বিজ্ঞাপন

জামিনে মুক্ত মিন্নি

September 3, 2019 | 4:46 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

বরগুনা: স্বামী রিফাত শরীফ হত্যা মামলার আসামি আয়েশা সিদ্দিকী মিন্নি জামিনে মুক্ত হয়েছেন। পুলিশের হাতে গ্রেফতারের ৪৮ দিন পর ছাড়া পেলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার পর মিন্নিকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এসময় তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরসহ মিন্নির পক্ষের আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, মঙ্গলবার দুপুরে উচ্চাদলত থেকে মিন্নির জামিন মঞ্জুরের আদেশ বরগুনা জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালতে পৌঁছায়। এরপর মিন্নির পক্ষে মিসকেস দাখিল করেন আইনজীবী মাহবুবুল বারি আসলাম।

বিজ্ঞাপন

পরে বিকেল সাড়ে ৩টায় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী মিন্নির বাবার জিম্মায় জামিন নামায় বেলবন্ড দেন। ৪টা নাগাদ বেলবন্ড বরগুনা জেলা কারাগারে পৌঁছায়।

আরও পড়ুন- ‘০০৭’ গ্রুপের মিশন, রিফাত হত্যা পরিকল্পনা আগের রাতেই

কারাগারের প্রকিয়া শেষে বিকেল সাড়ে ৪টার কিছু পরে মিন্নিকে কারামুক্ত করে বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরে জিম্মায় দেওয়া হয়। জেলগেটে থাকা একটি অ্যাম্বুলেন্সে মিন্নিকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এসময় মিন্নির বাড়িতে ছিল স্বজনদের ভিড়।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- ‘প্রাণপণ চেষ্টা করেও স্বামীকে বাঁচাতে পারিনি, খুনিদের ফাঁসি চাই’

নিম্ন আদালতে মেলেনি জামিন

এর আগে, নিম্ন আদালতে দুইবার জামিন আবেদন করেও প্রত্যাখ্যাত হন মিন্নি। ২১ জুলাই প্রথমবার বরগুনা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে মিন্নির জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। আদালত সে আবেদন মঞ্জুর না করলে ৩০ জুলাই ফের তার জামিন আবেদন করা হয় বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামানের আদালতে। তবে এই আদালতও মিন্নির জামিন আবেদন নাকচ করে দেন

উচ্চ আদালতে মিন্নির জামিন, চেম্বারেও বহাল

নিম্ন আদালতে প্রত্যাখ্যাত হয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েও লাভ হয়নি শুরুতে। গত ৫ আগস্ট বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে জামিন আবেদন করেন মিন্নি। আদালত সে আবেদনের শুনানি নিয়ে রুল দিতে চাইলে মিন্নির আইনজীবীরা রুল নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আবেদন ফেরত চান। পরে আদালত আবেদন ফেরত দিলে মিন্নির আইনজীবীরা ১৮ আগস্ট বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

আরও পড়ুন- রিফাত হত্যা: মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

বিজ্ঞাপন

একাধিক দিন শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের এই বেঞ্চ গত ২৯ আগস্ট মিন্নিকে জামিন দেন। তবে জামিনে থাকা অবস্থায় মিন্নি তার বাবা মোজাম্মেল হকের জিম্মায় থাকবেন এবং এছাড়া মিন্নি কোনো গণমাধ্যমে কথা বলতে পারবেন না— জামিনের সঙ্গে এই দুই শর্ত জুড়ে দেন আদালত। পরে রাষ্ট্রপক্ষ এই জামিনাদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করলেও চেম্বার আদালত জামিন আদেশই বহাল রাখেন। ফলে মিন্নির জামিনে মুক্ত হওয়ার পথ সুগম হয়।

এর আগে যা হয়েছিল

গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে মিন্নির স্বামী রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় মিন্নি তার স্বামী বাঁচাতে চেষ্টা করছেন— এমন একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে প্রকাশ পাওয়া অন্য ভিডিওতে মিন্নির আচরণ কিছুটা অস্বাভাবিক মনে হয় বলে দাবি করেন রিফাতের পরিবারের সদস্যরা। মিন্নিও এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত— এমন অভিযোগ এনে তারা রিফাতকে গ্রেফতারের দাবি জানান।

আরও পড়ুন: ‘মিন্নির জবানবন্দি প্রকাশ পেশাদারিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে’

পরে পুলিশ প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১৬ জুলাই মিন্নিকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই হত্যাকাণ্ডে মিন্নির জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় ওই দিন রাতেই তাকে রিফাত হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। পরদিন আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাইলে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনেই মিন্নিকে আদালতে নিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

আরও পড়ুন- মিন্নির বাড়িতে পুলিশি পাহারা, রিফাত হত্যার ছায়াতদন্তে পিবিআই

এদিকে, রিফাত হত্যার পরদিন তার বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ ছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচ জনকে আসামি করা হয়। মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড গত ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। এখন পর্যন্ত মামলার এজাহারভুক্ত ৬ আসামিসহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে মিন্নিসহ মোট ১০ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন