February 8, 2018 | 3:16 pm
সারাবাংলা ডেস্ক
দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশ ১৬৬ রানে পিছিয়ে। ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তুলেছে ৫৬ রান। লিটন দাস ২৪ এবং মেহেদি হাসান মিরাজ ৫ রানে অপরাজিত আছেন। এর আগে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মিরপুরে ২২২ রান তুলেই নিজেদের প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় সফরকারী শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ওপেনিংয়ে নামেন তামিম ইকবাল এবং ইমরুল কায়েস। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই বাউন্ডারি হাঁকান তামিম। তবে, পরের বলেই সুরাঙ্গা লাকমলের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাঁহাতি এই ওপেনার। দ্বিতীয় ওভারে রানআউট হয়ে ফেরেন ০ রান করা মুমিনুল। দলীয় ১২ রানের মাথায় লাকমলের বলে বোল্ড হয়ে বিদায় নেন ১ রান করা মুশফিকুর রহিম। দিনের শেষ সময়ে আউট হন ইমরুল কায়েস। ব্যক্তিগত ১৯ রান করে এলবির ফাঁদে পড়েন তিনি। দলীয় ৪৫ রানে বাংলাদেশ ৪ উইকেট হারায়।
প্রায় সাড়ে চার বছর পর দলে ফিরে আবদুর রাজ্জাক তুলে নিয়েছেন ৪ উইকেট। তাইজুল চারটি আর মোস্তাফিজ তিনটি করে উইকেট পান। রাজ্জাক প্রথম সেশনেই পেয়েছেন তিন উইকেট, পেয়েছিলেন হ্যাটট্রিকের সুযোগও। সেটা আর পাওয়া হয়নি, তবে প্রথম সেশনটা ঠিকই নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশ। ১০৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে লাঞ্চ থেকে ফেরে শ্রীলঙ্কা। প্রথম সাফল্যের জন্য রাজ্জাককে খুব একটা অপেক্ষা করতে হয়নি। ১৪ রানেই দিমিথ করুনারত্নে রাজ্জাকের বলে স্টাম্পড হন। প্রায় সাড়ে চার বছর পর টেস্টে উইকেট পান রাজ্জাক। কিন্তু কে জানত, তা কেবল মাত্র শুরু।
এরপর কুশল মেন্ডিস ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা প্রতি আক্রমণে একটু কোণঠাসা করে রেখেছিলেন মিরাজদের। মিরপুরের উইকেট প্রথম ঘণ্টা থেকেই দেখায় টার্ন আর বাউন্স। সেই টার্ন আর বাউন্সের যুগলবন্দিতেই তাইজুল পান নিজের প্রথম আর বাংলাদেশের দ্বিতীয় উইকেট। দারুণ এক বলে ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন স্লিপে। ৬১ রানে শ্রীলঙ্কা হারায় দ্বিতীয় উইকেট।
মনে হচ্ছিল, ওই দুই উইকেট নিয়েই সেশন শেষ করবে বাংলাদেশ। কিন্তু রাজ্জাক ভেবেছিলেন অন্য কিছু। ২৮তম ওভারে তার প্রথম বলেই ব্যাকফুটে পাঞ্চ করতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ তুলে দেন গুনাতিলাকা। মুশফিক দারুণ এক লাফে ক্যাচটা ধরতে ভুল করেননি, রাজ্জাক পান দ্বিতীয় উইকেট।
তবে সেশনের সেরা মুহূর্ত জমিয়ে রেখেছিলেন পরের বলের জন্য। দীনেশ চান্ডিমালের মুখোমুখি প্রথম বলেই পান টার্ন আর বাউন্সের সাথে বাড়তি পেস। তাতেই পরাস্ত হন, বল ভেঙে দেয় তার স্টাম্প। রাজ্জাক তখন হ্যাটট্রিকের সামনে। শেষ পর্যন্ত তা অবশ্য পাওয়া হয়নি। তবে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং হয়ে গেছে এর মধ্যেই। রোশেন সিলভাকে নিয়ে বাকি সময়টা পার করে দিয়েছেন কুশল মেন্ডিস। ৬৪ রানে অপরাজিত থেকে আশা দেখাতে থাকেন শ্রীলঙ্কাকে। তবে দ্বিতীয় সেশনে ফিরে আবারো উইকেট ভেঙ্গে দেন রাজ্জাক। ৬৮ রান করা কুশল মেন্ডিসকে ফিরিয়ে দেন দলীয় ১০৯ রানেই। ১ রানের ব্যবধানেই নিরোশান ডিকভেলাকে ব্যক্তিগত ১ রানে বোল্ড করে ফেরান তাইজুল।
এরপর আবারো উইকেট নেন তাইজুল। দলীয় ১৬২ রানে ব্যক্তিগত ৩১ রান করে মমিনুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন দিলরুয়ান পেরেরা। দলীয় ২০৫ রানে মোস্তাফিজের বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ২০ রানে ফিরে যান ধনাঞ্জয়া। তৃতীয় সেশনের শুরুতেই মোস্তাফিজ ফিরিয়ে দেন ২ রান করা হেরাথকে। দলীয় ২০৭ রানের মাথায় নবম উইকেট হারায় লঙ্কানরা। ব্যক্তিগত ৫৬ রান করে তাইজুলের শিকারে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন রোশেন সিলভা।
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, আবদুর রাজ্জাক, তাইজুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: দিমুথ করুনারত্নে, দানুশকা গুনাতিলাকা, কুশল মেন্ডিস, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, রোশেন সিলভা, দীনেশ চান্ডিমাল, নিরোশান ডিকভেলা, দিলরুয়ান পেরেরা, আকিলা ধনঞ্জয়া, রঙ্গনা হেরাথ, সুরাঙ্গা লাকমল।
সারাবাংলা/এএম/এসএন/এমআরপি