বিজ্ঞাপন

প্রেসিডেন্ট হলে আধা স্বয়ংক্রিয় মারণাস্ত্র নিষিদ্ধ করব: বাইডেন

August 12, 2019 | 9:54 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হরহামেশাই হচ্ছে বন্দুক হামলা। দেশটিতে অস্ত্র সহজলভ্য হওয়া ও শিথিল অস্ত্র আইনের জন্য বন্দুক হামলার ঘটনা বেশি ঘটছে বলে ধারণা অনেক মার্কিনির। এসব হামলায় আধা স্বয়ংক্রিয় মরণাস্ত্রের ব্যবহারের ফলে প্রাণহানি হচ্ছে অনেক বেশি। অস্ত্র নির্মাতা-বিক্রেতাদের শক্তিশালী লবিং এর কারণে বিদ্যমান অস্ত্র আইন সংশোধন সম্ভব হচ্ছে না সরকারের পক্ষে।

বিজ্ঞাপন

তবে ২০২০ সালের আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী জো বাইডেন জানিয়েছেন তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে দেশটিতে স্বয়ংক্রিয় মারণাস্ত্র নিষিদ্ধ করবেন। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে ১১ আগস্ট প্রকাশিত তার লেখাটি দেওয়া হলো পাঠকদের জন্য।

সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন লেখেন,

‘যতবারই নির্বিচারে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে, আমরা শোকাহত হই। সমমনাদের নিয়ে জমায়েত হই। উত্তর খুঁজি, সমস্যা সমাধানের জন্য শোরগোল তুলি। কিছু সময়ের জন্য মনে হয় এবার বুঝি সমাধান হচ্ছে সমস্যার। কিন্তু একই ধরনের সংবাদ আবারও আমাদের দেখতে হয়। আমরা আশঙ্কায় থাকি, এটা আবারও যেকোনো সময় ঘটতে পারে।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি এল পাসো ও ডাইটনের বন্দুক হামলার পার্থক্য ছিল ১৩ ঘণ্টা। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, মানসিক অসুস্থতা ও ঘৃণার কারণে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে। কিন্তু সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও আমার করা একটি আইন যেটি ওসব অসুস্থদের হাতে অস্ত্র যাওয়ায় বাধা হতো, ট্রাম্প তার দায়িত্বে প্রথম বছরই সে আইন বাতিল করেন। তিনি তার ভক্তদের কাছে ক্রমাগত ঘৃণা ও সাদাদের শ্রেষ্ঠত্বের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন। আমরা তার চিকিৎসা পদ্ধতিতে বিশ্বাস করতে পারিনা।

অস্ত্র বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্তের অনেকে সমস্যা আছে। সামরিক ঘরানার ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এই বিষয়ে আমাদের সেভাবেই ভাবতে হবে। কেউ যদি বলে অস্ত্র সমস্যায় কিছুই করার নেই তাহলে সে মিথ্যা বলছে। সে আমাদের দেশকে নেতৃত্ব দিতে যথার্থ নয়।

এর আগে, ১৯৯৪ সালে আধা স্বয়ংক্রিয় ও অনেকগুলো বুলেট  ধারণক্ষমতার ম্যাগাজিন সম্পন্ন অ্যাসল্ট রাইফেল নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সে আইন জারি ছিল পরবর্তী ১০ বছর। কোনো সন্দেহ ছাড়াই সেই সিদ্ধান্ত আমাদের দেশকে অনেক নিরাপদ করেছিল। সেটাই সর্বশেষ অর্থপূর্ণ অস্ত্র আইন ছিল যেটি আমরা করতে পেরেছিলাম। পরবর্তীতে অস্ত্র নির্মাতারা রিপাবলিকানদের মাথায় তাদের চাওয়া চাপিয়ে দেয়।

বিজ্ঞাপন

আমি ২০০৪ সালে অ্যাসল্ট রাইফেল নিষিদ্ধের ব্যাপারে কঠোর চেষ্টা করেছি। তবে রিপাবলিকানরা বলেছিল এটির কার্যকারিতা নেই। কিন্তু প্রায় ১৫ বছর পর আমাদের আবার বোধোদয় হচ্ছে। ওই আইনটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অনেক পুলিশ বিভাগ থেকে প্রতিবেদন এসেছে অপরাধীরা ২০০৪ সালের পর থেকে আধা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের ব্যবহার বাড়িয়েছে। এছাড়া বন্দুক হামলার ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যাও বেড়েছে যা অনেক প্রতিবেদনে এসেছে।

অ্যাসল্ট রাইফেলে অল্প সময়ে অনেক বেশি মানুষ খুন করা যায়। বন্দুক হামলাকারীরা এটাই ভাবতে থাকেন। ম্যাগাজিনে ১০টির বেশি বুলেট থাকা মানেই সেটি আধা স্বয়ংক্রিয় মারণাস্ত্র। খুনিরা তাদের কাজে সময় ব্যয় হবে তা ভাবতে চায় না, চায় না ম্যাগাজিন রিলোড করতে। ডাইটনের কথা ভাবুন। মাত্রা ৩০ সেকেন্ডে পুলিশ তাকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হয়। এরমধ্যেই সে ৯ জনকে হত্যা করে ২ ডজনেরও বেশি মানুষকে করেছিল গুলিবিদ্ধ। সে ব্যবহার করেছিল এআর মডেলের অ্যাসল্ট রাইফেল।

আমাদের এসব অস্ত্র দূরে সরাতে হবে। আমেরকিার শতকরা ৭০ ভাগ মানুষ এসব অস্ত্র নিষিদ্ধের পক্ষে। এমনকি ৫৪ ভাগ রিপাবলিকানরাও। তারপরও এসব অস্ত্র নিষিদ্ধের আইন সিনেটে পাশ হচ্ছে না। কারণ নেতাদের সদিচ্ছা নেই। সন্তানদের চেয়েও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কারা আমাদের নির্বাচনি তহবিলে অর্থ দিচ্ছে।

১৯৯৪ সালে অ্যাসল্ট অস্ত্র নিষিদ্ধ করার আইনটি কার্যকর ছিল। এবং আমি নির্বাচিত হলে এই আইন আবার পাশ করতে যাচ্ছি। এবার আমরা আরও কঠোর আইন আরোপ করব। অস্ত্র নির্মাতাদের বাধ্য করবো অস্ত্রের নকশা বদলিয়ে আইনকে যেভাবে তারা অবজ্ঞা করে সে ব্যাপারে জবাবদিহি করতে। যে অস্ত্রগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সেগুলো কিনে নেব।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনএইচ

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন