বিজ্ঞাপন

চবিতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে ফের সংঘাত, আহত ২

September 1, 2019 | 4:09 pm

চবি করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফের সংঘর্ষে জড়িয়েছেন ছাত্রলীগের দু’পক্ষ। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি ক্যাম্পাসজুড়ে তুমুল উত্তেজনা চলছে। পুলিশ ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেল তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সোহরাওয়ার্দ্দী ছাত্রাবাসের মোড়ে ছাত্রলীগের দু’পক্ষ মুখোমুখি হয়। এরা হলো- শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) এবং বিজয় গ্রুপ।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রথমে উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি স্লোগান দেয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ প্রথমে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় জড়ায়। তারপর পরস্পরের প্রতি ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় পুলিশকেও তাদের কয়েক দফা ধাওয়া দিতে দেখা গেছে। এই ঘটনায় দুজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন হলেন- ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৪-১৫ বর্ষের ছাত্র শোয়েবুর রহমান কনক। আরেকজনের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশকে তিনজনকে ধরে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

ঘটনাস্থলে থাকা স্থানীয় হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল উদ্দীন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি। তবে এখনও বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’

বিজ্ঞাপন

এর আগে শনিবার (৩১ আগস্ট) গভীর রাতে ক্যাম্পাসে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়। এরা হলেন- ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের মো. ইলিয়াছ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ওবায়দুর রহমান লিমন, লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নিলয় হাসান, পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের মাহফুজুর রহমান, ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের প্রিয়াম রায় প্রান্ত।

এই ঘটনার জেরে ছাত্রলীগের একপক্ষ চট্টগ্রাম নগরী থেকে ক্যাম্পাসগামী পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়। রোববার সকালে নগরীর কদমতলী এলাকা থেকে শাটল ট্রেনচালককে কে বা কারা তুলে নিয়ে যায়। সকাল ১০টার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এছাড়া শাটল ট্রেনের ৩২টি পয়েন্টে হোসপাইপ কেটে দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এর ফলে সকাল থেকে কোনো শাটল ট্রেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে যেতে পারেনি। একইভাবে যেতে পারেনি শিক্ষকদের বহনকারী বাসও।

এদিকে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘাতের নেপথ্য বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বর্তমান সভাপতি রেজাউল হক রুবেল ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজনের দ্বন্দ্বের তথ্য পাওয়া গেছে। মূলত হলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই সংঘাতের সূত্রপাত।

বিজ্ঞাপন

সিএফসি গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করেন রেজাউল হক রুবেল। আর বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা ফজলে রাব্বী সুজনের অনুসারী। উভয়ই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

রুবেল বিরোধী বিজয় গ্রুপের নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এইচ এম তারেকুল ইসলাম বলেন, ‘রেজউল হক রুবেলের সবাই একসাথে রাজনীতি করার মন মানসকিতা নাই।তার মতো একজন অছাত্রের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতি কখনো সফল হবে না। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। দ্রুত তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

রেজাউল হক রুবেল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে বগিভিত্তিক রাজনীতি থাকবে না। ক্যাম্পাসে স্থিতিশীলতা ফেরানোর লক্ষ্যে হলভিত্তিক রাজনীতিতে ফেরানো হবে।

তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসে হলভিত্তিক রাজনীতি করা হবে। কোনো বগিভিত্তিক রাজনীতি থাকবে না এবং যারা অস্থিতিশীলতা পরিবেশ সৃষ্টি করছে তাদের কঠিনভাবে প্রতিহত করা হবে।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/সিসি/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন