ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড: শো-এর পর সমালোচনায় মোদি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডিসকভারি চ্যানেলের জনপ্রিয় শো ‘ম্যান ভার্সে ওয়াইল্ড’-এর একটি বিশেষ পর্বে অংশ নিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার (১২ আগস্ট) শো-টি প্রচার হওয়ার পর ভারতজুড়ে বেশ আলোচনার পর ভাইরাল হতে শুরু করেছে এই পর্বটি।

এই শো সম্পর্কে এই টুইট বার্তায় নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সুরক্ষা’র ওপর আলোকপাত করতে এই শো-এর মূল লক্ষ্য ছিল।

ভারতের উত্তরাখণ্ডের জিম করবেট ন্যাশনাল সাফারি পার্কে এই শো-এর শুটিং করা হয়। সেখানে তারা নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। সেখানে উঠে আসে প্রকৃতির প্রতি তার ভালোবাসার কথাও।

শো-টি প্রচার হওয়ার নানা সমালোচনাও শুরু হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। কেউ কেউ যেটিকে বলেছেন ‘বন কি বাত’! দেখা গেছে- হেলিকপ্টার থেকে নেমে গ্রিলসের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে, গল্প করতে করতে মোদি এগোলেন জঙ্গলের পথ ধরে। নদী পেরোলেন বাঁশ, কাঠকুটো আর প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি ভেলায় চেপে। নদী পেরিয়ে, সামান্য চা সেবন। গল্পগুজব এবং নিমপাতা নিয়ে চর্চার পরে বেয়ার প্রধানমন্ত্রীকে তুলে দিলেন ‘সিক্রেট সার্ভিস’-এর লোকজনের হাতে।

শো-তে বেয়ার কিছু ক্ষণ পর পরই বাঘের ভয়, বাঘের ভয় বলে ভয়ঙ্কর রোমাঞ্চকর পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা চালিয়েছেন বটে। তবে বুঝতে কারও অসুবিধে হয়নি যে, গোটা সফরে ওই সিক্রেট সার্ভিসের লোকজনই ছিলেন সফরসঙ্গী। তবে ক্যামেরার ফ্রেমের বাইরে।

বেয়ার সাহেব যতই বলুন বাঘের হাত থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বাঁচানোই তার চিন্তা, মোদি শুনিয়ে দিয়েছেন, ছোটবেলায় বাড়ির কাছের হ্রদ থেকে কুমিরছানা ধরে আনার গল্প। বলেছেন, ‘জীবনের সব কিছুর মধ্যেই ভাল কিছু আছে বলে মনে করি। তাই যাই ঘটুক, নার্ভাসনেস কখনো প্রকাশ পায় না।’

বেয়ার যখন হাতে বল্লম ধরিয়ে দিয়েছেন বাঘ এলে কাজ লাগবে বলে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘যে সংস্কৃতিতে বড় হয়েছি, কাউকে মারতে পারব না।’ এ কথা শুনে বেয়ার যখন বল্লমটি ফেরত নিতে চেয়েছেন, মোদী বলেছেন, ‘আমি আপনার হয়ে এটা নিজের হাতেই রাখছি।’

‘শো’-এর সম্প্রচার শেষ হতে না হতেই মোদির সেনাপতি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের টুইট, ‘সমৃদ্ধ বন্যপ্রাণের সঙ্গে সহাবস্থান, তাদের সুরক্ষা এবং প্রকৃতির সংরক্ষণে ভারতীয় ঐতিহ্যের কথা বিশ্বের সামনে তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী। গর্বের মুহূর্ত।’

অনুষ্ঠানটি দেখার পর ভারতের বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে পদ্মশ্রী, প্রজেক্ট টাইগারের প্রাক্তন কর্মকর্তা প্রশান্তকুমার সেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর এই অনুষ্ঠান নিছকই পর্যটনের প্রচার। এর সঙ্গে বন, বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের সম্পর্ক আছে বলে মনে হয় না।’

আর বাঘ বিশেষজ্ঞ বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরীর মন্তব্য, ‘এর সঙ্গে না বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ, না অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজ‌ম, কোনো কিছুরই স্পষ্ট সংযোগ আছে বলে মনে হল না। লোকলস্কর নিয়ে হেলিকপ্টারে উড়ে গিয়ে বাঘের দেশে বনের নির্বিঘ্নতাই ক্ষুণ্ণ হল খানিক।’

সারাবাংলা/এমআই