বিজ্ঞাপন

‘খালেদা জিয়ার মতো ১২টা পর্যন্ত ঘুমালে কি খুশি হতেন?’

September 11, 2019 | 8:37 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

সংসদ ভবন থেকে: ‘খালেদা জিয়ার মতো’ দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকলে খুশি হতেন কি না— সংরক্ষিত আসনে বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানার কাছে এ প্রশ্ন রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, রাষ্ট্র একটি যন্ত্রের মতো। এই যন্ত্রের বিভিন্ন কল-কব্জা যখন সমন্বিতভাবে কাজ করে, তখনই রাষ্ট্র ভালো থাকে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে কারণ রাষ্ট্রযন্ত্র ভালোভাবে কাজ করছে। তা না করে প্রশ্নকারীর নেত্রী খালেদা জিয়ার মতো দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটালেই কি প্রশ্নকারী খুশি হতেন?

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে রুমিন ফারহানার এক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন- ‘ডেঙ্গুতে ফিলিপাইনের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে দেইনি’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রধানের অন্যতম কাজ ও দায়িত্ব সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাজের সমন্বয় করা, মন্ত্রীদের কাজের তদারকি করা। জনগণ আমাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য। আরাম-আয়েসের জন্য আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব গ্রহণ করিনি। আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা, যিনি তার জীবনটাই উৎসর্গ করেছেন এ দেশের মানুষের কল্যাণে। তার কন্যা হিসেবে জনগণের প্রতি আমার দায়বদ্ধতার একটা আলাদা জায়গা রয়েছে। আমি সেটাই প্রতিপালনের চেষ্টা করি। সেজন্যই দিনরাত পরিশ্রম করি। কোনো প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করার জন্য নয়, সব প্রতিষ্ঠানকে আরও সক্রিয় রাখার জন্য আমি সবসময় সচেষ্ট।

সংসদ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নিরলস প্রচেষ্টা ও জনগণের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ বাংলাদেশ বিশ্বে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত, আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশ্বে রোল মডেল। দেশ খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে, জিডিপি’র প্রবৃদ্ধিতে বিশ্বসেরার জায়গা দখল করেছে। এসব আপনাআপনি হয়নি। সবার পরিশ্রমে হয়েছে। প্রতিষ্ঠান অকার্যকর থাকলে এসব অর্জন সম্ভব হতো না।

অকার্যকর রাষ্ট্রের উদাহরণ বিএনপিই তৈরি করেছিল বলে অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী (খালেদা জিয়া) ঘুমিয়ে থাকতেন, সিদ্ধান্ত দিতেন তার পুত্র (তারেক রহমান) হাওয়া ভবন থেকে। মন্ত্রী-সচিবেরা তখন হাওয়া ভবন থেকে নির্দেশের অপেক্ষায় প্রহর গুণতেন।

বিজ্ঞাপন

প্রতিহিংসার রাজনীতি করলে বিএনপির অস্তিত্ব থাকত না

রুমিন ফারহানার প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষ হত্যার রাজনীতি করে না। আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতিতেও বিশ্বাসী নয়। আমরা যদি তাই বিশ্বাস করতাম, তাহলে এ দেশে বিএনপি’র অস্তিত্ব থাকত না। কারণ বিএনপি’র দ্বারা আমরা যে পরিমাণ হত্যা, নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হয়েছি, তা আর কেউ হয়নি।

সংসদ নেতা বলেন, বিএনপির সংসদ সদস্য একটি অনাকাঙ্ক্ষিত, অসংসদীয় ও অবান্তর প্রশ্ন করেছেন। তিনি মানুষ হত্যা আর মশা মারাকে একই সমতলে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু তিনি কি ভুলে গেছেন— বহু ত্যাগ-তিতীক্ষার পর বঙ্গবন্ধু যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মেজর জিয়াউর রহমান জাতির পিতাসহ আমার মা, তিন ভাই এবং অন্তঃসত্ত্বা ভ্রাতৃবধূসহ আমার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের রক্তে রঞ্জিত হয়ে খুনিদের সহায়তায় ক্ষমতায় বসেছিলেন?

শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমানের প্রতিহিংসার বলি হয়েই জেলখানায় নির্মমভাবে নিহত হন জাতীয় চার নেতা। জিয়াউর রহমানই তো এ দেশে হত্যা-ক্যু’র অপরাজনীতি শুরু করেন। সশস্ত্র বাহিনীর শত শত অফিসার, সৈনিককে হত্যা করেন। ঘুষ, দুর্নীতি, লুটপাটের সংস্কৃতি চালু করেন। একটা পুরো প্রজন্মকে নষ্ট করে দেন জিয়াউর রহমান। তাই তার মুখে মানুষ মারা বিষয়টি অবলীলায় চলে আসে। এটাই তো তাদের দলীয় আদর্শ।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া তার চেয়েও এক কাঠি সরেস, সেই প্রমাণ তিনি রেখেছেন। এ দেশে জঙ্গি তৈরি, অগ্নিসন্ত্রাস, বোমা হামলা, মানি লন্ডারিং, এতিমের টাকা আত্মসাৎসহ হেন অপকর্ম নেই যে তিনি, তার পুত্রদ্বয় আর তার দলের নেতারা করেনি। খালেদা জিয়াও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার শাসনামলে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাস্টার, মমতাজ উদ্দিনসহ আমাদের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাকেসহ আওয়ামী লীগের পুরো নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। তাদের অগ্নিসন্ত্রসের হাত থেকে রক্ষা পায়নি শিশু ও নারীরাও।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন