বিজ্ঞাপন

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল বনাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা

September 9, 2019 | 5:20 pm

নিপা জাহান

বিশ্ববিদ্যালয় ধারণাটির সঙ্গে উচ্চতর জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণের সম্পর্ক সর্বাধিক, এ বিষয়ে কারো দ্বিমত নেই। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দুঃখজনক বাস্তবতা হলো এখানে সেই অর্থে ধারণাটির যথার্থ প্রয়োগ ও প্রসার ঘটেনি। কিছুদিন আগে ওয়ার্ল্ড র‌্যাংকিং-এ বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম না-থাকাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিতর্কে র‌্যাংকিং-এ থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর রাষ্ট্রসমূহের শিক্ষানীতির সঙ্গে আমাদের দেশের শিক্ষানীতির পার্থক্য এবং আমাদের এ বিষয়ক গলদগুলোর অনেকটাই পত্র-পত্রিকা বা টকশোর বদৌলতে সামনে এসেছে। এই ইস্যুতে এক অধ্যাপক তো লিখেই ফেললেন, রাজনৈতিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ তথা এই রাষ্ট্র সৃষ্টির পেছনে ভূমিকা পালনকারী দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠটিও বৈশ্বিক মানদণ্ডে কলেজ বৈ আর কিছু নয়! হ্যাঁ, অদ্ভুত শোনালেও এই কথাটি তার একার নয়–শিক্ষা নিয়ে কাজ করেন এবং বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এমন অধিকাংশই এই মত প্রকাশ করে থাকেন। তবে পাণ্ডিত্যের গাম্ভীর্য রক্ষা করে তারা অল্পস্বল্পই এ বিষয়ে সরব হন। র‌্যাংকিং তো ফলমাত্র; এর বীজ-বৃক্ষের মান-স্বাস্থ্যের দিকে নজর না দিলে, পরিচর্যা না করলে, সুমিষ্ট ফলের প্রত্যাশা কেবল দুরাশাই হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

আসি মূল প্রসঙ্গে। পূর্বসূত্র ধরেই শুরু করা যাক- প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর একজন শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার ভিত- প্রস্তুতকারী স্তর। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই ইনটেনসিভ এই স্তরটির প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে যায়। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের সিজিপিএ এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিন্ন ভিন্ন মানদণ্ড তথা শর্ত পূরণ করে বিবিধ পরীক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে শিক্ষার্থীটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ লাভ করে। বিদ্যমান আইন ও প্রথা অনুযায়ী স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে সেরা ফলাফল অর্জনকারী (যোগ্যতম থেকে যোগ্যতার ক্রম মেনে) শিক্ষার্থীরই বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার কথা। এক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষায় ভালো ফলের পাশাপাশি বিষয়ভিত্তিক সৃজনশীল সত্তার বহিঃপ্রকাশ তথা গবেষণায় শিক্ষার্থীর নিবিষ্টতা যোগ্যতা নির্ণয়ের মাপকাঠি হতে পারে। শ্রেণিকক্ষ ও গবেষণা দুটোই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর জ্ঞানের ব্যাপ্তির পাশাপাশি বাচনভঙ্গি, উপস্থাপন কৌশল এবং গবেষণার দক্ষতা ও প্রকাশনার মান বিবেচনায় নেয়া উচিত। কিন্তু তা না হয়ে কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে সিজিপিএ-এর সংকীর্ণ বেড়াজালে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে। সম্প্রতি ইউজিসি প্রস্তাবিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়ানো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য তৈরিকৃত অভিন্ন নীতিমালা দেখে এই লেখার প্রথম বাক্য প্রসঙ্গে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মানদীর মাঝি’ উপন্যাসের সেই উক্তিটি স্মরণে আসছে : ‘মনে মনে সকলেই যাহা জানে, মুখ ফুটিয়া তাহা বলিবার অধিকার তাহার নাই।’ কারণ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত বিভিন্ন অনুষদের জন্য শিক্ষার্থীর ভর্তি কিংবা শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া যেখানে প্রয়োজন ও পরিস্থিতি অনুযায়ী বিভিন্ন হতে বাধ্য, সেখানে কেন্দ্র ও প্রান্তের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গে অভিন্ন নীতিমালা কিভাবে বাস্তবসম্মত হতে পারে? প্রস্তাবিত এই নীতিমালা প্রযুক্ত হলে বিদ্যমান উচ্চশিক্ষা-ব্যবস্থা (মূলত সার্বিক শিক্ষা-ব্যবস্থা)-র মানের নিম্নগামিতা রোধ না করে বরং ধ্বংসই হওয়া সম্ভব।

প্রস্তাবিত এই নীতিমালার একটি দিক নিয়েই কথা বলি। এতে শিক্ষক নিয়োগে গবেষণাকে গুরুত্ব না দিয়ে বরং উচ্চশিক্ষায় প্রবেশ ব্যতিরেকে যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফল বিশেষ কোনো ভূমিকা রাখতে সক্ষম নয়, তাতে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এই নীতিমালা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক হবার জন্য বিজ্ঞান-মানবিক নির্বিশেষে এসএসসি ও এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় জিপিএ ৫ এর মধ্যে ৪.৫ করে পেতে হবে। এরপর স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে অনুষদভেদে জিপিএ ৪-এর মধ্যে উভয়টিতে ৩.৫০ বা দুটির একটিতে ৩.৫০অপরটিতে ৩.২৫ পর্যন্ত চাওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগের প্রতি ব্যাচে ২৫% শিক্ষার্থী জিপিএ ৪ এর মধ্যে ৩.৫০ বা তদূর্ধ্ব পেয়ে থাকে ; আবার কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি ব্যাচে গড়ে ১% বা ২% শিক্ষার্থী জিপিএ ৪-এর মধ্যে ৩.৫ পেয়ে থাকে। আবার দ্বিতীয়োক্ত শিক্ষার্থীর সিজিপিএ ৩.৫ অর্জনের জন্য প্রায় অসুস্থ হবার উপক্রম পরিশ্রম করতে হয়। বিভাগে ভালো ফল করার পাশাপাশি অন্য কোন ক্যারিয়ার ডেভেলপের সময়-সুযোগ করার চিন্তাই তার কাছে অবান্তর। ৫/৬ বছরের একাডেমিক জার্নিতে তার বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানের উৎকর্ষ সাধিত হলেও যদিবা তার শিক্ষাজীবনের ইনিশিয়াল পিরিয়ড অর্থাৎ মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিকের কোনোটাতে নীতিমালায় নির্ধারিত সিজিপিএ না থাকে তাহলে সে শিক্ষক হতে আর পারছে না। এমনকি পরবর্তী সময়ে গবেষণায় উৎকর্ষের স্বাক্ষর বা উচ্চতর ডিগ্রী থাকলেও নয়! পৃথিবীর আর কোথাও সম্ভবত গবেষণায় নিরুৎসাহিতকরণের এমন নজির নেই। আবার যে বিভাগে শতকরা ২৫ ভাগ শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে ৩.৫ বা ৩.২৫ পাচ্ছে, তাদের মধ্যেও প্রথম দ্বিতীয় বা তৃতীয় অর্থাৎ বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানে মোটাদাগে ভালোদের যদি মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিকের নির্ধারিত সিজিপিএ না থাকে তাহলে নিয়োগ পাবার সম্ভাবনা নেই তবে ২৫ তমের নিয়োগ পাবার সুযোগ রয়েছে। আমার প্রশ্ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত সেরা ফলাফল ও শিক্ষক প্রার্থীটির গবেষণা-দক্ষতা কি যৌক্তিক মানদণ্ড নয়? বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে জ্ঞান উৎপাদন ও বিতরণের জন্য বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান যেখানে অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত, সেখানে উক্ত প্রক্রিয়ায় এর জন্য উপযুক্ত প্রার্থীর ছিটকে পড়ার সম্ভাবনা সমূহ। তাই ইতোমধ্যে কোথাও কোথাও অনুসৃত এবং ইউজিসির প্রস্তাবিত নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত এই ধারাটি বিশ্ববিদ্যালয় ধারণার পরিপন্থী এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও প্রতিষ্ঠান নির্মাণের পথে অন্তরায়স্বরূপ।

এবার আসা যাক একই প্রসঙ্গে অন্য একটি দিকের আলোচনায়। অভিন্ন নীতিমালার খসড়ায় কলা অনুষদভুক্ত নৃত্যকলা, নাট্যকলা প্রভৃতি বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক মিলিয়ে জিপিএ ৭ (১০-এর মধ্যে) থাকতে হবে বলা আছে। তবে এটিও উল্লেখ রয়েছে, কোনোটিতে পৃথকভাবে জিপিএ ৩-এর কম থাকা চলবে না। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার মানদণ্ড অনুযায়ী যে শিক্ষার্থী একটিতে জিপিএ ৩ অন্যটিতে জিপিএ ৪ নিয়ে ভর্তি হয়েছিল আর যে শিক্ষার্থী একটিতে জিপিএ ২.৫ অন্যটিতে জিপিএ ৪.৫ নিয়ে ভর্তি হয়েছিল তাদের দুজনের মধ্যে গড় নম্বরগত তারতম্য না থাকা সত্ত্বেও দ্বিতীয় জনের ভাগ্যে বঞ্চনা নির্ধারিত হয়ে গেলো । ধারণা করি, বিশেষ ক্ষেত্রে ন্যূনতম জিপিএ ৩ নির্ধারণের মনস্তাত্ত্বিক কারণ সম্ভবত একে সনাতন নিয়মের তৃতীয় শ্রেণি/ বিভাগ বলে গণ্য করা। যা স্পষ্টতই ভুল। সনাতন পদ্ধতির বিভাগ-এর সাথে গ্রেডিং পদ্ধতির জিপিএ-এর সামঞ্জস্য বিধান জারী করে প্রকাশিত সরকারি প্রজ্ঞাপনে চোখ বুলালে এর প্রমাণ পেতে অসুবিধা হবার কথা নয়। উল্লেখ্য, উক্ত প্রসঙ্গে দুটি প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছিল । তন্মধ্যে প্রথমটির (নং শিম/শাঃ ১১/৫-১(অংশ)/৫৮২) প্রকাশ ২ জুন ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ, আর দ্বিতীয়টির (নং-শিম/শাঃ ১১/১৯-১/২০০৭/১৭৪) প্রকাশ ২ মার্চ ২০১০ খ্রিস্টাব্দ। জারিকৃত প্রথম প্রজ্ঞাপনে ২০০১ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত এসএসসি ও এইচএসসির একটি মানদণ্ড ও ২০০৪ থেকে পরবর্তী সময়ের জন্য আরেকটি মানদণ্ড উল্লেখ করে। পরবর্তী তারিখে জারীকৃত প্রজ্ঞাপনে এটি সংশোধন করে নতুন ও এখনো পর্যন্ত অনুসরণকৃত মানদণ্ডগুলো ঘোষণা করা হয়। এই মানদণ্ড অনুযায়ী সনাতন পদ্ধতির বিভাগ-এর সঙ্গে প্রচলিত জিপিএ(৫ স্কেলে)-এর সামঞ্জস্য বিধান নিম্নরূপ :

বিজ্ঞাপন

জিপিএ ৩.০০ বা তদূর্ধ্ব = প্রথম বিভাগ
জিপিএ ২.০০ থেকে ৩.০০-এর কম = দ্বিতীয় বিভাগ
জিপিএ ১.০০ থেকে ২.০০-এর কম = তৃতীয় বিভাগ।

এ পর্যায়ে পুরাতন কাসুন্দি একটু ঘেঁটে নিই। এই তথ্য সবার জানা যে, ২০০১ সালের এসএসসি পরীক্ষায় প্রথম গ্রেডিং পদ্ধতি চালু করা হয়। শুরুর বছর সারাদেশে জিপিএ ৫ পেয়েছিলো মাত্র ৭৬ জন ; ২০০২-এ ৩৩০ জন, ২০০৩-এ ১৫৯৭ জন, ২০০৪-এ ৮৫৯৭ জন । ২০০৫-এ এই সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫৬৩১ জনে । এবার সাম্প্রতিক হিসেবে চোখ বুলানো যাক। সর্বশেষ অর্থাৎ ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ লক্ষ ১০ হাজার ৬২৯ জন। প্রশ্ন জাগে, লক্ষের মালিকানা পেয়ে আমাদের নীতিনির্ধারকগণ কি শত বা সহস্রের হিসাব বেমালুম ভুলে গেলেন? সনাতন পদ্ধতিতে প্রথম শ্রেণীর ঊর্ধ্বে ছিল স্টার কিংবা স্ট্যান্ড। গ্রেডিং পদ্ধতি চালু হবার আধা যুগেরও বেশি সময় পর্যন্ত সাধারণ মানুষ সন্ততি বা আত্মীয়-পরিচিতের ফলাফল উল্লেখ করতে জিপিএ ৪ পেলে বলতেন স্টার আর জিপিএ ৫ পেলে বলতেন ‘স্ট্যান্ড করেছে’। এখন অবশ্য স্টার/স্ট্যান্ড অনেকটাই দুর্বোধ্য আর জিপিএ-৫ সদর্পে পরিচিত। এখন ও গত কয়েক বছর ধরে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো ফল করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন কিংবা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করে বা না করে উচ্চশিক্ষার্থে দেশের বাইরে পাড়ি জমিয়েছেন, ইতোমধ্যে ডিগ্রি অর্জন করেছেন, তারা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন তখন প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে জিপিএ ১০ (এসএসসি-এইচএসসি মিলিয়ে)-এর মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদের জন্য ৮, ব্যবসায় অনুষদের জন্য ৭, মানবিক অনুষদের জন্য ৬ পেলেই চলতো। তখনকার ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীটি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উভয় পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করেও , এমনকি বাইরের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে এসেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান আইনে এবং প্রস্তাবিত অভিন্ন নীতিমালা মারপ্যাঁচে শুধু মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলের অতিগুরুত্ব প্রদানের জন্য শিক্ষক হিসেবে যোগদান করতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, প্রস্তাবিত অভিন্ন নীতিমালার শর্ত-মোতাবেক ইতোমধ্যে যোগদানকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দের পদোন্নতিতে ইনিশিয়াল পিরিয়ডের রেজাল্টগত কারণেই জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

যেকোনো নীতিমালা প্রণয়নের আগে এর বাস্তবসম্মত ন্যায়সংগত ও প্রায়োগিক দিকসমূহের গভীর পর্যালোচনা জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চতর শিক্ষাক্ষেত্র। এখানকার ‘বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো’তেই সম্ভব। কারণ, গেরো যত বেশি দেয়া হয় ততই আন্ধার গেরো বাঁধার সম্ভবনা বাড়ে। এতে দড়িও কাটতে হয় আবার বন্ধনকৃত বস্তুটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গবেষণামুখী, মুক্তবুদ্ধি-চর্চাকারী, যুগোপযোগী শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার জন্য যোগ্যতম শিক্ষক/ব্যক্তিটি তার যোগ্যস্থান পাক। ডিজিটাল বাংলাদেশ তথা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়বার জন্য প্রয়োজন শিক্ষিত দক্ষ মানবসম্পদ। যোগ্যতম শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ থেকেই দক্ষ মানবসম্পদের সৃষ্টি হওয়া সম্ভবপর। তাই যে লক্ষ্যে ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী চারটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয়ে আসছিল, সেই লক্ষ্য থেকে বিচ্যুতি নয়- বরং এর উন্নতি সাধনই যেন বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অভিন্ন কিংবা ভিন্ন ভিন্ন নীতিমালার উদ্দেশ্য হয় ।

বিজ্ঞাপন

ছোটবেলায় শুনতাম ভূতের হাঁটবার গল্প । ভূত এক পা এগিয়ে দুই পা পেছনে হাঁটে , আর তাদের চোখও থাকে পেছনে । তাই ভূত (অতীত) নয়, ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা হোক । বর্তমানে দাঁড়িয়ে ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবাই জ্ঞানীর কাজ, নীতিনির্ধারকেরও।

নিপা জাহান : সহকারী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

সারাবাংলা/পিএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন