বিজ্ঞাপন

নুসরাত হত্যা মামলায় জেল সুপারসহ সাত জনের সাক্ষ্য গ্রহণ

July 29, 2019 | 1:47 am

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

ফেনী : মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যায় দায়ের করা মামলায় ফেনীর জেল সুপার রফিকুল কাদেরসহ আরও সাত সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। রোববার (২৮জুলাই) ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে ডেপুটি জেলার মনির হোসেন, কারারক্ষী মো. শাহনেওয়াজ, মো. রিপন ও ছবি রঞ্জন ত্রিপুরা এবং মোশারফ হোসেন ও মো. গোলাম মাওলার সাক্ষ্য গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

জেলা জজ আদালতের সরকারী কৌঁসূলী (পিপি) হাফেজ আহাম্মদ বলেন, নুসরাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত বাদীসহ ৫৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার ফেনীর জেল সুপার রফিকুল কাদের ও ডেপুটি জেলার মনির হোসেনসহ সাত জন আদালতে উপস্থিত হয়ে সাক্ষপ্রদান করেন। আজ ২৯ জুলাই সোমবার নুসরাতের পিতা একেএম মুসা মানিক, মোহাম্মদ আলী ও সৈয়দ সেলিমের সাক্ষ্য প্রদানের তারিখ ধার্য করেছেন আদালত বলেও জানান তিনি।

ডেপুটি জেল সুপার আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বলেন, ‘২০১৭ সালের ৭ সেপ্টম্বর থেকে আমি ফেনী কারাগারের ডেপুটি জেল সুপার হিসেবে কর্মরত আছি। কারাগারের সাক্ষাতকক্ষের রেজিস্টার আমি রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকি। গত ১৬ মে দুপুরে পিবিআই কর্মকর্তারা কারাগারে এসে ওই রেজিস্টারটি জব্দ করেন। যেখানে সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের মামলায় আটক ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদদৌলার সাথে সাক্ষাতকারীদের তথ্য লিপিবদ্ধ ছিল। এ রেজিস্টারে কারাগারে প্রতিদিনের সাক্ষাতকারীদের তথ্য লিপিবদ্ধ করতে হয় বলে আমার কাছে জিম্মায় রাখি।’

বাদী পক্ষের অপর আইনজীবী শাহজাহান সাজু জানান, জেল সুপার জানিয়েছেন জহুরা নামের এক মহিলার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নুরউদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, হাফেজ আবদুল কাদের ও যোবায়েসহ বেশ কয়েকজন সিরাজ উদ দৌলার সাথে একাধিকবার দেখা করেন।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় ওষুধ ব্যবসায়ী গোলাম মাওলা ও মোশাররফ হোসেন আদালতে প্রায় একই বক্তব্য প্রদান করে বলেন, ‘গত ৮ মে পিবিআই কর্মকর্তারা নুসরাত হত্যা মামলার আসামী শামীম, যোবায়ের ও জাবেদকে নিয়ে মাদরাসার সাইক্লোন সেল্টারের দ্বিতীয় তলার অধ্যক্ষের রুমের সামনে যায়। সেখানকার একটি ওয়াল ক্যাবিনেট থেকে একটি কাঁচের গ্লাস জব্দ করা হয়। জব্দতালিকায় আমরা স্বাক্ষর করি। ওই সময়ে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জাবেদ জানায়, ওই গ্লাসে কেরোসিন ভরে নুসরাতের গায়ে ঢেলে আগুন লাগানো হয়।’

চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়ের দায়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।

এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১৬ জনের সর্বেচ্চ শাস্তি দাবি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

বিজ্ঞাপন

এ মামলায় মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

 

সারাবাংলা/কেকে

 

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এআর/কেকে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন