বিজ্ঞাপন

কার্যকর কৃষি তথ্যসেবা দিতে নির্মিত হচ্ছে প্রেস ভবন

August 21, 2019 | 9:00 pm

এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: কার্যকর ও মানসম্মত তথ্যসেবাকে আরও সহজে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কৃষি প্রেস ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পুরানো ভবনের পাশেই নতুন এই ভবনটি নির্মিত হবে। সাত তলা বিশিষ্ট এই ভবন নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৮ কোটি টাকা। ভবনটিতে আধুনিক প্রেস ব্যবস্থার সব যন্ত্র স্থাপন করা হবে। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

২০২০ সালে ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হতে পারে। নির্মাণ শেষ ওই ভবনটিতে আধুনিক প্রিন্টিং ব্যবস্থা গড়ে উঠলে আরও সহজেই কৃষকের কাছে কৃষি তথ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।

জানতে চাইলে কৃষি সচিব নাসিরুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমান সময়ে কৃষি তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কৃষি তথ্য সার্ভিসের নিজস্ব কোনো ভবন নেই। তারা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভবন ব্যবহার করছে। তাদেরকে নিজস্ব ভবন দিতেই নতুন এই ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ’

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘গণপূর্ত অধিদফতর (পিডব্লিডি) অনেক যাচাই-বাছাই করেই ভবন নির্মাণের পক্ষে সায় দিয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণের ফলে খামারবাড়ির মূল অবকাঠামোতে কোনো প্রভাব পড়বে না।’

বিজ্ঞাপন

কৃষি তথ্য সার্ভিস কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি প্রতিষ্ঠান। ‘কৃষি তথ্য সার্ভিস আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পের আওতায় নতুন এই ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ‘ভবনটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আওতাধীন এলাকায় গড়ে উঠলে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোনো দ্বন্ধ বা বিরূপ প্রভাব পড়বে কি না’- জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মীর নূরুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রেসের জন্য নতুন এই ভবন নির্মাণ হলে আমাদের কাঠামোয় কোনো প্রভাব পড়বে না। আমাদের অফিসের শেষের দিকে অর্থাৎ পশ্চিম-দক্ষিণে ওদের ছোট একটি প্রেস ছিল। সেখানে একতলা একটি ভবন ছিল। যেহেতু জায়গা কম, তাই সেখানেই নতুন করে ওই ভবনটি নির্মিত হবে। ’

জানতে চাইলে ‘কৃষি তথ্য সার্ভিস আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘কৃষি প্রেস ভবন নির্মাণে আমাদের কাজ এগিয়ে চলছে। সাত তলা বিশিষ্ট এই ভবনের চার তলা পর্যন্ত প্রেসের জন্য এবং ওপরের তিন তলা ঢাকা আঞ্চলিক কৃষি অফিসের জন্য ব্যবহৃত হবে। কৃষির প্রিন্টিং ব্যবস্থাকে আধুনিক করে গড়ে তুলতেই এ ভবন নির্মিত হচ্ছে। ’

তিনি বলেন, ‘নতুন ভবনটি নির্মিত হলে সেখানে সবধরনের উন্নত যন্ত্র স্থাপন করা হবে। প্রকল্পের প্রাথমিক খসড়ায় ফোর কালার অফসেট প্রিন্টিং মেশিন স্থাপনের কথা বলা হলেও আমরা আট কালার অফসেট প্রিন্টিং মেশিনও স্থাপন করতে পারি। প্রিন্টিং প্রেসটি উন্নত হলে কৃষি সংক্রান্ত ম্যাগাজিন, পোস্টার, লিফলেট ও প্রকাশনা তৈরিতে গতি আসবে। এতে জনগণ আরও সহজে আধুনিক কৃষির সব তথ্য পাবে।’

বিজ্ঞাপন

এক প্রশ্নের উত্তরের প্রকল্প পরিচালক সাইফুল বলেন, ‘ভিত্তিপস্তর স্থাপন হবে। তবে ভবন নির্মাণে এখনও টেন্ডার হয়নি। এই কাজটি করবে পিডব্লিউডি। ভবন নির্মাণের পুরো দায়িত্ব তাদের। এটি নির্মাণ শেষ হলে প্রেসের যন্ত্রপাতি কিনতে টেন্ডার হবে। সব মিলিয়ে কাজটি শেষ হতে ২০২০ সাল লেগে যেতে পারে।’

কৃষি তথ্য সার্ভিস আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের অধীনে এই ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে কৃষি তথ্য সার্ভিস। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া এই প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২০ সালের জুনে। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থে বাস্তবায়ন হতে যাওয়া এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৮ কোটি ৭০ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এর মধ্যে প্রেস ভবন নির্মাণে ব্যয় হবে ৬ কোটি ৭ লাখ টাকা ও ঢাকা আঞ্চলিক অফিস নির্মাণে ব্যয় হবে ১ কোটি ৩৬ লাখ ২১ হাজার টাকা। প্রেস ভবন নির্মাণ পুরো প্রকল্পের একটি অংশমাত্র।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে- কার্যকর, মানসম্মত তথ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে কৃষি তথ্য সার্ভিসের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং গণমাধ্যমের সহায়তায় কৃষির আধুনিক তথ্য সহজলভ্য করে কৃষিজীবীদের সচেতনতা সৃষ্টি করে লাগসই প্রযুক্তি গ্রহণে উৎসাহিত করা। প্রকল্পের প্রধান কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ৯ টি আঞ্চলিক অফিস ভবন, ১টি প্রেস ভবন ও ১টি কৃষি রেডিও ভবন নির্মাণ করা।

ভবনটি নির্মাণের পর কৃষি কল সেন্টারের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নতুন অফিসার নিয়োগ ও সেবার সময় বাড়িয়ে সকাল ৭টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত করা হবে বলে জানা গেছে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় কৃষি তথ্যসেবা আরও আধুনিক করতে বেশকিছু লক্ষ্যও রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন