বিজ্ঞাপন

‘প্রতি মাসে নির্যাতনের শিকার ৪৫৭ শিশু’

September 12, 2019 | 9:09 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

সংসদ ভবন থেকে: ‘শিশুর প্রতি সহিংসতার মাত্রা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। একবছরের ব্যবধানে শিশুর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে ২০ শতাংশ। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৩ হাজার ৬৫৩ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়েছে। প্রতিমাসে গড়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৪৫৭ জন শিশু।’

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সংসদ ভবনের আইপিডি সম্মেলন কক্ষে ‘বর্তমান শিশু অধিকার পরিস্থিতি ও করণীয়’ নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা জানান।

সভায় শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত সময়ে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করার পাশাপাশি শিশু নির্যাতন বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছেন সংসদ সদস্যসহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। তারা শিশু আইন-২০১৩ বাস্তবায়ন, ২০২৫ সালের মধ্যে শিশু শ্রমমুক্ত দেশ গড়ার নতুন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাল্যবিবাহ রোধে প্রণীত আইন, নীতিমালা ও জাতীয় পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

চাইল্ড রাইটস অ্যাডভোকেসি কোয়ালিশন ইন বাংলাদেশ আয়োজিত সভায় গবেষণা প্রতিবেদন উত্থাপন করেন সেভ দ্য চিলড্রেনের ম্যানেজার রাশেদা আক্তার। শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. শামসুল হক টুকু’র সভাপতিত্বে সভায় বক্তৃতা করেন ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, ককাসের সহ-সভাপতি অ্যারোমা দত্ত, সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল, ওয়াশিকা আয়শা খান ও আব্দুল মজিদসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে জলবায়ু পরিবর্তনে অনিরাপদ অভিবাসন, সুবিধাবঞ্চিত ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সুরক্ষা ও উন্নয়নে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রণয়ন এবং বাজেটে শিশুদের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়।

সভায় ডেপুটি স্পিকার বলেন, শিশু অধিকারের বিষয়টি তৃণমূলে পৌঁছাতে না পারলে কোনো সফলতা আসবে না। বছর জুড়ে উপজেলা পর্যায়ে অ্যাডভোকেসি করতে হবে। গ্রামের কর্মজীবী মায়ের সন্তানের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার চালু করতে হবে। শিশু আইন সংশোধনের জন্য অংশীজনদের সঙ্গে বসে সুপারিশগুলো সংশ্লিষ্টদের কাছে তুলে ধরতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে শামসুল হক টুকু বলেন, ‘শিশু নির্যাতন রোধে পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে। সবাই নিজেদের নিয়ে যেভাবে ভাবেন, তেমনিভাবে দেশকে নিয়ে ভাবলেই এসব নির্যাতন বন্ধ হবে। এজন্য ককাস থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।’

বিজ্ঞাপন

সভায় উপস্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৬৯৭ জন শিশু। ধর্ষণচেষ্টা করা হয়েছে ১০৪ জনকে। ১৬১ জনকে যৌন হয়রানি ও ২৮৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে। আত্মহত্যা করেছে ১৩৩ জন। অপহরণ করা হয়েছে ১৪৫ জন শিশুকে। নিখোঁজ হয়েছে ১০৪ জন। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৩৯০ জন। পানিতে ডুবে মারা গেছে ৩৯৫ জন শিশু।

শিশু অধিকার বিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ৫ বছরের পরিসংখ্যান উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ধর্ষণের শিকার ৯০ শতাংশই শিশু ও কিশোরী। আর ৭ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশুরাই বেশি নির্যাতনের শিকার। ঢাকা জেলার ৫টি নারী নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ১৫ বছরে (২০০২-১৬) ধর্ষণ সংক্রান্ত ৫ হাজার মামলার বিচারে সাজা হয়েছে মাত্র ৩ শতাংশের। এই অবস্থায় শিশু হত্যা-নির্যাতন বন্ধে শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের কাছে বিদ্যমান পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য সুপারিশমালা তুলে ধরা হয়।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমও

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন