বিজ্ঞাপন

কাশ্মিরে গৃহবন্দি সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী, সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ

August 5, 2019 | 12:02 pm

কাশ্মীরে অনির্দিষ্ট কালের জন্য জারি করা হয়েছে কার্ফু। নয়া দিল্লিতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দিনভর কয়েক দফায় বৈঠক আর পাকিস্তানের হুঁশিয়ারির মধ্যে উৎকণ্ঠার পারদ চরমে উঠেছিল কাশ্মীরে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৪ আগস্ট) রাতে ভারতের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতিকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। এছাড়া গৃহবন্দি আছেন প্রাক্তন বি‌ধায়ক সাজ্জাদ লোনও। গ্রেফতার সিপিএম নেতা ইউসুফ তারিগামি ও কংগ্রেস নেতা উসমান মজিদ। এর পর কী হবে, এই উদ্বেগেই এখন থমথমে কাশ্মীর উপত্যকা।

কিছু যে ঘটতে চলেছে, সে ইঙ্গিত অবশ্য মিলছিল কদিন ধরেই। অমরনাথ যাত্রা বন্ধ করে দিয়ে হঠাৎই কাশ্মীরে বাড়ানো হয়েছিল আধাসেনার বহর। সম্ভাব্য জঙ্গি হামলার খবর পেয়েই কি এই ব্যবস্থা, নাকি অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে সরকারের, জল্পনা জমছিল তা নিয়েই। ফেরানো শুরু হয়েছিল পর্যটকদের।

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশকে অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলেও সে কথা অবশ্য স্বীকার করেনি সরকার। তবে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো বলেছে, শোপিয়ানের মতো স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে থানা পাহারা দিচ্ছে বিএসএফ। বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়।

বিজ্ঞাপন

এ দিন কাশ্মীরের মূলস্রোতের রাজনৈতিক দলগুলির নেতারা মেহবুবার বাড়িতে এক সর্বদল বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা খর্ব করার চেষ্টা হলে একযোগে তার প্রতিরোধ করার সিদ্ধান্ত নেন তারা। তার পরপরই তাদের কাউকে গ্রেফতার, কাউকে গৃহবন্দি করা হল। মেহবুবা-ওমর দুজনেই টুইট করে নিজেদের গৃহবন্দিত্বের কথা সকলকে জানিয়েছেন। এই কড়াকড়ির সিদ্ধান্ত কি আজ দিল্লির বৈঠকেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল? স্পষ্ট করে বলেননি কেউ।

আজ সকালে সংসদে পৌঁছেই অমিত শাহ সকলের আগে ডেকে পাঠিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব গৌবাকে। বিদায়ী স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে কিছু ক্ষণ আলোচনার পরে আসেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। শুরু হয় তিন জনের বৈঠক। কিছু ক্ষণ পরে ওই বৈঠকে যোগ দেন দুই গোয়েন্দাপ্রধান অরবিন্দ প্রধান ও সমন্তকুমার গয়াল। পরে আলাদা ভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে জম্মু-কাশ্মীরের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব জ্ঞানেশ কুমারের সঙ্গে বৈঠকে বসেন অমিত।

এরই মধ্যে ভারতকে হুঁশিয়ারির বার্তা দেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। নিয়ন্ত্রণরেখায় কেরন সেক্টরে ৩১ জুলাই রাতে পাক সেনার ব্যাট বাহিনী হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছিল ভারত। সেই হামলায় নিহত পাঁচ পাক সেনার দেহ পাক বাহিনীকে নিয়ে যেতে বলেছে ভারতীয় সেনা। কিন্তু ওই হামলার কথা অস্বীকার করে উল্টে এ দিন ভারতের বিরুদ্ধেই সুর চড়িয়েছেন ইমরান।

বিজ্ঞাপন

টুইটারে পাক প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ‘নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতের হামলার নিন্দা করছি। এটা মানবাধিকার আইন ও ১৯৮৩ সালের প্রথাগত অস্ত্র ব্যবহার নিয়ে চুক্তির পরিপন্থী। এ নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের সতর্ক হওয়া উচিত। ভারত কোনো ভুল পদক্ষেপ করলে পাকিস্তান জবাব দেবে।’ এর পরেই তিনি লেখেন, ‘কাশ্মীর সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হলে তবেই দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি বজায় রাখা সম্ভব। এখনই মধ্যস্থতা করার সময়।’ পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি। পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী রাজা ফারুক হায়দর পাক বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন।

কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে এই প্রবল উত্তেজনার মধ্যে মন্ত্রিসভার বৈঠকের খবর আসতেই নতুন করে জোরালো হয় জল্পনা। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী এবং জম্মু-কাশ্মীরের সাংসদ জিতেন্দ্র সিংহ সংসদ ভবন থেকে বেরোতেই তাদের ঘিরে ধরেন সাংবাদিকেরা। ‘আমি কিছু জানি না’ বলে এড়িয়ে যান জিতেন্দ্র। সন্ধ্যায় বিজেপির কর্মশালা শেষ হওয়ার পরে সংসদে নিজের ঘরে যান প্রধানমন্ত্রী। সূত্র জানিয়েছে, অমিত শাহের সঙ্গে দেখা হয়নি তার। কিছু ক্ষণ পরে প্রধানমন্ত্রী বেরিয়ে যান। এর পরে অমিত ডেকে নেন দলের কার্যকরী সভাপতি জে পি নড্ডা, পীযূষ গয়ালদের। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, সংসদের অধিবেশন শেষ হলেই কাশ্মীর যাবেন অমিত।

সারাবাংলা/এমআই

বিজ্ঞাপন

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন