বিজ্ঞাপন

মাদক-ধর্ষণ মামলার আসামিদের পক্ষে দাঁড়াবেন না, আইনজীবীদের মাশরাফি

September 13, 2019 | 8:11 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মাদক ও ধর্ষণকে সামাজিক ব্যাধি হিসেবে অভিহিত করে এগুলোর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের  সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, মাদক ও ধর্ষণ মামলার আসামি যারা, তাদের বিপক্ষে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। এভাবে সবাই তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ালে শাস্তির ভয়ে হলেও মাদকের ব্যবহার ও ধর্ষণের হার কমে যাবে।

তিনি সামাজিক ব্যাধি মাদক ও ধর্ষণের ভয়াবহতা তুলে ধরে সকলকে মাদক,ধর্ষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বলেন।এসময় সাংসদ মাশরাফী মোর্ত্তজা উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে কোন আইনজীবী আছেন কিনা জানতে চান। তখন কয়েকজন হাত উচু করে সাড়া দেন। এই সময় উপস্থিত আইনজীবীদের তিনি মাদক ও ধর্ষণের আসামীদের পক্ষে মামলায় না লড়াবার আহবান জানান এবং বলেন সকলে এভাবে তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ালে শাস্তির ভয়ে হলেও মাদক ও ধর্ষণের হার কমে যাবে। তখন আইনজীবীগণ সমস্বরে মাশরাফীর এই আহবানে পাশে থাকার কথা জানান।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর খামার বাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সারাদেশে ২০০০ সালে এসএসসি ও ২০০২ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের আয়োজিত ‘বিগেস্ট ইভেন্ট’ শিরোনামের অনুষ্ঠানে মাশরাফি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

২০০০ সালে এসএসসি ও ২০০২ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১১ হাজার শিক্ষার্থী মিলে এই ‘বিগেস্ট ইভেন্ট’ আয়োজন করে। মাশরাফি নিজে এসএসসি ১৯৯৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী হলেও তার সহধর্মিনী সুমনা হক সুমি ২০০০ সালের এসএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।

অনুষ্ঠানে মাশরাফি উপস্থিত হলে তাকে বাংলাদেশের ‘লিজেন্ড’ হিসেবে বরণ করে নেওয়া হয়। তবে মাশরাফি নিজে এই অভিধায় আপত্তি জানান। তিনি বলেন, ‘আপনারা শুধু আমাকেই লিজেন্ড বলে সম্বোধন করেছেন, এতে আমার আপত্তি আছে। আমি লিজেন্ড হতে পেরেছি কি না, জানি না। তবে এখানে যারা উপস্থিত আছেন তাদের মধ্যে অনেকেই লিজেন্ড, যারা হয়তো ক্যামেরার সামনে আসেন না, যাদের মানুষ কম চেনেন। তাদের অনেকেই অনেক লিজেন্ডারি কাজ করে যাচ্ছেন নিরবে-নিভৃতে।’

বিজ্ঞাপন

দেশের জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়ে মাশরাফি বলেন, আমরা সবাই একটি সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। এখানে আমরা যারা আছি, প্রত্যেকেই কোনো না কোনো কাজের সঙ্গে যুক্ত। আসুন, কে ছোট কে বড়— তা বিবেচনা না করে সবাই যার যার জায়গা থেকে দেশের জন্য কাজ করি। সবাই মিলে সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলি।

এসময় তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নিজ আসন নড়াইল-২ এলাকার মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ করে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

দেশকে এগিয়ে নিতে মাদক-ধর্ষণের মতো বিষয়কে সামাজিক ব্যাধি হিসেবে অভিহিত করেন মাশরাফি। তাই এসব অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। অনুষ্ঠানের উপস্থিতির মধ্যে আইনজীবী যারা ছিলেন, তাদের প্রতি আহ্বান জানান, মাদক-ধর্ষণের মামলার আসামিদের জন্য তারা যেন অবস্থান না নেন আদালতে। উপস্থিত আইনজীবীরাও তার এই আহ্বানে সাড়া দেবেন বলে জানান।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানান মাশরাফি। তিনি বলেন, আপনি শুধু একজন মন্ত্রী বা সংসদ সদস্যই নন, আপনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, তাদের পক্ষ থেকে আমি আজ আপনিসহ সব মুক্তিযোদ্ধার প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।

মাশরাফি নিজে ‘লিজেন্ড’ হিসেবে স্বীকৃতি নিতে আপত্তি জানালেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও তাকে ‘লিজেন্ড’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, মাশরাফি একজন জীবন্ত লিজেন্ড, যার জন্য বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল হয়েছে। আজকের বাংলাদেশ ক্রিকেটের সফলতার নায়ক আমাদের মাশরাফি, এই দেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা।

এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাশরাফি যেমন সুন্দর বলে, তেমনি সে মানুষ হিসেবেও সুন্দর।

অনুষ্ঠানের আয়োজকরা মাশরাফিকে ‘প্রিন্স অব হার্ট’ ঘোষণা দেন। মাশরাফিও তাদের সব ভালো কাজে সঙ্গে থাকার কথা জানান।

সারাবাংলা/এসবি/এনআর/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন