বিজ্ঞাপন

সুস্থ ত্বকই সুন্দর ত্বক

July 19, 2019 | 2:38 pm

তিথি চক্রবর্তী

কম বয়সেই এত মেছতা!
দেখতে ভালোই; তবে গালে বড় একটি আঁচিল।
মুখে প্রচুর ব্রণ তো, তাই বিয়ে হচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

ত্বকের যেকোন সমস্যা থাকলে লোকমুখে এই ধরনের কথা শুনতে হয়। তথাকথিত ‘সুন্দরের’ ধারণায় দুধে আলতা গায়ের রঙ আর ত্বক হতে হয় নিখুঁত। আর এই ধারণার পেছনে ছুটতে থাকেন অনেকে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ত্বকের সুস্থতা নিশ্চিত করাই আসল ব্যাপার। পরিবেশ ও জিনগত কারণে একেকজনের ত্বকের ধরন একেকরকম হয়। আবার ত্বকের সমস্যার ধরনেও থাকে ভিন্নতা। এজন্য ত্বকের সমস্যার চিকিৎসাও সবার ক্ষেত্রে একরকম নয়।

মেছতা, ব্রণ, এলার্জি, ফুসকুড়ি, র‌্যাশ, চুলকানি, সন্তান জন্মের পর পেটে দাগসহ ত্বকের নানা সমস্যায় আক্রান্তদের সংখ্যা কম না। এই সমস্যাগুলোর সঠিক চিকিৎসাপদ্ধতি সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। ফলে সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারেন না।

বিজ্ঞাপন

রোগমুক্ত, স্বাস্থ্যজ্জ্বল ত্বক কে না চায়। ভেতর থেকে ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখতেও কিছু বিষয় মেনে চলা উচিত। ‘সুস্থ ত্বক পেতে কী করবেন’- এ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে এই লেখায়। এখানে তিনটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে-

  • সুস্থ জীবনযাপন
  • ত্বকের যত্ন ও
  • ত্বকের চিকিৎসা

ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে পুষ্টিকর খাবারের কোন বিকল্প নেই। শুধু ত্বকের বাহ্যিক পরিচর্চা করলে চলবে না, ভেতর থেকে ত্বকের দীপ্তি ধরে রাখতে হবে। এজন্য নিয়ম মেনে খাবার খেতে হবে- জানালেন পুষ্টিবিদ সুস্মিতা খান।
ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায় কিছু পরামর্শ দিলেন তিনি-

পুষ্টিকর খাবার
পুষ্টিকর খাবার খেলে ত্বক ও চুল ভেতর থেকেই স্বাস্থ্যজ্জ্বল হয়। প্রতিদিন প্রচুর পানি পান করতে হবে। পানি কম পান করলে পানিশূন্যতা হয় যার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে আমাদের ত্বকে। ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে ভিটামিন ই’র জুড়ি মেলা ভার। তাই ভিটামিন ই পেতে প্রচুর পরিমাণ মৌসুমি ফল ও শাকসবজি খেতে হবে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিদিন ৩ রকমের মৌসুমী ফল ও ২ রকমের সবজি খেতে হবে। ফলের মধ্যে একটি থাকতে হবে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল। অর্থাৎ টকজাতীয় ফল প্রতিদিন একটি করে খেতে হবে। এইসময়ের ফল  আম, জাম, লটকন, জামরুল ইত্যাদি ত্বকের জন্য দারুণ উপকারি। এছাড়াও খেতে পারেন পেয়ারা আর কলা।

ব্যায়াম

ব্যায়াম যেমন শরীরের সুস্থতা নিশ্চিত করে তেমনি ত্বকও ভালো রাখে। ব্যায়াম করলে প্রচুর ঘাম হয় যা ভেতর থেকে ত্বক পরিষ্কার করে। তাছাড়া নিয়মিত ব্যায়াম কর্টিসোল হরমোনের নিঃসরণের মাত্রা ঠিক রেখে মানুষের স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে নিয়মিত ব্যায়াম করলে সহজে বলিরেখা পড়ে না।

বিজ্ঞাপন

সুস্মিতা খান বলেন, সপ্তাহে অন্তত পাঁচদিন আধাঘণ্টা করে ব্যায়াম করতে হবে। সাঁতার, দৌড়ানো, হাঁটা বা খালি হাতে ব্যায়ামই যথেষ্ট। তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে যার যার শরীরের জন্য উপযোগী ব্যায়াম করতে হবে বলেন জানান তিনি।

ঘরোয়া পরিচর্যা
রোদ বা বাইরে থেকে ফেরার পর ত্বকের ঘাম, ময়লা পরিষ্কার না করলে ত্বকের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হয়। তাই রোদ থেকে ফিরে বা ঘুমানোর আগে ত্বক পরিষ্কার করতেই হবে।

রোদের কারণে ত্বকে কালচে ভাব দেখা দিলে টমেটো লাগানো যেতে পারে। চোখের নীচে কালো দাগ দূর করার জন্য আলু বা শসা থেঁতো করে লাগালে উপকার পাওয়া যায়। ত্বকে শুধুমাত্র শসাই নয়, শসার খোসা ফেলে না দিয়ে থেঁতো করে ত্বকে লাগানো যায়। এতেও সমান উপকার।

সুস্মিতা খান আরো বলেন, ত্বকের সুস্থতায় পুরো জীবনযাত্রারও পরিবর্তন করতে হবে। রাত জাগা যাবে না। রাতে অন্তত ৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। প্রতিদিন একইসময় খাবার খেতে হবে।

নিয়মিত ত্বকের যত্ন নেওয়ার পরেও ত্বকে নানা ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ওয়ব সমস্যা অবহেলা না করে ত্বকের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। আসুন দেখে নেই ত্বকের কোন ধরণের সমস্যায় কোন চিকিৎসা নেবেন।

লেজার চিকিৎসা

সাধারণভাবে বলতে গেলে লেজার এক ধরনের আলোকরশ্মি। ২০০৪ সালে বাংলাদেশে লেজার চিকিৎসা আসে। লেজার দিয়ে ত্বকের অবাঞ্চিত টিস্যু নষ্ট করে ফেলা হয়।

লেজার সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারলে ত্বকের ক্ষতি হয়না- জানালেন লেজার বিশেষজ্ঞ ডা. এ টি এম রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘একেক রোগের জন্য একেক ধরনের লেজার চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। রোগের ধরন বুঝে রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়। যেকোন লেজার নির্দিষ্ট জায়গায় কাজ করে। তবে রোগের ধরন না বুঝে যদি লেজার দেওয়া হয়, তাহলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। অনেকসময় ত্বক পুড়ে যেতে পারে।’

সাধারণত কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে লেজার চিকিৎসা কার্যকর এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্রণের দাগ, মেছতা, অবাঞ্চিত লোম, তিল, আঁচিল, শ্বেতী, গর্ত, রক্তনালীর বিকলাঙ্গতায় লেজার চিকিৎসা উপকারি।

এই চিকিৎসা কীভাবে ত্বকে কাজ করে জানতে চাইলে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘যেকোন রোগ ত্বকের কতটা গভীরে আছে তা নির্ণয় করার পর লেজার প্রয়োগ করা হয়। এই রশ্মি এমনভাবে দিতে হবে যাতে ত্বকের সঠিক লেয়ারে গিয়ে পৌঁছায়। অনভিজ্ঞ কেউ এটা ঠিকভাবে করতে পারবেন না। তাই যারা লেজার চিকিৎসায় বিশেষভাবে পারদর্শী, তাদের কাছে চিকিৎসা নিতে হবে। তা না হলে ত্বক পুড়েও যেতে পারে। অসাবধানতার কারণে চোখের ভেতর লেজার রশ্মি গেলে চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

লেজার চিকিৎসায় ক্যান্সার হওয়ার ভয় আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারলে এই চিকিৎসায় ক্যান্সার হওয়ার কোন ঝুঁকি নেই।

খুব ছোট বয়সে লেজার নিলে নানা ধরনের ঝুঁকি থাকতে পারে। তাই ১৫ বছরের পর থেকে এই চিকিৎসা করানো ভালো। কোন রোগের ক্ষেত্রে কতবার লেজার দিতে হবে তা নির্ভর করে রোগের ধরনের ওপর, জানালেন এই চিকিৎসক।

তিনি জানান, সন্তান জন্মের পর অনেক মেয়ের ত্বকে ফাটা দাগ হয়। এক্ষেত্রে লেজার চিকিৎসা উপযোগী। রিসাফেসিং লেজারে এই দাগ দূর হতে পারে।

তবে লেজার চিকিৎসার ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে সচেতনতা প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, এখন দেশের বেশিরভাগ লেজার সেন্টারে কম দামি ও নিম্নমানের লেজার মেশিন ব্যবহার করা হয় যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। অনেকের ক্ষেত্রেই লেজার চিকিৎসায় কাজ না হওয়ার এটা একটা বড় কারণ হিসেবে বলেন তিনি। তাই ত্বকের সমস্যায় লেজার চিকিৎসা নিতে চাইলে ভালো কোন চিকিৎসকের কাছে বা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

লেজার চিকিৎসা নিয়ে মতামত দিলেন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডার্মাটোলজি বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ডা. সাইফুল ভূঁইয়া।

লেজার চিকিৎসা পদ্ধতি ও কার্যকারিতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে লেজারের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। তবে মনে রাখা ভালো, লেজার সব রোগের জন্য প্রযোজ্য নয়। ত্বকের এমন কিছু সমস্যা আছে, যেগুলো প্রথমে ওষুধ দিয়ে সারানোর চেষ্টা করা হয়। একেবারেই ভালো না হলে লেজার করানো হয়।’

ডা. সাইফুল ভূঁইয়া জানান, আঁচিল, অবাঞ্চিত লোম, ব্রণের দাগ, মেছতার জন্য লেজার ভাল কাজ করে। তবে আজকাল সৌন্দর্য বাড়ানো ও বয়সের ছাপ দূর করার জন্যও লেজার করতে চান অনেকে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) অনুমোদনপ্রাপ্ত একজন ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

বাজারে প্রচলিত ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহার না করারও পরামর্শ দেন তিনি। এইসব ক্রিমের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ত্বক ফর্সাকারী ক্রিমে প্রচুর পরিমাণ স্টেরয়েড থাকে। এর প্রভাবে অল্পদিনেই ত্বকের রং ফর্সা হলেও ত্বক অত্যন্ত নাজুক হয়ে যায়। ত্বক পাতলা হয় ও অনেকসময় অবাঞ্চিত চুল গজায়।’ তাই বাজারে প্রচলিত ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহার না করে ত্বকের সুস্থতার প্রতি নজর দিতে পরামর্শ দেন তিনি।

ভেষজ উপাদানে ত্বক পরিচর্চা
ত্বক পরিচর্চায় ভেষজ উপাদানের গুরুত্ব আদিকাল থেকেই চলে আসছে। রাসায়নিক উপাদানে তৈরি করা পণ্য এখন অনেকেই ব্যবহার করতে চান না। ফিরে যেতে চান প্রকৃতির কাছে। তাই প্রাকৃতিক বা ভেষজ উপাদানের প্রতিই তাদের মনোযোগ থাকে।

ভেষজ উপাদানে কোন ক্ষতিকর পদার্থ নেই। মেলেও হাতের নাগালে। আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিতে ত্বক পরিচর্যায় সব ধরনের ডাল, সয়াবিন, গম, চাল, কাঠবাদাম, তিল, তিসি, আমলকী, বহেরা, হরিতকি, নিম, হলুদ, মধু, গোলাপ ফুল, গাঁদা ফুল, তুলসী পাতা, কলা, পাতা মেহেদী ব্যবহার করা হয়।

এছড়াও আয়ুর্বেদিক কিছু ওষুধ ও হার্বস ভা ভেষজ লতাগুল্ম ব্যবহার করা হয়। এভাবেই ত্বক সুরক্ষিত ও মসৃণ রাখা যায়- জানালেন আয়ুর্বেদিক সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ আয়েশা সিদ্দীকা।

তিনি বলেন, ত্বকের যেকোন সমস্যায় আগে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। কারণ আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা মানে শুধু ফেসিয়াল নয়, রোগের কারণ উদঘাটন করে ভেতর থেকেই তা নির্মূল করা। এজন্য পুষ্টিকর খাবার, সময়মতো ঘুম, নিয়মিত ব্যায়াম অর্থাৎ সঠিক জীবনযাপন প্রক্রিয়ার ওপর গুরুত্ব দেয় এই চিকিৎসা। ত্বকের সুস্থতা কেবল বাহ্যিক বিষয় না, এটি ভেতর থেকেই হওয়ার প্রক্রিয়া বলে মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ।

ত্বকের ধরন অনুযায়ী কিছু ভেষজ উপাদান ব্যবহারের নিয়ম জানালেন সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ আয়েশা সিদ্দীকা।

সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষেত্রে
কারো কারো ত্বক খুবই সংবেদনশীল। এমনকি আয়ুর্বেদিক ফেসিয়ালের কিছু উপাদানও তাদের ত্বকে সহ্য হয়না। র‌্যাশ উঠে যায়। যেমন অনেকের হলুদ, নিম কিংবা অ্যালোভেরাতেও অ্যালার্জি হতে পারে।

যে উপাদান ব্যবহার করলে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভবনা থাকে, তা এড়িয়ে চলতে হবে। ত্বকের ধরন বুঝে ফেসিয়াল করতে হবে। মাশরুমের কিছু ফুড সাপলিমেন্ট সংবেদনশীল ত্বকের জন্য ভালো। এই ধরনের সাপলিমেন্ট রক্তে অ্যালার্জির সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।

যাদের ত্বকে কোনকিছু দিয়ে রাবিং বা স্ক্র্যাবিং করলে অ্যালার্জি হয়, তাদের জন্য আয়ুর্বেদিক সেনসেটিভ ফেসিয়াল আছে। এই ফেসিয়াল ত্বক ভেতর থেকে মসৃণ করে।

ব্রণের চিকিৎসা
অনেক সময় তৈলাক্ত ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার না করলে রোমকূপে ময়লা জমে ব্রণ হতে পারে। আবার অনেকে ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম, সিরাম ব্যবহার করেন। যার কারণে ত্বক খুব পাতলা হয়ে যায়। পরবর্তীতে ব্রণ বা নানা সমস্যা দেখা দেয়। ব্রণের সমস্যা দূর করার জন্য আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় কিছু ওষুধ ও ফুড সাপ্লিমেন্ট দেওয়া হয়। এতে এসব সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। এছাড়া ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ও সানস্ত্রিন ব্যবহার করতে হয়। তবে আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শে এগুলো ব্যবহার করা ভালো।

ব্রণ থাকলে আয়ুর্বেদিক ফেসিয়ালের সময় স্ক্র্যাবিং করানো হয় না। এতে প্রদাহজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

দাগ দূর করতে
যেকোন দাগের জন্য আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা আছে। ভেষজ উপাদানে তৈরি প্যাক ও হালকা মাসাজ এক্ষেত্রে ভালো। দাগের ধরন অনুযায়ী আয়ুর্বেদিক প্যাক লাগাতে হয়।

খুশকি
চোখের পাতা, ভ্রু ও মাথায় খুশকি থাকে অনেকের। খুশকির জন্য আয়ুর্বেদিক উপাদানে তৈরি প্যাক, ফুড সাপলিমেন্ট ও কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে এই রোগের চিকিৎসা নিতে হবে।

নখ ফেটে গেলে
যাদের ত্বক অত্যান্ত নাজুক, নখ ভেঙে যায় ও হাতের তালু ফেটে যাওয়ার সমস্যা থাকে তাদের জন্য প্যারাফিনযুক্ত মেনিকিওর ও পেডিকিওর করানো ভালো। এটি ত্বককে মসৃণ করবে। আর ফাঙ্গাল ইনফেকশনের জন্য কিছু ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।

সোরিয়াসিস
আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী চিকিৎসা ত্বকের সোরিয়াসিসের জন্য ভালো। একটু সময় লাগলেও ভেতর থেকে এই রোগের টক্সিন দূর হয়। আয়ুর্বেদিক হওয়ার কারণে তেমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই।

চুল পড়া রোধে
মূলত প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যেতে পারে। বাহ্যিক কারণে খুব কমই চুল পড়ে। বাহ্যিক কারণে চুল মলিন হতে পারে। কিন্তু চুল পড়া বা ধুসর হয়ে যাওয়ার পেছনে মূল কারণ হলো প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব। স্বাস্থ্যজ্জ্বল চুলের জন্য শরীরে কিছু অ্যানজাইম ও মিনারেল দরকার, যেগুলোর ঘাটতি থাকলে চুল পড়ে যায়।

রাত জাগা, কোষ্ঠকাঠিন্য, হজম ও আইবিএস- এমন অনেক কারণেও চুল পড়ে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় প্রথমেই চুল পড়ার কারণ খুঁজে বের করা হয়। তারপর চিকিৎসা দেওয়া হয়। চুল পড়া কমে গেলে ভেষজ উপাদানে তৈরি প্যাক লাগাতে হয়, যাতে চুল হয় ঝলমলে। অর্থাৎ চুল ভালো রাখতে ভেতর ও বাহির উভয় ধরনের যত্নের দরকার।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে
ত্বক উজ্জ্বল করার জন্য কিছু আয়ুর্বেদিক ফেসিয়াল আছে। তবে যাদের গাঁয়ের রঙ কালো বা বাদামি তাদের পুরোপুরি ফর্সা হওয়া কখনই সম্ভব না। কারণ, এই চিকিৎসায় ত্বকের মেলানিনের পরিমাণ কমায় না।

কোনরকম রাসায়নিকের ব্যবহার না হওয়ায় আয়ুর্বেদিক ফেসিয়ালে ত্বকের লাবণ্য আসতে কিছুটা সময় লাগে। তাই ত্বকের জন্য আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বা ফেসিয়াল করাতে চাইলে ধৈর্যের সাথে অপেক্ষা করতে হবে।

কিছু খাবার আছে যেগুলো ত্বক ভেতর থেকে উজ্জ্বল করে। কলা, আপেল, নানা রকম মৌসুমী ফল ও নানারকম রসালো ফলে ভিটামিন এ ও সি থাকে। এগুলো প্রচুর পরিমাণে খেলে ত্বক ভেতর থেকেই অনেকটা উজ্জ্বল হয়।

এসবের পাশাপাশি কিছু ঘরোয়া ফেসপ্যাক ব্যবহারেও উপকার পাবেন।

খরচ
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার খরচ সম্পর্কে ধারণা দিলেন সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ আয়েশা সিদ্দীকা। তিনি জানান, এই চিকিৎসায় ত্বকের সমস্যার ধরনভেদে ১৫,০০০- ২০,০০০ টাকা লাগে। তবে একসাথে নয়, প্রতিবার (সাধারণত প্রতিমাসে) চিকিৎসায় ১৫০০ থেকে ২৫০০ টাকা খরচ হয়। ত্বকের সমস্যার ধরনভেদে ১০/১২ বার এই চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।

ওয়াক্সিং
ওয়াক্সিং করানোর পর অনেকের ত্বকে র‌্যাশ দেখা দিতে পারে বা ত্বক লাল হয়ে যেতে পারে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ওয়াক্সিংয়ের পর পর যতটা সম্ভব ঢোলা কাপড় ব্যবহার করুন। অ্যালোভেরা জেল বা বরফ লাগালেও উপকার পাবেন।

হারমণি স্পার একজন রূপ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘ওয়াক্সিং করানোর পর সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে টক দই লাগাতে হয়। এতে সমস্যা অনেকটা কমে যায়। তবে সমস্যা বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।’

ত্বকের যেকোন সমস্যায় সঠিক চিকিৎসাপদ্ধতি অনুসরণ করুন। আর সঠিক জীবনযাপন পদ্ধতি মেনে চলুন। মনে রাখা ভালো, সুস্থ ত্বক মানেই সুন্দর ত্বক।

ছবি – রিফাত বিন আহসান

মডেল – তানহা তানজিন

সারাবাংলা/টিসি/আরএফ

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন