বিজ্ঞাপন

জনগণের আস্থা-বিশ্বাস ধরে রাখতে সচেতন থাকতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

September 14, 2019 | 7:56 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের আস্থা বেড়েছে। এই আস্থা ধরে রাখতে দলটির সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সচেতন থাকতে হবে। আর জনগণের আস্থায় যেন ফাটল না ধরে সে জন্যও নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে হবে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় গণভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিতে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরা উপস্থিত আছেন।

সূচনা বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘আমি খুব আশাবাদী। আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে। একটি কথা মনে রাখতে হবে- আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতেগড়া সংগঠন। কাজেই আমাদের দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সেই কথা মাথায় রেখেই সংগঠনকে তৃণমূল পর্যায় থেকে সুসংগঠিত করে তুলতে হবে এবং আওয়ামী লীগের সম্মেলনটা যাতে নিয়মিত হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের যে উপ-কমিটিগুলো আছে তাদেরকেও দায়িত্ব নিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। কেউ নষ্ট করতে পারবে না। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাব। জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক দশকেই বাংলাদেশ অগ্রগতির দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। আমরা দারিদ্র্যের হার ২১ ভাগে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক এক ভাগে উন্নীত হয়েছে। এ সময়ে আমরা দেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি। যার সুফল দেশের জনগণ পাচ্ছে। দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হচ্ছে। তৃণমূল পর্যন্ত মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করাই আমাদের লক্ষ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে আওয়ামী লীগই একমাত্র রাজনৈতিক দল যাদের সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক নীতিমালা রয়েছে। শুধুমাত্র সরকারে থাকতেই নয়, বিরোধীদলে থাকতেও অর্থনৈতিক নীতিমালা তৈরি করেছি। যেখানে আগামীতে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কী কী করব, দেশকে কীভাবে এগিয়ে নেব তা উল্লেখ ছিল। ক্ষমতায় এসে সেই পরিকল্পনা অনুযায়ীই দেশকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’

আওয়ামী লীগের পররাষ্ট্রনীতির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা জাতির পিতার পররাষ্ট্র নীতি- ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’, এই নীতি নিয়েই দেশ পরিচালনা করছি। পৃথিবীর সব দেশের সঙ্গে আমরা সুসম্পর্ক বজায় রেখে এগিয়ে যাচ্ছি। বিনিয়োগে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় দেশ। আমরা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছি। এত অল্প সময়ের মধ্যে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন দেখে বিশ্বের সব দেশই এখন বাংলাদেশ সম্পর্কে আগ্রহী।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবদিক দিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও বর্তমান সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস তৈরি হয়েছে। দেশের মানুষের এই আস্থা ও বিশ্বাস ধরে রাখতে হবে। আন্তরিকতা নিয়ে জনগণের কল্যাণের জন্য নেতাকর্মীদের কাজ করে যেতে হবে। তবেই আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০২০ সালে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করব। গত এক দশকে আমরা দেশের যে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি, সেই ধারা ধরে রাখতে হবে। আমরা আগামী প্রজন্মের জন্য একশ’ বছরের ‘ডেল্টাপ্লান-২১০০’ ঘোষণা করেছি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে পারে সেজন্য আমরা সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা দিয়ে যাচ্ছি।’

এ মাসেই জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগদানের জন্য তাঁর যুক্তরাষ্ট্র সফরের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যেতে হবে। বেশ কয়েকদিন দেশে থাকতে পারব না। কিন্তু বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল। দূরে থাকলেও এখন আর সেই দূর নেই। দূরে থাকলেও আমি আওয়ামী লীগ অফিসের কর্মকাণ্ড দেখতেপারি। বিদেশে বসেই ই-ফাইলিংয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সরকারি কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করি।’

সূচনা বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের রুদ্বদ্বার বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে সাংগঠনিক বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। বৈঠকে দেশব্যাপী কেন্দ্রীয় নেতাদের সাংগঠনিক সফর, দলের ত্রি-বার্ষিকী জাতীয় সম্মেলন, দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাসহ দেশের সবশেষ রাজনৈতিক-সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং বেশকিছু সিদ্ধান্ত হয়। দলের আগামী জাতীয় কাউন্সিল এবং সারাদেশে দলকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতাদের বেশকিছু নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনআর/একে/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন