প্রশাসন অধিদফতর মামলাটি করার ক্ষেত্রে ১৯৮০ সালের ড্রাগ আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করেনি। মামলায় যথাযথভাবে আলামত জব্দ করা, তা রাসায়নিক পরীক্ষাগারে প্রেরণ এবং রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন আসামিদের দেওয়া হয়নি। এ ক্ষেত্রে ড্রাগ আইনের ২৩, ২৫ ধারা প্রতিপালন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন চরম অবহেলা, অযোগ্যতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে পরে হাইকোর্টে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওই আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন ২০১৭ সালের ৯ মার্চ।

রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় আদালতের রায়ে ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে অবহেলার বিষয়টি উঠে আসার পর তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এক আবেদনের প্রেক্ষিতে তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।

এরপর স্বাস্থ্য সচিবের একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয়। যাতে বলা হয়- ওই দুই কর্মকর্তাকে সতর্ক করা হয়েছে। অথচ আদালত জানতে চেয়েছিলো কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থা না নেওয়ায় ব্যাখ্যা দিতে স্বাস্থ্য সচিবকে ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট তলব করেন হাইকোর্ট। পরে ওই বছরের ২৪ আগস্ট সচিব আদালতকে জানান দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়।

এরপর আবার চলতি বছরের ৩১ মার্চ পৃথক আদেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম তাদেরকে ‘তিরস্কার’ দণ্ড দিয়ে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারসহ বিভাগীয় মামলার দায় হতে অব্যাহতি দেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেডকে/এমও

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন