বিজ্ঞাপন

নিশাতের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন কেড়ে নিল আগুন

September 7, 2019 | 9:41 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ‘চিকিৎসক হতে চেয়েছিল নিশাত। আমি নিজে পড়াশোনা করিনি। তবে ইচ্ছা ছিল নিশাতকে ডাক্তার বানাবো। কিন্তু সব আশা শেষ হয়ে গেল। নুডুলস তার স্বপ্ন পুড়িয়ে ছাই করে দিল।’- কথাগুলো বলছিলেন, নুডুলস তৈরি করতে গিয়ে গ্যাসের আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া নুশরাত জাহান নিশাতের বড় বোন শিউলি আক্তার।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে আটটার দিকে যাত্রাবাড়ী বিবির বাগিচা এলাকার নিজেদের বাসায় নুডুলস তৈরি করতে গিয়ে দগ্ধ হয় নিশাত। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (৭ সেপ্টম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মারা যায় নিশাত।

শিউলি আক্তার বলেন, ‘নিশাত অনেক ভাল ছাত্রী ছিল। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ বছর অষ্টম শ্রেণিতে উঠেছে সে। কিন্তু কি হতে কি হয়ে গেল, ডাক্তার হওয়া হলো না তার। ’

ঢামেকের বার্ন ইউনিটে গিয়ে দেখা যায় নিশাতের বাবা বাচ্চু মিয়া ও মা ফিরোজা বেগমের আহাজারি। বুক চাপড়িয়ে মা বলছেন, ‘কেন আমি বাসা থেকে নিশাতকে একা রেখে বের হলাম। ওকে তো কখনও চুলার কাছে যেতে দিতাম না। মেয়ে শখ হলো নুডুলস রান্না করে বাবাকে খাওয়াবে। কিন্তু সেই নুডুলসই আমার মেয়ের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াল। বাবাকে খওয়াতে পারল না, নিজেও খেতে পারল না। মাঝখান থেকে আমার নিশাত হারিয়ে গেল।’

বিজ্ঞাপন

নিশাতের বড় বোন শিউলি আক্তার বলেন,‘যাত্রাবাড়ীর বিবিরবাগিচায় নিজেদের বাড়িতে থাকি আমরা। ছয় তলা বাসার দ্বিতীয় তলায় থাকে আমাদের পরিবার। দুই বোনের মধ্যে নিশাত ছিল ছোট। গতকাল রাতে বাবা ও নিশাত বাসায় ছিল। মা নিশাতের কোচিং সেন্টারে গিয়েছিলেন টাকা দিতে। নিশাত বাবা কে বলে- ‘তুমি এশার নামাজ পরে এসো। আমি নুডুলস তৈরি করি।’পরে বাবা নিশাতকে বাসায় রেখে মসজিদে নামাজ পড়তে যায়। নামাজ শেষে বাবা বাসার কাছে এসে নিশাতের চিৎকার শুনতে পায়। কিন্তু বাবা দরজা খুলতে পারে না। এর কিছুক্ষণ পর নিশাত দরজা খুলে দেয়। তখন তার শরীর আগুন জ্বলছিল। এ সময় বাবা নিশাতের গায়ের আগুন নেভাতে গিয়ে নিজেও দগ্ধ হন। পরে তাকে দগ্ধ অবস্থায় তাকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়।’

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ বক্সের ইনচার্জ পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া জানান, নিশাতের শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। শনিবার বার্ন ইউনিটে তার মৃত্যু হয়েছে। নিশাতের মৃতদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএসআর/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন