বিজ্ঞাপন

‘বিএনপি-জামায়াত বিষধর সাপ, তাদের সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে’

August 3, 2019 | 6:24 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপি-জামায়াতকে বিষধর সাপ উল্লেখ করে তাদের সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গী কবির নানক। তিনি আরও বলেন, নতুবা দেশ মাতৃকার স্বাধীনতা, উন্নয়ন, অগ্রগতি ও শান্তির পথ হুমকির মুখে থাকবে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৩ আগস্ট) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) সদর দফতর এবং ঢাকা কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে আইইবির সেমিনার কক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তেব্য তিনি এসব কথা বলেন।

পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্রের পিছনে যে দেশীয় ও আন্তজার্তিক শক্তি জড়িত ছিল, সেই শক্তির মুখোশ উন্মোচন করে তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারের হত্যার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন এবং একাত্তরে পরাজিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তিরা জাতির পিতাকে মেনে নিতে পারেনি বলেই এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে উল্লেখ করেন জাহাঙ্গীর কবির নানক।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও জামায়াতিরা বঙ্গবন্ধুকে মেনে নিতে পারে নাই। এই বিষধর সাপ চুপিসারে ছিল আর সময়ের অপেক্ষা করেছে। সেদিন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির মধ্যে বিভ্রান্তি এবং বিভক্তি; এই দুইটি থাকার কারণে একাত্তরের পরাজিত শক্তি সাহস পেয়েছিল এবং তারা ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছিল।

আমরা সেদিন সতর্ক ছিলাম না বলেই ষড়যন্ত্রের সফল হয়েছিল বরে দাবি করেন নানক। তিনি বলেন, আমরা সেদিন সতর্ক ছিলাম না বলেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ডালিম, শাহরিয়ার, নূর ও খুনী মোশতাক, খুনী জিয়াউর রহমানরা সফল হয়েছে।

জাতির পিতাকে হত্যার পর ১৯৮১ সালে ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যার দেশে ফিরে আসার পটভূমি তুলে ধরে জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘কিন্তু বিষধর সাপ কি অবস্থায় ছিল? আমরা বিষধর সাপকে চিনতে পারিনি! তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তারা ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছে। তারা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক শক্তির সঙ্গে মিলে ২১টি বছর শাসন এবং শোষণ করেছে। এই ২১ বছর যাবৎ বাঙালি শুধু স্বাধীনতার বিরুদ্ধ কথা শুনেছে, ইতিহাস বিকৃতির কথা শুনেছে। এই জাতি আবার পরাধীনতার নাগপাশে আবদ্ধ হয়। সেই থেকে মুক্তির জন্য শেখ হাসিনা নিরবিচ্ছন্ন লড়াই করেছেন। সেই জন্য তাকে বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছে। কোটালিপাড়ার সেই বোমা থেকে শুরু সেই আগস্ট মাস, যে আগস্ট এলে শুধু শোকাবহ নয় বাঙালি জাতি আতঙ্কিত হয়। আগস্ট মাস এলেই মনে পড়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কথা, খালেদা-নিজামী চারদলীয় জোটের আমলে ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে আবার এই দেশকে পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্রের কথা।

শোকাবহ আগস্টে জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে মদদদাতা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তির মুখোশ উন্মোচন করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিষ্কার কথা, বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত, অপারেশনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে, এই ষড়যেন্ত্রর পিছনে যে দেশীয় ও আন্তজার্তিক শক্তি জড়িত রযেছে, এবারের ১৫ আগস্টে আমাদের উদাত্ত আহ্বান থাকবে, আমাদের দাবি থাকবে, আমাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হবে, সেই মদদদাতা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তির মুখোশ উন্মোচন করে তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।

‘ষড়যন্ত্র চলছে। ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আস্থা দেখিয়েছেন বাংলার ১৬ কোটি মানুষ। তিনি তিন তিনবার ক্ষমতায় রয়েছেন। ষড়যন্ত্র কম হয়নি। পেট্রোল বোমা থেকে শুরু করে মানুষ হত্যার এক উন্মাদনা সৃষ্টি করেছিল সেই খালেদা-নিজামী এবং তারেক রহমানরা বলে দাবি করেন।

বিএনপি-জামায়াত গুজব প্রচারণা চালিয়েও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, আজকে বাংলাদেশে যখন পদ্মাসেতু সফল হতে যাচ্ছে। তখন তারা অপ্রপ্রচার চালায় মানুষের মাথা লাগবে। বাংলাদেশে মা তার সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করতে যায় তখন গণপটিুনীর অপপ্রচারকারী ও ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে নিহত হয়ে লাশ হয়ে ফিরে আসে। এই ষড়যন্ত্রকে আমাদেরকে মোকাবেলা করতে হবে। এই ষড়যন্ত্র যদি মোকাবেলা করতে না পারি। তাহলে আমাদের সাথে দুটি বিষধর পথ চলছে, একটি হল জামায়াতে ইসলাম, আরেকটি হল বিএনপি। এই দুটি বিষধর সাপ যখন আমাদের ঐক্যবদ্ধতা দেখে তখন গর্তের মধ্যে ঢুকে যায়। আমাদের মধ্যে যখন জনগণের কোলাহল দেখে তখনই গর্তের মধ্যে ঢুকে যায়। আমাদের মধ্যে যখন কোলাহল দেখে না, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে যখন ঐক্যবদ্ধ থাকে না, তখনই ওরা বেরিয়ে এসে ছোবল হানে পিছন থেকে।

বিজ্ঞাপন

কাজেই এই বিষধর সাপকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার আহ্বান জানান সাবেক এই স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই বিষধর সাপ বিএনপি-জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। নতুবা দেশ মাতৃকার স্বাধীনতা হুমকির মুখে থাকবে। উন্নয়ন অগ্রগতি শান্তির পথ হুমকির মুখে থাকবে।

প্রকৌশলীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে নানক বলেন, আজকে বাংলাদেশে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকার এবং দল একসাথে কাজ করছে। আর সেই ডেঙ্গুর কথা যখন আলোচনায় আসে, তখন মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেব বলেন জরুরি অবস্থা জারি করতে। কি কারণে জরুরি অবস্থা জারি করতে হবে? বাংলাদেশের মানুষ সচেতন, দেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষেররা সামাজকি সাংস্কৃতিক সংগঠন ডেঙ্গু নির্মূলে সরকারের সাথে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রতি মুহূর্তে প্রতিক্ষণে প্রতি মুহুর্তে লন্ডন থেকে বাংলাদেশের খবর রাখছেন। সেই নির্দেশনা অনুসারে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ডেঙ্গু নির্মূলে আমরা কাজ চালিয়ে যাবো। আমাদের জয় হবেই। আমরা যেমনি জঙ্গিবাদকে দমন করেছি। তেমনি করে জনগণের সহযোগিতা নিয়ে এই মরণব্যাধিকে পরাজিত করবো।

আইইবির প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. আবদুস সবুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আইইবির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মনজুর মোর্শেদ, ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী নুরুজ্জামান, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান, আইইবির সাবেক প্রেসিডেন্ট নুরুল হুদাসহ অনেকে। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শিবলু।

সারাবাংলা/এনআর/এমআই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন